‘নেতাদের কারাগারে রেখে সংকট কাটবেনা’

এপ্রিল ১০, ২০১৩

0,,16727719_302,00ঢাকা জার্নাল: প্রধান বিরোধী দল বিএনপির শীর্ষ নেতাদের কারাগারে আটক রাখা হলে রাজনৈতিক সংকট আরো বাড়বে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা৷ তাঁদের মতে, নেতাদের মুক্ত করে স্বাধীনভাবে রাজনীতি করতে দেয়া উচিত৷

বিএনপির নেতৃত্বে বিরোধী ১৮ দলের ৩৬ ঘণ্টা হরতালের প্রথম দিনে রাজধানী ঢাকায় তেমন কোন উত্তাপ ছিলনা৷ পিকেটারদের বা কারাগারের বাইরে থাকা নেতাদের তেমন মাঠে দেখা যায়নি৷ দু’একজনকে অল্প সময়ের জন্য বাইরে দেখা গেলেও গ্রেফতার আতঙ্কে তারা দ্রুত আবার আড়ালে চলে যান৷ তবে ঢাকার বাইরে কয়েকটি এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে৷ আর বগুড়ায় পিকেটারদের ইট পাটকেলের আঘাতে একজন ট্রাক ড্রাইভারের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে৷

এদিকে হরতাল চলাকালে বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপির কোনো শীর্ষ নেতাকে দেখা যায়নি৷ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু৷ তিনি দাবি করেন, হরতালে তাদের ৫ জন নেতা-কর্মীকে ৬ মাস করে কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত৷ সারা দেশে ২০০ নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে৷ তিনি আরও জানান, কেন্দ্রীয় নেতাদের আটক করে আন্দোলন দমানো যাবেনা৷ আন্দোলনের মাধ্যমেই সরকারের পতন ঘটান হবে৷

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ১১ শীর্ষ নেতা এখন কারাগারে৷ মঙ্গলবার তাঁদের জামিনের আবেদন জানান হলেও আদালত ২১শে এপ্রিল জামিন আবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য করেছেন৷ তাই ধরেই নেয়া যায়, ২১শে এপ্রিলের আগে এই নেতাদের কেউ মুক্তি পাচ্ছেন না৷

ফখরুল ছাড়া আটক অন্য নেতারা হলেন – ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, মির্জা আব্বাস, আব্দুল্লাহ আল নোমান, রুহুল কবির রিজভী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, আমান উল্লাহ আমান, বরকত উল্লাহ ভুলু, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল৷ হরতালের সময় গাড়ি ভাঙচুরসহ নাশকতার মামলায় তাঁদের গ্রেফতার করা হয়৷

এই পরিস্থিতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগ নিয়ে তার কোন কথা নেই৷ তাঁরা অপরাধ করেছেন কি করেন নি, তা আদালতেই নির্ধারিত হবে৷ তবে এই শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতারে রাজনৈতিক সংকট আরো বাড়বে৷

সরকারের উচিত বিরোধী দলের নেতাদের মুক্ত এবং স্বাধীনভাবে সভা-সমাবেশ ও রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে দেয়া ৷ বিরুদ্ধ মতকে কারাবন্দি করে রাখা ঠিক না৷

অন্যদিকে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও শালিস কেন্দ্রের পরিচালক মানবাধিকার নেতা নূর খান বলেন, শীর্ষ বিরোধী নেতাদের এভাবে কারাবন্দি রাখলে সংবিধান, আইনের শাসন এবং গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷ এতে সামনের নির্বাচন এবং গণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তর অনিশ্চিত হয়ে পড়বে৷

তিনি বলেন, আটক বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগই থাকুক না কেন, তাঁদের জামিনে মুক্তি দেয়া উচিত৷ কারণ তারা দেশের সুপরিচিত রাজনীতিবিদ৷ তাঁরা দেশ থেকে পালিয়ে যাবেন, এমন ধারণা করা ঠিকনা৷ আর গণতান্ত্রিক চর্চায় আইন সবার জন্য সমান হওয়া উচিত৷ বিরোধী দলের জন্য নিবর্তনমুলক আর সরকারি দলের জন্য সহযোগিতামূলক – এই নীতি আইনের শাসনের পরিপন্থি৷

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.