যোগ্য সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিও পাবে: দীপু মনি

অক্টোবর ২১, ২০১৯

ঢাকা জার্নাল: শেষ পর্যন্ত সমাধান ছাড়াই শেষ হয়েছে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের নেতাদের বৈঠক। শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, যোগ্য বিবেচিত হওয়া বিভিন্ন ধারার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিও (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) দেওয়া হবে। অন্যদিকে, শিক্ষক নেতারা যোগ্যতার বিষয়টি আমলে না নিয়ে অ্যকাডেমিক স্বীকৃতি পাওয়া সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিও দাবি করেছেন। এই পরিস্থিতির মধ্যদিয়েই রবিবার (২০ অক্টোবর) রাতের বৈঠক শেষ হয়। ফলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে চলমান আন্দোলন আরও বেগবান হচ্ছে।

রাত সাড়ে সাতটা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত আন্দোলনরত নন-এমপিও শিক্ষক ফেডারেশনের নেতাদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী। বৈঠকে শিক্ষক-কর্মচারীদের পক্ষে ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ ড. বিনয় ভূষণ রায়সহ শিক্ষক প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার বলেন, শিক্ষামন্ত্রী তার সিদ্ধান্তে অনড়, আমরাও আমাদের সিদ্ধান্তে অনড়। কাল (সোমবার) থেকে আমরণ অনশনে যাচ্ছি আমরা। দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। ’

শিক্ষামন্ত্রী সঙ্গে বৈঠকের আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে ডলার বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে মন্ত্রী মুদি দোকানের সঙ্গে তুলনা করেছেন। আর অ্যকাডেমিক স্বীকৃতিকে তুলনা করেছেন ট্রেড লাইসেন্সের সঙ্গে। এটি দুঃখজনক। ‘

বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট মানদণ্ডের ভিত্তিতেই বিভিন্ন ধারার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিও দেওয়া হবে। যোগ্য একটি প্রতিষ্ঠানও এমপিও-এর বাইরে থাকবে না। বিদ্যমান এমপিও নীতিমালা নিয়ে তাদের কিছু কিছু জায়গায় আপত্তি আছে, নীতিমালা আরও উন্নত করার আমাদের সুযোগ আছে। নীতিমালা সংশোধন করা হবে। পরিবর্তিত নীতিমালা অনুযায়ী এখন থেকে প্রতিবছর এমপিও দেওয়া হবে। এমপিও পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মান নিয়মিত মনিটর করা হবে এবং যারা নীতিমালা অনুযায়ী ফলাফল করবে না তাদের এমপিও বাতিল করা হবে।’

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অ্যকাডেমিক স্বীকৃতি দেওয়ার হয়েছে তাহলে এমপিও পাবে না কেনো জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘যারা বলছেন যোগ্যতার বিষয়টি আমলে না নিয়ে যারা স্বীকৃতি পেয়েছে তাদের এমপিও দিতে। স্বীকৃতি তো ভিন্ন জিনিস, অলমোস্ট একটা ট্রেড লাইন্সের মতো। যেমন একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান একটা ট্রেড লাইেসেন্স নিয়ে ব্যবসা করেন।’

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান নীতিমালা অনুযায়ী এ বছরের এমপিও চুড়ান্ত করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নতুন কোনও প্রতিষ্ঠানের অন্তর্ভুক্তির সুযোগ নেই। এর ব্যত্যয় করা হলে আদালতে মামলা হবে। ফলে যোগ্য বিবেচিত হওয়া সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিও বন্ধ হয়ে যাবে।’

গত বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ফেডারশনের গণ অনশন কর্মসূচি চলাকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা পাওয়ার জন্য পদযাত্রা শুরু করেন শিক্ষককরা। এ সময় পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পুলিশের বাধার মুখে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আবার অবস্থান নিয়ে ২১ অক্টোবর থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচির ঘোষণা দেন শিক্ষক নেতারা।

এই ঘটনার পর ওইদিন সন্ধ্যায় ভারতে অবস্থানরত শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষকনেতাদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলে আমরণ কর্মসূচি স্থগিত করান। আজ রবিবার সন্ধ্যায় শিক্ষকনেতাদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী। এরপরিপ্রেক্ষিতে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শিক্ষামন্ত্রী।

উল্ল্যেখ্য, ২০১৮ সালের এমপিও নীতিমালা স্থগিত করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাডেমিক স্বীকৃতি একমাত্র মানদণ্ড ধরে সব নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আন্দোলন করছে বেসরকারি শিক্ষকরা।