গ্রীসে বাংলাদেশিদের উপর গুলি
এপ্রিল ১৮, ২০১৩
ঢাকা জার্নাল: গ্রীসের এক স্ট্রবেরি খামারে অভিবাসী কর্মীরা তাদের বকেয়া বেতনের দাবি জানাতে জড়ো হলে সেখানকার একজন সুপারভাইজার তাদের উপর গুলি চালিয়ে প্রায় ৩০ জনকে আহত করেছে। আহত কর্মীদের বেশিরভাগই বাংলাদেশি।
পুলিশ ইতিমধ্যে খামার মালিক ও সংশ্লিষ্ট সুপারভাইজারকে গ্রেপ্তার করেছে। কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন বাংলাদেশি কর্মীদের আঘাত সঙ্কটজনক নয়।
আহত বাংলাদেশি কর্মীদের বেশিরভাগকেই হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম গ্রীসে অ্যাথেন্স থেকে ২৬০ কিলোমিটার দূরে নিয়া মানোলাদা এলাকায় পেলোপন্নেসিয়ান গ্রামের এক খামারে।
ওই এলাকায় কাজ করেন হাজার হাজার অভিবাসী কর্মী।
ওই খামারে কর্মরত প্রায় দুইশ’ কর্মী তাদের বকেয়া বেতনের দাবি জানাতে জড়ো হলে খামারের একজন সুপারভাইজার তাদের উপর গুলি চালায়। এতে তিরিশজন কর্মী আহত হয়, যাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
খামারের মালিক এবং ওই ফোরম্যানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং খামারের আরও দুজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সমন জারি করা হয়েছে।
গ্রীসে বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সেলার জামাল হুসেইন জানিয়েছেন, তিনি আহত বাংলাদেশি কর্মীদের দেখতে ওই এলাকায় পৌঁছে গেছেন।
তিনি বলেছেন, প্রাথমিক শুশ্রূষার পর ১৬ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এবং ৭ জনের অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক।
গ্রীসে বর্ণবাদী হামলা বাড়ছে
জানা গেছে, অ্যাথেন্সের পশ্চিমের ওই এলাকায় অভিবাসী শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন নিপীড়নের ঘটনা আগেও ঘটেছে।
এসব খামারে অমানবিক কাজের পরিস্থিতির প্রতিবাদে ২০০৮ সালে শ্রমিকরা হরতাল করে। খামারে কর্মীদের উপর আগেও হামলার ঘটনা ঘটেছে।
সম্প্রতি, নিয়া মানোলাদায় উৎপাদিত স্ট্রবেরি বর্জনের জন্য সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোর মাধ্যমে মিডিয়া প্রচারাভিযান শুরু হয়েছে। ওইসব খামারের স্ট্রবেরিকে ‘রক্তাক্ত স্ট্রবেরি’ আখ্যা দেওয়া হচ্ছে।
ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় একটি মানবাধিকার সংগঠন কাউন্সিল অফ ইউরোপ এ সপ্তাহেই একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে যাতে গ্রীসে বিশেষ করে নব্য-নাৎসী গোল্ডেন ডন পার্টির হাতে অভিবাসীদের হয়রানি ও নির্যাতনের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।
এই রিপোর্টে গ্রীসে সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে কঠিন অর্থনৈতিক সঙ্কটের পটভূমিতে বর্ণবাদী সহিংসতা বাড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।