ক্ষমা চাইলেন আনিসুল হক

জুন ২১, ২০১৭

ঢাকা জার্নাল:রাজধানীতে মশাবাহিত রোগ চিকুনগুনিয়ায় সাধারণ মানুষ আক্রান্ত হওয়ায় ক্ষমা চেয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হক। বুধবার (২১ জুন) বিকালে ডিএনসিসির ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন।
একই সঙ্গে মশা নিধনের জন্য সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে যে বরাদ্দ ছিল, তার পুরো টাকা কেন খরচ করা হয়নি সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে জানতে চান ঢাকা উত্তরের মেয়র। এ সময় তিনি চলতি অর্থবছরের জন্য দুই হাজার ৩৮৪ কোটি ৮০ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করেন।
আনিসুল হক জানান, ডিএনসিসির প্রথম বছরের বাজেটে মশা নিধনের জন্য ১১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। পরের অর্থবছরে (২০১৬-১৭) তা বাড়িয়ে করা হয় ২৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে ব্যয় হয়েছে ১৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। প্রায় ৬ কোটি টাকা খরচ করা হয়নি। এ বছর বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২০ কোটি টাকা।
আনিসুল হক বলেন, ‘আমরা চিকুনগুনিয়ার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আমরা প্রতি বছর বরাদ্দ বাড়াচ্ছি। কচুরিপানা, জলাশয়, পুকুর, ডোব, লেকসহ বিভিন্ন এলাকা পরিষ্কার করছি।’

এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল, মশার কারণে নগরজুড়ে চিকুনগুনিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। এজন্য টাকা বরাদ্দ রাখা থাকলেও তা কেন খরচ হয়নি? জবাবে মেয়র আনিসুল হক বলেন, ‘এই প্রশ্ন আমারও। বরাদ্দ রাখা টাকা কেন খরচ হলো না?’ পরে বিষয়টি সম্পর্কে সংস্থার প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এসএমএম সালেহ ভূঁইয়ার কাছে জানতে চান তিনি। জবাবে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের টাকা খরচের প্রয়োজন হয়নি। যে কারণে অতিরিক্ত টাকা খরচ করা হয়নি। আমাদের সব ইকুইপমেন্ট ছিল। পর্যাপ্ত ওষুধ ছিল।’

এরপরও প্রশ্ন ছিল, তাহলে কেন মশাবাহিত চিকুনগুনিয়া রোগের ছড়াছড়ি? বিস্তর ব্যখ্যা দিতে গিয়ে এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা চাইলেও অনেক এলাকায় মশার ওষুধ ছিটাতে পারি না। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, উত্তরার কিছু এলাকা ও সেনানিবাস এলাকায় আমাদের ওষুধ ছিটানোর অনুমতি নেই। ওইসব এলাকায় মশা জন্মায়। সেখান থেকে ডিএনসিসির বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে যায়। তবুও আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তাছাড়া নগরবাসীর অসচেতনতাও অন্যতম কারণ।’

প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেও চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। বাংলাদেশ ছাড়াও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাসহ অন্যান্য দেশে এ বছর রোগটি ছড়িয়েছে। এজন্য আমাদের প্রয়োজন সচেতনতা। সচেতন হলে এ রোগ এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব।’

বাজেটের অনুষ্ঠানে ডিএনসিসি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবাউল ইসলাম, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাঈদ আনোয়ারুল ইসলামসহ সংস্থার কাউন্সিলর এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ছিলেন।

ঢাকা জার্নাল, জুন ২১, ২০১৭।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.