জাবিতে একাধিক বিভাগের নেই নিজস্ব শ্রেণী কক্ষ

এপ্রিল ১২, ২০১৩

JU-logo2

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক বিভাগের নিজস্ব ক্লাসরুম নেই। এসব বিভাগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখন পর্যন্ত নির্দিষ্ট কোনো ক্লাসরুমের ব্যবস্থা করতে পারেনি।

যেসব বিভাগের নিজস্ব ক্লাসরুম নেই সেগুলোর মধ্যে রয়েছে জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ, পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স, আইন ও বিচার বিভাগ এবং চারুকলা বিভাগ প্রধান। এই বিভাগগুলোর সবকটিই বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন চালু করা হয়েছে।
এর মধ্যে চারুকলা বিভাগ ২০১২-২০১৩ শিক্ষাবর্ষে এবং বাকি তিনটি বিভাগ ২০১১-২০১২ শিক্ষাবর্ষে চালু করা হয়। জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের ক্লাস হয় নতুন কলা ভবনে, পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্সের ক্লাস হয় জীববিজ্ঞান অনুষদে, আইন ও বিচার বিভাগের ক্লাস হয় সমাজবিজ্ঞান অনুষদে এবং চারুকলা অনুষদের ক্লাস হয় পুরাতন কলা ভবনে।

এসব বিভাগের শিক্ষকদের জন্যও নেই নির্দিষ্ট কোনো অফিস কক্ষ নেই। বিভাগগুলোর নেই কোনো সেমিনার কক্ষ, কম্পিউটার ল্যাব।

বিভাগগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বঞ্চিত হচ্ছে জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ। এই বিভাগের শিক্ষার্থীরা চালু হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত কোনো একটি নির্দিষ্ট কক্ষ পায়নি। কখনও ইংরেজি, দর্শন কিংবা বাংলা অথবা ইতিহাসের কোনো ফাঁকা ক্লাসরুম আবার কখনও টিএসসির ভাষা শিক্ষাকেন্দ্রে এ বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস করেন।

জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজের শিক্ষার্থী ইমরান ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘অনেক আশা নিয়ে এ বিভাগে ভর্তি হয়েছিলাম। কিন্তু এখন পর্যন্ত ন্যূনতম একটি ক্লাসরুমেরও ব্যবস্থা হয়নি।’

পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের শিক্ষার্থীরা অণুজীববিজ্ঞান অথবা ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞানের ক্লাসরুমে ক্লাস করেন। এদের নেই কোনো ল্যাব, অথবা পৃথক একটি সাধারণ কক্ষ যেখানে শিক্ষার্থীরা পারস্পরিক সৌহার্দ্য বিনিময় করতে পারেন। বিভিন্ন সময় অন্যবিভাগের কর্মচারীরা এ বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ক্লাস থেকে বের করে দেওয়ার মত আচরণ করেছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন

এ বিভাগের শিক্ষার্থী মামুন বলেন, ‘অন্য বিভাগে যখন ক্লাস করতে যাই তখন সেই বিভাগের শিক্ষার্থীরা আমাদের বের করে দেন। সেদিন আর আমাদের ক্লাস হয় না।’

আইন ও বিচার বিভাগের ক্লাস হয় কখনও অর্থনীতি বিভাগে আবার কখনও লোকপ্রশাসন  বিভাগের ক্লাসরুমে। এই ব্যাপারে একাধিকবার অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাদের ক্লাসরুম ব্যবহারের ব্যাপারে আপত্তি জানালেও  প্রশাসনের টনক নড়েনি।

২০১৩ এর প্রথমে চারুকলা বিভাগটি খোলা হয়েছে। এই বিভাগের এখন পর্যন্ত নেই কোনো ক্লাসরুম।

শিক্ষার্থীরা ক্লাস করেন পুরাতন কলা ভবনে প্রধান গেটের সামনে ফ্লোরে। বিষয়টি দৃষ্টিকটু দেখায় বলেই হয়তো প্রশাসন এই বিভাগের ক্লাসগুলো দুপুরের পর থেকে শুরু করে।

এ বিভাগের শিক্ষার্থী মিতুল মাহমুদ জানান, প্রশাসন তাদের একটি অলীক আশা দিয়ে বসিয়ে রেখেছে। স্যারেরা বলেছেন আর কয়টা দিন কষ্ট করে ক্লাস করতে। এরপর আমাদের প্রত্নতত্ত বিভাগের দু’টি ক্লাসরুম দিয়ে দেওয়া হবে।’

এ ব্যাপারে জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমি বারবার প্রশাসনকে আমার বিভাগের সমস্যার কথা জানিয়েছ্। এ ব্যাপারে কেন তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না তা আমি বলতে পারছি না।’

অধ্যাপক লুৎফর রহমান আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমার ছাত্র-ছাত্রীরা নিজস্ব ক্লাসরুম পায়নি এটা আমার জন্যও খুব কষ্টের একটা ব্যাপার। আশা করছি প্রশাসন এই দিকে সুনজর দিবে।’

বিশ্ববিদ্যালয় নিবন্ধক আবুবকর সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি ক্লাসরুমের ব্যবস্থা করত্। অতিদ্রুত এই সংকট নিরসনে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। নতুন বিভাগ হলে একটু সমস্যা থাকবেই। আমরা এই বছরের মধ্যেই ক্লাসরুম সংকটসহ সকল একাডেমিক সমস্যা সমাধান করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।’

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.