পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়: প্রকল্প বাস্তবায়ন হুমকির মুখে!

এপ্রিল ১২, ২০১৩

flagঢাকা জার্নাল: বাজেটে বরাদ্দ দেওয়া তিনশ কোটিরও বেশি টাকা খরচ করতে পারেনি পানি সম্পদ  মন্ত্রণালয়। প্রকল্প বাস্তবায়নে এ ব্যর্থতায় সব কাজ হুমকির মুখে পড়েছে। 

আর এ জন্য মন্ত্রণালয়ের অযোগ্যতা, অদক্ষতা ও দুর্নীতিকে চিহ্নিত করে দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করেছে সরকারি হিসাব সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। 

কমিটি দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে আগামী ত্রিশ কর্মদিবসের মধ্যে মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এর (সিএজি) মাধ্যমে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছে।  

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে সরকারি হিসাব সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সভায় পনি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এ অযোগ্যতা, অদক্ষতা ও দুর্নীতি চিহ্নিত করে এসব সুপারিশ করা হয়। 

বৈঠকে বলা হয়, বাজেটে বরাদ্দ দেওয়া এক হাজার ৪৫১ দশমিক ৪৯ কোটি টাকার মধ্যে ২০৯ দশমিক ৩৩ কোটি টাকা ব্যয় করতে পারেনি মন্ত্রণালয়। উন্নয়ন বাজেট থেকে ছাড় করা ৮৫৬ দশমিক ৩১ কোটি টাকার মধ্যে ১১৪ দশমিক ৯২ কোটি টাকা খরচ করতে পারেনি। 

অবাস্তব রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে অপর্যাপ্ত রাজস্ব সংগ্রহ করা হয়েছে। আর ছাড় করা অব্যয়িত অর্থ রাজস্ব আয় হিসেবে দেখানো, কর্মসূচি নির্দেশনা ও লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণে অসংগতি থাকায় তুলনামূলক অগ্রগতি খুবই কম হয়েছে। 

কমিটির বৈঠকে পানিসম্পদ  মন্ত্রণালয়ের মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামো পদ্ধতির ওপর আলোচনায় এ চিত্র উঠে আসে। ২০০৭-২০০৮ সময়ে বাস্তবতার নিরিখে নতুনভাবে প্রচলিত ও সম্পাদিত পারফরমেন্স অডিট  বিষয়ে কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের বার্ষিক অডিট আপত্তি তুলেছে। অনুচ্ছেদ-  ১.১, ১.২, ১.৩, ২.১, ২.২, ৩.১, ৩.২, ৩.৩, ৩.৪ ও ৩.৫  নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় কমিটির বৈঠকে।  

বৈঠকে দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সুপারিশে বলা হয়, দরপত্র মূল্যায়ন রিপোর্ট অনুমোদন বা গ্রহণ ছাড়াই ৪ কোটি ৪০ লাখ ৪৪ হাজার ২শত ৯৫ টাকায় চুক্তিপত্র সম্পাদন করে চূড়ান্ত বিল পরিশোধ করা হয়েছে। 

মেরামত ও সংরক্ষণ কাজে অতিরিক্ত ব্যয় করা হয়েছে ৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। দু’বছর সময় ব্যবধানে ভূমি অধিগ্রহণ মূল্য শতকরা ৪৯৩ দশমিক ২০ ভাগ বৃদ্ধি দেখানো হয়েছে। আর প্রশাসনিক অনুমোদন ছাড়াই ডিপিএম এর মাধ্যমে সম্পাদিত কাজের বিপরীতে  ঠিকাদারকে ১০ কোটি ৯৭ লাখ ৭৪ হাজার ৫শত ৯৬ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। 

পাশাপাশি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন এবং পিপিআর এর সংগ্রহ পদ্ধতি এড়ানোর উদ্দেশ্যে একই কাজকে খ- খ- অংশে বিভক্ত করে ৮৩ দশমিক ২৪ কোটি টাকার চুক্তির মাধ্যমে কাজ শেষ হয়েছে। 

অডিট আপত্তির এসব বিষয়ে কমিটি মন্ত্রণালয়কে তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে অনাদায়ী টাকা দ্রুত আদায়ের ব্যবস্থা নিতে বলেছে। দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে  ত্রিশ কর্মদিবসের  মধ্যে সিএজির মাধ্যমে অগ্রগতি অবহিত করতে সুপারিশ করে কমিটি।  

জাতীয় সংসদের সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ১১৫তম বৈঠক কমিটির সভাপতি এম এম মান্নান সভাপতিত্ব করেন। 

কমিটির সদস্য অধ্যাপক মো. আলী আশরাফ, মো. আব্দুস শহীদ,  ড. টি আই এম ফজলে রাব্বি চৌধুরী, ধীরেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ, খান টিপু সুলতান, নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এবং মোছা. ফরিদা আখতার বৈঠকে অংশ নেন। 

এছাড়া পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব শেখ আলতাফ আলী, ডিসিজিএ মনীন্দ্র চন্দ্র দত্তসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তা এবং জাতীয় সংসদের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। 

ঢাকা জার্নাল, এপ্রিল ১২,  ২০১৩

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.