‘জামায়াত-শিবির শেষ পর্যন্ত দাঁড়াতে পারবে না’
এপ্রিল ১০, ২০১৩ ঢাকা জার্নাল: সাঈদীর যুদ্ধাপরাধ মামলার বাদি ও প্রথম সাক্ষী মাহবুবুল আলম হাওলাদার রায়ের আগে বলেছিলেন, ‘‘সাঈদীর ফাঁসির আদেশে শহীদ, নির্যাতিতারা শান্তি পাবেন৷’’
তিনি বলেছিলেন, এ রায় বাংলাদেশের পাপমুক্ত হওয়ার পথে একটি পদক্ষেপ৷
একাত্তরে হত্যা, লুণ্ঠন, নির্যাতন ও ধর্ষণের মতো অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় জামায়াত নেতা সাঈদীর বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ দেয় বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১৷ সাঈদীর একটি মামলার বাদি পিরোজপুরের জিয়ানগরের মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুল আলম হাওলাদার গত ১ মার্চ প্রচারিত সাক্ষাৎকারে মুক্তিযু্দ্ধের সময় সাঈদী কী কী মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছিলেন তার সংক্ষিপ্ত বর্ণনাও দিয়েছিলেন৷
এবার মূল প্রশ্নটি ছিল রায় ঘোষণার পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে৷ মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুল আলম হাওলাদার জানিয়েছেন, রায় ঘোষণার দিনের মতো তারপরও সাঈদীর নিজের এলাকায় কোনো বিক্ষোভ হয়নি৷
কেন হয়নি এমন প্রশ্নে মাহবুবুল আলম হাওলাদার মনে করেন, একাত্তরের পর এলাকা ছেড়ে সাঈদী যেসব জায়গায় বেশ কয়েক বছর আত্মগোপন করে থেকে নিজের একটা পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি গড়ে তুলেছিলেন, সেসব জায়গায় বিক্ষোভের নামে অনেক উচ্ছৃঙ্খলতা দেখা গেলেও সাঈদীর নিজের এলাকায় কিছুই হয়নি, কারণ, এলাকাবাসী জানেন, একাত্তরে তিনি কী কী করেছিলেন৷ সেই সময়ের ভূমিকা তাঁদের মনে আছে বলেই ফাঁসির আদেশ হলেও তেমন দৃশ্যমান কোনো প্রতিক্রিয়া হয়নি৷
সাঈদীর মামলার সাক্ষী হবার পর থেকে বহুবার মামলা থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে লোভনীয় অঙ্কের টাকা দেয়ার চেষ্টা এবং তা গ্রহণে রাজি না হওয়ায় হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে মাহবুবুল আলম হাওলাদারকে৷ অতীতে অনেক সাক্ষাৎকারেই এ কথা বলেছেন তিনি৷
তিনি জানালেন, সপরিবারে নিহত হবার আশঙ্কা এখনো তাঁর আছে৷ সংসারে সচ্ছলতা নেই৷ অথচ জামায়াতে ইসলামী এবং তাদের রাজনৈতিক মিত্রদের পত্রিকা ও ব্লগগুলোতে লেখা হয়ে থাকে, তিনি গত কয়েক বছরে অঢেল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন৷
কথাটাকে ‘অপপ্রচার’ আখ্যা দিয়ে মাহবুবুল আলম হাওলাদার বলেছেন, অতি কষ্টে তৈরি করা জীর্ণ-শীর্ণ বাড়িটি দেখলেই বোঝা যাবে কত অর্থকষ্টে আছেন তিনি৷
দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির আদেশ হওয়ার পর জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় যে তাণ্ডব চালিয়েছে তা মোটেই অপ্রত্যাশিত ছিলনা বলে জানালেন মাহবুবুল আলম হাওলাদার৷ তাঁর মতে, একাত্তরের পরাজিত শক্তি এবং তাদের মিত্ররা যে অস্তিত্ব রক্ষার মরিয়া চেষ্টা হিসেবে সারা দেশে বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা সৃষ্টি করবে তা বোঝাই যাচ্ছিল৷ এমন করে অবশ্য যুদ্ধাপরাধী, রাজাকার, আল বদর ও তাদের অনুসারীদের লক্ষ্য পূরণ হবে বলে মাহবুবুল আলম হাওলাদার মনে করেন না৷
সাঈদীর একটি মামলার প্রথম বাদি ও সাক্ষী মাহবুবুল আলম হাওলাদারের মতে, জামায়াত-শিবির যত চেষ্টাই করুক যু্দ্ধাপরাধীদের ফাঁসি হবেই৷
সূত্র: ডয়েচে ভেলে