শিক্ষক শ্যামল কান্তি কারাগারে

মে ২৪, ২০১৭
 ঢাকা জার্নাল:নারায়ণগঞ্জ বন্দরে এক শিক্ষিকার কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। বুধবার বিকালে তিনি নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অশোক কুমার দত্তের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। কিন্তু বিচারক তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে দুপুরে এমপিওভুক্ত করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে এক শিক্ষিকার কাছ থেকে ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০১৪ সালের ২৪ ডিসেম্বর বন্দর পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত ইংরেজির শিক্ষিকা মোর্শেদা বেগমের চাকরি এমপিওভুক্ত করে দেওয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে প্রথমে ৩৫ হাজার টাকা ঘুষ নেন। পরবর্তীতে তার কাছ থেকে আরও এক লাখ টাকা ঘুষ নেওয়া হয়। কিন্তু শিক্ষিকা মোর্শেদা বেগমকে এমপিওভুক্ত করার কোনও উদ্যোগ নেননি। এই ঘটনায় গত বছরের ২৭ জুলাই মোর্শেদা বেগম বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেন। আদালত বন্দর থানা পুলিশকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেন। গত ১৭ এপ্রিল তদন্তকারী কর্মকর্তা বন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হারুন অর রশিদ শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। অভিযোগ আমলে নিয়ে আদালত আজ তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

এ ব্যাপারে দুপুরে শিক্ষক শ্যামলকান্তি ভক্ত বলেন, ‘একটি প্রভাবশালী চক্রের দ্বারা আমি লাঞ্ছিত হওয়ার পর ওই মহলই আমাকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করতে এই শিক্ষিকাকে দিয়ে মামলা করিয়েছে। যে সময় ঘুষ নেওয়ার কথা মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়েছে সে সময় স্কুলের শীতকালীন ছুটি ছিল। ছুটির দিনে আমি কেন স্কুলে যাব এবং তিনি কিভাবে স্কুলে এসে আমাকে ঘুষ দিলেন।’

তিনি বলেন, ‘প্রভাবশালী মহলকে খুশি করতেই পুলিশ আমার বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিয়েছে। এই আদালতেও আমি ন্যায়বিচার পেলাম না ওই প্রভাবশালীদের কারণেই।’

উল্লেখ্য, গত বছর ১৩ মে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় পিয়ার সাত্তার লফিত উচ্চ বিদ্যালয়ে ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ এনে প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে লাঞ্ছিত করা হয়। স্থানীয় এমপি সেলিম ওসমান সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এ ঘটনার দুই মাসের মাথায় গত ১৪ জুলাই ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, শিক্ষার্থী রিফাতকে মারধর ও শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে পৃথক তিনজন বাদী নারায়ণগঞ্জ আদালতে তিনটি মামলার আবেদন করেন। আদালত ওই দিন বিকেলে শুনানি শেষে প্রথম দুটি মামলা খারিজ করে দেন। পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষিকা মোর্শেদা বেগমকে প্রলোভন দেখিয়ে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে বন্দর থানা পুলিশকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। এই ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি এমপি সেলিম ওসমান ও অপু প্রধানকে দায়ী করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করলে মঙ্গলবার (২৩ মে) ঢাকার সিএমএম আদালত তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এরপর মঙ্গলবার আদালত সেলিম ওসমানের জামিন মঞ্জুর করেন।

ঢাকা জার্নাল, মে ২৪, ২০১৭।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.