কড়া নিরাপত্তায় দ্বিতীয় দিনের হরতাল

এপ্রিল ১০, ২০১৩

ঢাকা জার্নাল: কড়া নিরাপত্তার মধ্যে  শুরু হয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের টানা ৩৬ ঘণ্টার হরতাল।

হরতালে বিশৃঙ্খলা এড়াতে পুলিশ ও র্যাব সদস্যদের বুধবার সকাল থেকেই রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে অবস্থান নিয়েছেন। সকাল থেকে বিভিন্ন স্থানে হরতালের সমর্থনে বিক্ষিপ্ত মিছিল ও বোমাবাজির খবর পাওয়া গেছে।

হরতালের প্রথম দিনের মতো বুধবারও দিনের শুরুতেই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে বিএনপি কর্মীরা। নিতাইগঞ্জে এই সংঘর্ষে আহত হয়েছেন কয়েকজন।

সকাল ৭টার দিকে মিরপুর এলাকায় ছাত্রদলের ঝটিকা মিছিল থেকে হাতবোমা ফাটানো হয় বলে কাফরুলের ওসি কাজী ওয়াজেদ আহমেদ জানান।

পল্লবীর ওসি আব্দুল লতিফ জানান, তার এলাকায় মূল সড়কে হরতাল সমর্থকদের খুব একটা দেখা না গেলেও গলির ভেতরে তারা পিকেটিংয়ের চেষ্টা করছে।

ছাত্রদল ও যুবদল কর্মীদের ঝটিকা মিছিলের খবর পাওয়া গেছে রাজধানীর সিপাহী বাগ, বিজয়নগর ও তোজগাঁও এলাকাতেও।

যাত্রাবাড়ী থানার এসআই এমরানুল ইসলাম জানান, শিবির কর্মীরা সকালে ধলপুর ইসলামী হাসপাতালের সামনে মিছিল বের করে। পুলিশ ধাওয়া দিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

যাত্রাবাড়ী মোড়েও হরতালের সমর্থনে মিছিলের চেষ্টা হয় বলে এমরান জানান।

অন্যান্য হরতালের মতো বুধবারও সকাল থেকে রাজধানীতে রিকশা ও অটোরিকশা চলাচল করছে। গণ পরিবহনের সংখ্যাও হরতালের প্রথম দিনের তুলনায় বেশি।

গাবতলী, মহাখালী ও সায়েদাবাদ থেকে দূর পাল্লার কোনো বাস ছাড়েনি। তবে রেল ও লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

হরতালের প্রথম দিন মঙ্গলবার দিনের ভাগে রাজধানীতে বড় কোনো গোলোযোগ না ঘটলেও সন্ধ্যায় বিভিন্ন স্থানে অন্তত ছয়টি গাড়িতে আগুন দেয়া হয়। বিকালে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কাছে ফাটানো হয় কয়েকটি ককটেল।

ভাংচুর ও গাড়ি পোড়ানোর মামলায় বিকালে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মওদুদ আহমদসহ বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের আট নেতাকে রোববার কারাগারে পাঠায় আদালত।

এর পরপরই নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে হরতালের ঘোষণা দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ। সোমবার তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয় মঙ্গলবারের মতোই প্রায় নেতাকর্মী শূন্য। কার্যালয়ের বাইরে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন থাকলেও সড়কে নেতাকর্মীদের কোনো তৎপরতা নেই।

অধিকাংশ শীর্ষ নেতার পর সালাহউদ্দিনও গ্রেপ্তপার হওয়ায় মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ে আসেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু। দলীয় কার্যালয়েই রাত কাটান।

সরকার জনগণের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, আটক শীর্ষ নেতাদের দ্রুত মুক্তি না দিলে আরো কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।

হরতালে অন্য দাবিগুলো হচ্ছে- নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, গণহত্যা বন্ধ, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন, সরকারের পদত্যাগ।

১৮ দলীয় জোটের এই হরতাল শেষ হওয়ার কথা সন্ধ্যা ৬টায়। এর আগে হেফাজতে ইসলাম সোমবার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল করে। আর ইসলামী ছাত্র শিবির তাদের সভাপতির মুক্তির দাবিতে বৃহস্পতিবারও সারাদিন হরতাল ডেকেছে।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.