ইউজিসিতে ড. আখতারের সদস্য পদের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন

অক্টোবর ৬, ২০১৯

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন নিয়োগের শর্ত ভঙ্গ করে গত বছর ২৮ জুন নিজ কর্মস্থলে যোগদান করেছেন। অবসর প্রস্তুতির জন্য মূল কর্মস্থল ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টর অব ভেটেনারি মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে তিনি যোগদান করেন ইউজিসি ও মন্ত্রণালয়কে না জানিয়েই।

This image has an empty alt attribute; its file name is new-s.png

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূল কর্মস্থলে যোগদানের ফলে তার নিয়োগের আর বৈধতা নেই। বিগত ১৫ মাস ধরে সদস্য হিসেবে তিনি সরকারের সব সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন অবৈধভাবে।

সদস্য থাককালে মূল পদে যোগদানের বিষয়ে জানতে চাইলে আচার্যের সচিব ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘উপচার্যদের ক্ষেত্রেও এমনটা হয়, চার বছরের জন্য নিয়োগে রয়েছেন, কিন্তু তার অবসরে যাওয়ার সময় হয়ে গেছে। এসব ক্ষেত্রে মূল পদে যোগদান করে আবার ফিরে এসে যোগদান করতে হয়। ’

ড. আখতার হোসেনের সদস্য পদের থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন বা যোগদানের পর সদস্য হিসেবে দায়িত্বে থাকার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মো. সোহরাব হোনাইন বলেন, ‘এটা অবৈধ বলা যাবে না। কারণ রাষ্ট্রপতি চার বছরের জন্য নিয়োগ দিয়েছেন। এটি শেষ নিয়োগ। কিন্তু ত্রিশ বছর চাকরি করেছেন, পেনশন তো তাকে নিতে হবে। সেখানে যোগদান না করলে পেনশন পাবেন না। এটা অপরিহার্য হয়ে যায়। ’

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল পদে যোগদানের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত ত্রুটি হতে পারে। এটি অসাবধানতা বা অজ্ঞতাবশত এই ত্রুটি। যদি ত্রটি হয়ে থাকে তাহলে ভূতাপেক্ষভাবে সংশোধন করা যেতে পারে। মূল পদে পেনশনের জন্য যোগদান করেছি। কিন্তু রাষ্ট্রপতির আদেশ চূড়ান্ত। ’

ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে, অধ্যাপক আখতার হোসেন ২০১৬ সালের ১৩ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেষণে চার বছরের জন্য ইউজিসির সদস্য পদের জন্য নিয়োগ আদেশ পান। সদস্য পদে যোগদান করেন ১৪ জানুয়ারি। সেই হিসেবে তার মেয়াদকাল ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি। নিয়োগের শর্ত অনুযায়ী তিনি চার বছর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তার দায়িত্ব শেষে নিজ কর্মস্থলে ফিরে যাবেন। সদস্য হিসেবে যোগদানের পর নির্দিষ্ট মেয়াদে অন্য কোনও প্রতিষ্ঠানে যোগদান করতে পারবেন না। মূল কর্মস্থলে যোগদান করতে হলে তাকে সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি নিতে হবে। কিন্তু অব্যাহিত না নিয়েই কোনও সদস্য মূল পদে যোগদান করেছেন এবং সদস্য হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করছেন।

গত বছর ২৮ জুন মূল পদে যোগদানের পর তার নিয়োগ বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির কয়েকজন কর্মকর্তা। তাদের অভিযোগ একজন সদস্য বেতন-ভাতা, বাসাভাড়া, বাসার কুকের বেতন-ভাতাসহ তার পেছনে সরকারের প্রতি মাসে ৩ লাখ টাকারও বেশি খরচ হয়। সেই হিসেবে গত ১৫ মাসে তার পেছনে সরকারের ব্যয় হয়েছে প্রায় ৫০ লাখ টাকা।