সৌদিতে পুলিশের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত

জুন ১২, ২০১৭

ঢাকা জার্নাল:সৌদি আরবের দাম্মামের আলকাতিফ এলাকায় পুলিশের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন একজন। ৬ জুন এ ঘটনা ঘটে।

নিহত দুই ব্যক্তি হলেন কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌর শহরের চন্ডিবের মধ্যপাড়ার শামীম আহমেদ (৪০) ও মো. শাহপরান (২৭)। তাঁরা আত্মীয়। আহত মাহবুবুর রহমানের (৪৪) বাড়ি উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের ছনছাড়া গ্রামে।

নিহত ব্যক্তির স্বজনেরা আজ রোববার  এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শাহপরান ১৪ বছর আগে সৌদিপ্রবাসী হন। এক বছর আগে দেশে এসে তিনি বিয়ে করেন। ছয় মাস আগে আবার সৌদি আরব চলে যান। আর শামীম পেশায় মুরগি ব্যবসায়ী ছিলেন। চার মাস আগে তিনি সৌদি আরব যান। সেখানে গিয়ে তিনি আকামা জটিলতায় পড়েন। তাঁর সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসেন শাহপরান। ৬ জুন রাত সাড়ে নয়টার দিকে আকামা সমস্যা সমাধানের জন্য মাইক্রোবাসে করে শামীম, শাহপরান ও মাহবুবুর আলকাতিফ এলাকায় যান। ওই এলাকায় যে তখন ১৪৪ ধারা চলছিল, তাঁরা তা জানতেন না। মাইক্রোবাস থেকে নামার পর পুলিশ তাঁদের থামতে বলেন। কিন্তু তাঁরা নিজেদের রক্ষা করতে দ্রুত সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। এ অবস্থায় পুলিশ তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে তিনজনই গুলিবিদ্ধ হন। তাঁদের দাম্মামের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই শামীম ও শাহপরান মারা যান। মাহাবুব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

শাহপরানের বড় ভাই মো. বোরহান বলেন, বর্তমানে মো. জাফরান, মো. মিজান ও ইমরুল কায়েস নামে তাঁর আপন তিন ভাই সৌদি আরবে আছেন। তাঁদের কাছ থেকে তাঁরা এসব তথ্য জেনেছেন।

সৌদি আরব থেকে জাফরান জানান, ঘটনার পর থেকে সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন তিনি। কিন্তু দূতাবাস থেকে তেমন কোনো সহযোগিতা পাচ্ছেন না বলে তিনি অভিযোগ করেন।

আজ সকালে শামীম ও শাহপরানের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, দুই পরিবারে চলছে মাতম। শাহপরানের বৃদ্ধা মা শামসুন্নাহার জাহান অচেতন হয়ে শয্যায় পড়ে আছেন।

স্বামী হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন শামীমের স্ত্রী আলেয়া আক্তার। আলেয়া-শামীম দম্পতির তিন মেয়ে ও এক ছেলে। বড় মেয়ে তামান্না নুসরাত কলেজে ভর্তি হয়েছে। জান্নাতুল ফেরদৌস ও সাদিয়া মাদ্রাসার ছাত্রী। একমাত্র ছেলে সিদ্দিকুর রহমান স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেনে কেজি ওয়ানে পড়ছে। তিনি বলেন, ‘সংসারে সচ্ছলতা আনার জন্য আমার স্বামী সৌদি আরব গিয়েছিলেন। তাঁর স্বপ্ন ছিল ছেলেমেয়েদের ভালোভাবে পড়ালেখা করাবেন। এখন আমি কীভাবে আমার সন্তানদের পড়ালেখা করাব?’ সৌজন্য প্রথম আলো

ঢাকা জার্নাল, জুন ১২, ২০১৭।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.