ভারতের মাটিতে এই ড্র জয়ের সমান

অক্টোবর ১৫, ২০১৯


ঢাকা জার্নাল: সাদের গোল উদযাপন৮৯ মিনিটে গোল খেলো বাংলাদেশ। তাতে ভারতের বিপক্ষে এগিয়ে থেকেও জয় হাতছাড়া হলো তাদের। কলকাতার সল্ট লেক স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের তৃতীয় ম্যাচে ভারতের মাটিতে বাংলাদেশ ড্র করেছে ১-১ গোলে।

কাতারের বিপক্ষে লড়াই করেও হেরেছিল বাংলাদেশ। ওই ম্যাচের আত্মবিশ্বাস কাজে লাগিয়ে ভারতের বিপক্ষে অন্তত এক পয়েন্টের লক্ষ্য নিয়ে কলকাতায় পা রাখে জেমি ডের শিষ্যরা। সেই উদ্দেশ্য পূরণ হয়েছে। কিন্তু জয়ের আনন্দ নিয়ে দেশে ফিরতে পারতো তারা। হয়নি, একেবারে শেষ মুহূর্তের গোলে জয় ফসকে গেলো তাদের। আফসোস হলেও হতে পারে! যদিও এই ড্র কম প্রাপ্তি নয়, বিশ্বকাপ বাছাইয়ে প্রথম পয়েন্ট পেয়েছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।

প্রথম মিনিটে হতাশ হতে হয় বাংলাদেশকে। বক্সের মধ্যে রাহুল ভেকে বল কাড়তে গিয়ে ফেলে দেন উইঙ্গার মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে। পেনাল্টির জোরালো আবেদন করেছিল অতিথি দল, কিন্তু রেফারি সাড়া দেননি। স্পষ্ট সুযোগ প্রথমে পায় ভারত। পঞ্চম মিনিটে তাদের দূর পাল্লার শট বিপদমুক্ত করে বাংলাদেশ। কিন্তু বল পান আশিক কুরুনিয়ান, বল দেন সুনীল ছেত্রীকে। বেঙ্গালুরু স্ট্রাইকারের ভলি সরাসরি গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানার হাতে যায়।

১৩ মিনিটে ছেত্রীর দুর্বল হেড সহজে প্রতিহত করেন বাংলাদেশি গোলকিপার। চার মিনিট পর ভেকের শক্তিশালী হেড গোলপোস্টের ওপর দিয়ে চলে যায়। বাংলাদেশ দুর্দান্ত সুযোগ তৈরী করে ম্যাচের আধঘণ্টা পর। ৩১ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে লম্বা পাস ধরে বক্সের মধ্যে গোলপোস্টের সামনে বল পান বিপলু আহমেদ। কিন্তু তিনি শট নেওয়ার আগে আনাস এদাথোদিকা বল বিপদমুক্ত করেন।

রানা ৩৫ মিনিটে দারুণ সেভে ভারতকে হতাশ করেন। ভেকের লম্বা থ্রো থেকে মানবীর হেড করেন, আঙুলের আলতো ছোঁয়ায় বল মাঠের বাইরে পাঠান বাংলাদেশি গোলকিপার। ৩৯ মিনিটে আনাসের কাছ থেকে ছেত্রীর হেড গোলরক্ষকের কাছে চলে যায়।

তবে ৪২ মিনিটে কলকাতার দর্শক উপচে পড়া গ্যালারি স্তব্ধ হয়ে যায়। বাঁ প্রান্ত থেকে জামাল ভূঁইয়ার ফ্রি কিকে গোলকিপার গুরপ্রীত সিং পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসে ফ্লাইট মিস করেন, এরপর সাদ উদ্দিনের দুর্দান্ত হেডে বল জড়ায় জালে। এই লক্ষ্যভেদী শটে ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।

বিরতির ষষ্ঠ মিনিট পর ২-০ করতে পারতো বাংলাদেশ। বাঁ দিকে দারুণ ড্রিবলে সোহেল রানা বল দেন নাবীব নেওয়াজ জীবনকে, কিন্তু তার লক্ষ্যে নেওয়া শট গুরপ্রীতের পায়ে লেগে মাঠের বাইরে যায়। ৫৫ মিনিটে বাংলাদেশকে হতাশ হতে হয় ইব্রাহিমের শট ক্রসবারে আঘাত করলে।

৬০ মিনিটে বাংলাদেশকে স্বস্তি এনে দেন ইব্রাহিম। কর্নার থেকে অনিরুদ্ধ থাপার ক্রস বক্সের মধ্যে ঢোকে, আনাসের শক্তিশালী হেড গোলপোস্টের সামনে থেকে ব্লক করেন বাংলাদেশি উইঙ্গার। ৭২ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে সাহালের জোরালো শট ঠেকিয়ে দেন রানা, যদিও ওই মুহূর্তে অফসাইডে ছিলেন উদান্ত। পরের মিনিটে জীবন ভারতের রক্ষণভাগকে পেছনে ফেলে বল পান, গোলকিপার গুরপ্রীত তার চিপ আটকাতে পারেননি। গোললাইনের সামনে থেকে বল বিপদমুক্ত করেন আদিল খান। অফসাইডের বাঁশি বাজার পরও শট নেওয়ায় জীবন হলুদ কার্ড দেখেন। ৭৭ মিনিটে তার বদলি হিসেবে মাঠে নামেন মাহবুবুর রহমান সুফিল।

৭৬ মিনিটে ব্রান্ডনের কর্নার থেকে ছেত্রীর হেড গোলপোস্টের বাইরে দিয়ে গেলে হতাশ হয় স্বাগতিক দর্শকরা। ভারতের রক্ষণের দুর্বলতার সুযোগে ৮৪ মিনিটে বাংলাদেশ ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারতো। ডানপ্রান্ত থেকে সাদের ক্রস ভেকে বিপদমুক্ত করতে পারেননি। দুর্ভাগ্যবশত সুফিল বল পেলেও ঠিক সময়ে শট নিতে না পারলে স্বস্তি পায় স্বাগতিকরা।

কিছুক্ষণ পর ছেত্রীর শট এক খেলোয়াড় মাঠের বাইরে পাঠিয়ে বাংলাদেশকে বাঁচান। কিন্তু ওই কর্নারে তিন পয়েন্ট ফসকে যায় বাংলাদেশের হাত থেকে। ৮৯ মিনিটে ব্রান্ডনের কর্নার থেকে দুর্দান্ত হেডে সমতা ফেরান আদিল। তাতে ঐতিহাসিক জয় পাওয়া হয়নি বাংলাদেশের। তবে দেশবাসীর হৃদয় ঠিক জয় করে নিয়েছেন জামালরা।

বাছাইয়ে ৩ ম্যাচে প্রথম পয়েন্ট পেলেও পাঁচ দলের ‘ই’ গ্রুপে সবার শেষে বাংলাদেশ। সমান খেলে ২ পয়েন্ট নিয়ে ভারত চতুর্থ স্থানে। আগামী ১৪ নভেম্বরে ওমানের মাঠে পরের ম্যাচ খেলবে জেমির দল। ৩ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে কাতার, এক ম্যাচ কম খেলে ১ পয়েন্ট কম নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ওমান (৬)। ৩ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় আফগানিস্তান।

ঢাকা জার্নাল, অক্টোবর ১৫, ২০১৯