‘শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে বিবিসি’
এপ্রিল ১৫, ২০১৩ ঢাকা জার্নাল: উত্তর কোরিয়ায় এক শিক্ষা সফরের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর বিপদের ঝুঁকি তৈরির জন্য বিবিসিকে দায়ী করছে ব্রিটেনের একটি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়।
উত্তর কোরিয়ার ওপর গোপনে একটি প্রামাণ্য চিত্র তৈরির জন্য বিবিসির একজন সাংবাদিক শিক্ষকের ছদ্মবেশে ঐ শিক্ষা সফরে অংশ নেয়।
কিন্তু লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সের কর্তৃপক্ষ বলছেন, বিবিসি এ কাজ করে ছাত্রদের ঝুঁকির মুখে ফেলেছিল।
তারা বলছে, একইসাথে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনামও প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে।
বিবিসি অবশ্য বলছে, ছাত্ররা জানতো তাদের সাথে একজন সাংবাদিক রয়েছেন।
এল.এস.ই-র উদ্বেগ
ব্রিটেনের অত্যন্ত সুপরিচিত একটি বিশ্ববিদ্যালয় লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্সের একদল শিক্ষার্থী যখন উত্তর কোরিয়ায় শিক্ষা সফরে গেছেন তখন তাদের সাথে ইতিহাসের অধ্যাপক পরিচয়ে বিবিসির একজন সাংবাদিক জন স্যুইনিও সেখানে যান।
তার উদ্দেশ্য হচ্ছে গোপনে কিছু ভিডিও ধারণ করে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরি করা।
বিশ্ববিদ্যালয়টি বলছে, বিবিসির এই উদ্দেশ্যের বিষয়ে তাদের শিক্ষার্থীদের কিছু জানানো হয়নি।
এর ফলে ছাত্রছাত্রীরা বড়ো রকমের বিপদের মুখে পড়তে পারে বলে এল.এস.ই কর্তৃপক্ষ আশঙ্কা করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়টি বলছে, উত্তর কোরিয়ায় তাদেরকে আটক করে রাখার ঝুঁকিও এখানে আছে।
আর এ কারণে তারা বিবিসির প্যানারোমা নামের এই অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার না করার দাবি জানিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়টি বলছে, এই অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হলে এই প্রতিষ্ঠানটির যে সুনাম সেটা নষ্ট হতে পারে।
কর্তৃপক্ষ এসব বক্তব্য ই-মেইলের মাধ্যমে তাদের শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাদেরকেও জানিয়েছে।
তারা বলছে, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার যে উদ্দেশ্য, সেটাকে তারা সমর্থন করেন কিন্তু সেজন্যে তাদের প্রতিষ্ঠানের নাম ও শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করা কিছুতেই গ্রহণযোগ্য নয়।
বিবিসির প্যানারোমা
বিবিসির একটি জনপ্রিয় অনুষ্ঠান- অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার অনুষ্ঠান প্যানারোমা।
প্যানারোমার ওই সাংবাদিক গোপনে, ছদ্মবেশে উত্তর কোরিয়ায় ঘুরে বেড়িয়েছেন আট দিন এবং একটি অনুসন্ধানী ডকুমেন্টারি ফিল্ম তৈরি করেছেন।
এসময় সাথে ছিলেন তার স্ত্রী এবং একজন ক্যামেরাম্যান।
সাংবাদিক স্যুইনি উত্তর কোরিয়ায় চরম সেন্সরশিপের কিছু চিত্র তুলে ধরে দেশটিকে উল্লেখ করেছেন একটি নাৎসি রাষ্ট্র হিসেবে।
তিনি বলছেন, দেশটা অনেকটাই হিটলারের আমলের জার্মানির মতো। খুবই ভীতিকর আর অন্ধকার এক পরিস্থিতি বিরাজ করছে উত্তর কোরিয়ায়।
বিবিসির বক্তব্য
প্যানারোমার সাংবাদিক জন স্যুইনি বলছেন, ছাত্রছাত্রীদেরকে আগেভাগেই জানানো হয়েছে যে তাদের সাথে একজন সাংবাদিকও যোগ দিয়েছেন।
এর ঝুঁকি সম্পর্কেও তাদেরকে অবহিত করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে কিছু বলা হয়নি। কারণ এটা এল.এস.ইর কোনো শিক্ষা সফর নয়।
বিবিসির সাংবাদিক বলছেন, শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগই এই অনুষ্ঠানের বিষয়ে কোনো আপত্তি জানায় নি, বরং তারা সেটা পছন্দই করেছে।
বিবিসি বলছে, এল.এস.ইর বক্তব্যের সাথে তারা একমত নন এবং অনুষ্ঠানটির সম্প্রচার আটকে দেওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না।
এই অনুষ্ঠানটি সোমবার রাতে টেলিভিশনে দেখানোর কথা রয়েছে।
সূত্র: ব্রিটিশ ব্রডকাষ্ট কর্পোরেশন