রাজনৈতিক সঙ্কট কাটাতে আরব কূটনীতিকদের সাথে খালেদার বৈঠক
এপ্রিল ১৮, ২০১৩ ঢাকা জার্নাল: বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আরব বিশ্বের ১০টি মুসলিম দেশ উদ্যোগ নিয়েছে।
এর অংশ হিসেবে ওইসব দেশের রাষ্ট্রদূত ও ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতেরা বুধবার রাতে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন। একই সঙ্গে তারা সরকার পক্ষের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মবিন চৌধুরী সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
তিনি জানান, ‘আজকের বৈঠকটি মূলত রাষ্ট্রদূতদের উদ্যোগেই হয়েছে।’ তারা এ উদ্যোগ কেন নিয়েছেন, এর পেছনে আমেরিকা কিংবা অন্য কোনো দেশের প্রভাব রয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এর পেছনে অন্য কারো প্রভাব আছে কি না তা জানি না। তবে তারা সবার অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। সেজন্য তারা সরকারের সঙ্গেও আলোচনা করবেন।’
যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে শমসের মবিন বলেন, ‘হ্যাঁ সব বিষয় নিয়েই আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের সার্বিক বিষয় ও ন্যায় বিচার প্রাপ্তী নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
শমসের মবিন বলেন, ‘মুসলিম বিশ্বের আরব দেশগুলোর সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরেই বাংলাদেশের একটি সুসম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সংবিধানে মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সুসম্পর্কের বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করেছিলেন। বাংলাদেশ আরব বিশ্বের বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে এদেশের শান্তি ও সমৃদ্ধি তাদেরই শান্তি সমৃদ্ধি বলে তারা মনে করেন।’
তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রদূতরা খালেদা জিয়াকে বলেছেন বাংলাদেশের শান্তি সমৃদ্ধি, সুন্দর, সুষ্ঠু সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন যাতে হতে পারে তারা তাই চান। বাংলাদেশের সব মানুষের কাছে সেই নির্বাচন যেন গ্রহণযোগ্য হয় সেটাও চান তারা।’
শমসের মবিন বলেন, ‘রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রধান বিরোধীদল বিএনপি ও সরকারের সঙ্গে যতবার প্রয়োজন তারা আলোচনা করবেন।’
দুই দলের ঐক্যমতে পৌঁছার জন্য এ উদ্যোগ কি না জানতে চাইলে শমসের মবিন বলেন, ‘রাষ্ট্রদূতরা বলেছেন বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক সমস্যা চলছে তা উত্তোরণ হোক। তাদের প্রত্যাশা যাতে বাস্তবায়িত হয় সেজন্য সরকার ও প্রধান বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রাখার বিষয়টিও তারা ব্যক্ত করেন।’
আরব দেশগুলোর শ্রম বাজার যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়ে বেগম খালেদা জিয়া তাদের অনুরোধ করেছেন।
খালেদা জিয়া তাদের কি বলেছেন, এমন এক প্রশ্নের জবাবে শমসের মবিন বলেন, ‘খালেদা জিয়া বলেছেন দেশের মানুষ চায় একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। এ দেশের সব মানুষের কাছে যেন সেটি গ্রহণযোগ্য হয়। এজন্য যে কেউ উদ্যোগ নিলে তা আমরা গ্রহণ করবো।’
শমসের মবিন বলেন, ‘খালেদা জিয়া তাদের পরিস্কার বলেছেন সঙ্কট উত্তোরণে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে এখন পর্যন্ত কেউ যোগাযোগ করেনি। ’
বৈঠকে কূটনৈতিক কোরের ডিন ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত শায়ের মোহাম্মদ, সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ড. আবদুল্লাহ নাসের আল বুশাইরিসহ, ইরাক, মিশর, কুয়েত, কাতার, ওমান, মরক্কো, লিবিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূতরা উপস্থিত ছিলেন।
রাতে পৌনে ৯টা থেকে ১০টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত তারা গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বৈঠক করেন।
এ সময় খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাবেক পররাষ্ট্র উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মবিন চৌধুরী, সাবেক রাষ্ট্রদূত সাবিহ উদ্দিন আহমেদ ও সৌদি আরবে খালেদা জিয়ার বিশেষ দূত এনামুল চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।