মা-মেয়েকে দড়ি বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় গ্রেফতার ৩

আগস্ট ২৪, ২০২০

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাংয়ে বহুল আলোচিত মা-মেয়েকে কোমরে দড়ি বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (২৪ আগস্ট) ভোর রাত ৩টার দিকে তাদের হারবাং এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

ওসি জানান, এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে উত্তর হারবাং বিন্দারবানখীল এলাকার মাহবুবুল হকের ছেলে নজরুল ইসলাম (১৯), ইমরান হোসেনের ছেলে জসিম উদ্দিন (৩০) ও জিয়াবুল হকের ছেলে নাছির উদ্দিনকে (২৮) গ্রেফতার করা হয়েছে। এই তিনজনকে হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে।

এদিকে সোমবার দুপুরে চকরিয়া সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট নির্যাতনের শিকার মা-মেয়েসহ তিনজনকে চুরির মামলায় জামিন দিয়েছেন। তারা বর্তমানে কক্সবাজারে কারাগারে রয়েছেন।

চকরিয়া সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইলিয়াছ আরিফ জানিয়েছেন, তিনি চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নির্যাতিত মা-মেয়েসহ কারা-অন্তরীণ পাঁচ জনের জামিন আবেদন করেছিলেন। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চকরিয়া সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব কুমার দেব কারান্তরীণ মা-মেয়ে সহ তিন জনের জামিন মঞ্জুর করেছেন। অপর দুই পুরুষ আসামির জামিন না মঞ্জুর করেছেন।

অপরদিকে কোমরে রশি বেঁধে মা মেয়ে নির্যাতনের ঘটনায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কর্তৃক গঠিত তদন্ত দলের প্রধান কক্সবাজার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক শ্রাবস্তী রায় সোমবার বিকাল ৩টায় হারবাং ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে তদন্ত শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন ওই তদন্ত দলকে সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সময় নির্ধারণ করে দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত শক্রবার বিকালে গরু চুরির অভিযোগ এনে ওই মা-মেয়েকে হারবাংয়ে কিছু ব্যক্তি কোমরে রশি বেঁধে নির্যাতন করে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। ওই সময় পাঁচ জনকে নির্যাতন করে পুলিশে সোপর্দ করেছিল তারা। পরে গরুর মালিক দাবিদার উত্তর হারবাং বিন্দারবানখীল এলাকার মাহবুবুল হকের দায়ের করা মামলায় পুলিশ তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে চালান দিয়েছিল। এরপর চকরিয়া জুড়িশিয়াল আদালত থেকে তাদের কক্সবাজার কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। সোমবার তাদের জামিন আবেদন করা হলে বিজ্ঞ সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মা-মেয়েসহ তিন জনের জামিন মঞ্জুর এবং অপর দুইজনের জামিন নামঞ্জুর করেন। নির্যাতনের অভিযোগ ওঠায় হারবাং ইউপি চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম দাবি করেছেন, তিনি ঘটনার সময় চট্টগ্রামে ছিলেন। তিনি মা-মেয়েকে দড়ি বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা মোবাইল ফোনে জানতে পেরে গ্রামপুলিশ পাঠিয়ে গরুচোর হিসেবে অভিযুক্তদের জনতার কবল থেকে উদ্ধার করে পুলিশে দেওয়ায় সহযোগিতা করেন বলে জানান।
ঢাকা জার্নাল, ২৪ আগস্ট ২০২০।