প্রধানমন্ত্রীর সাতটি অভিযোগের জবাব দিলো ইউনূস সেন্টার

জুন ২০, ২০১৭

ঢাকা জার্নাল : পদ্মা সেতুর জন্য বিশ্ব ব্যাংকের ঋণ বন্ধ, গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ হারানোর পর হিলারি ক্লিনটনকে প্রধানমন্ত্রীকে টেলিফোন করতে প্ররোচিত করা, গ্রামীণ ব্যাংকের অর্থ হাতিয়ে নেওয়া, আয়কর না দেওয়া ইত্যাদি বিষয়ে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তোলা অভিযোগের জবাব দিয়েছে ইউনূস সেন্টার। সুইডেনের স্টকহোম সিটি কনফারেন্স সেন্টারে গত ১৫ জুন প্রবাসীদের দেওয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। সোমবার ইউনূস সেন্টার প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ওই বক্তব্যকে ‘অসত্য’ দাবি করে সাতটি অভিযোগের জবাব দিয়েছে।

অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ইউনূস সেন্টারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘অসত্য অভিযোগগুলো এর আগেও তোলা হয়েছে এবং এগুলোর জবাবও প্রতিবারই দেওয়া হয়েছে। আমরা আবারও এগুলোর জবাব দিচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রীর তোলা করা ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগের জবাবে ইউনূস সেন্টার জানায়, অধ্যাপক ইউনূসের নিকট কর বিভাগের কোনও বকেয়া করও নেই। ড. ইউনূস বরাবরই তার কর পুরোপুরি ও সময়মতো পরিশোধ করেন। তার আয় ও কর সংক্রান্ত সব তথ্য কর কর্তৃপক্ষের নিকট রয়েছে।

অতিরিক্ত আয়কর দেওয়ার একটি বিষয় আদালতে বিচারাধীন জানিয়ে সেন্টারের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, ‘এ বিষয়ে কোনও তথ্য প্রচার আইনের দৃষ্টিতে দণ্ডনীয়। সরকার যে কেবল এ সম্পর্কিত তথ্য পত্র-পত্রিকায় প্রচারই করছে না, বেশ অবমাননাকরভাবে কাজটি করা হচ্ছে। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এই যে, সরকার প্রধান নিজেই এই অসত্য তথ্যগুলো ছড়াচ্ছেন। ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগ পুরোপুরি অসত্য।’

হিলারি ক্লিনটনকে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করানোর বিষয়ে সেন্টারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘প্রফেসর ইউনূস কখনোই হিলারী ক্লিনটনকে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নিকট টেলিফোন করাননি। হিলারী ক্লিনটন প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করে থাকলে তা তিনি নিজে থেকেই করেছেন।’

বিদেশে টাকা পাঠানো, ক্লিনটন ফাউন্ডেশনে টাকা দেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাবে ইউনূস সেন্টারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘প্রফেসর ইউনূস কখনোই দেশের বাইরে বিনিয়োগ করতে টাকা পাঠান না। বরং তিনি টেলিনর, ইন্টেল করপোরেশন, ড্যানোন, ভেওলিয়া, ইউনিক্লো, বিএএসএফ, ইউগ্লেনার মতো বিশ্বখ্যাত কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে এনেছেন।’

পদ্মাসেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের ঋণ বন্ধ, দুর্নীতির অভিযোগ আনার পেছনেও ইউনূসের হাত থাকার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ প্রসঙ্গে ইউনূস সেন্টার বলে, ‘ড. ইউনূস পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির সম্ভাবনা বিষয়ে প্রকাশ্যে বা ব্যক্তিগতভাবে কখনও কারও কাছে কোনও বিবৃতি দেননি। সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তৈরিতে তিনি কখনোই যুক্ত ছিলেন না। এই কল্পিত কাহিনীগুলো বিশ্বাসযোগ্য করতে বারবার বলা হচ্ছে।’

এছাড়া, কোনও কোনও পত্রিকায় ‘সিনেটর গ্র্যাসলি কর্তৃক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারনসকে লেখা সাম্প্রতিক একটি চিঠিতে প্রফেসর ইউনূস কর্তৃক ক্লিনটন ফাউন্ডেশনকে দেওয়া অনুদান নিয়ে প্রশ্ন উঠার’ সংবাদ বিষয়ে ইউনূস সেন্টার জানায়, এ তথ্য সঠিক নয়। মার্কিন সিনেটের জুডিশিয়ারি কমিটি এ বিষয়ে কোনও তদন্তের সিদ্ধান্ত নিলে ইউনূস সেন্টার তাকে স্বাগত জানাবে।

ঢাকা জার্নাল, জুন ২০, ২০১৭।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.