‘সার্জেন্ট জাহিদকে জিজ্ঞাসা করলেই তনু হত্যার তথ্য বেরিয়ে আসবে’

মে ২১, ২০১৭

ঢাকা জার্নাল : কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যার ১৪ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও কোনও ক্লু উদ্ঘাটন করতে পারেনি মামলার তদন্ত সংস্থা সিআইডি।

তনুর বাবা ইয়ার হোসেন অভিযোগ করছেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জালাল উদ্দিন আহমেদ তার সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করছেন না। পাশাপাশি সার্জেন্ট জাহিদ ও তার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই তনু হত্যার তথ্য বেরিয়ে আসবে বলেও জানিয়েছেন তনুর বাবা। তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলছেন, হত্যার ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা আলামত সিআইডির ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে। তারা বিশেষজ্ঞ মতামতের জন্য অপেক্ষা করছেন।

শনিবার (২০ মে) ইয়ার হোসেনের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, ‘এই মাসে তদন্ত কর্মকর্তা জালাল উদ্দিন আমাকে কোনও ফোন দেননি। আমার মনে হয়, সিআইডি ক্যান্টনমেন্টকে ভয় পায়। আমরা কুমিল্লা সেনানিবাসের সার্জেন্ট জাহিদকে সন্দেহ করি। ওই দিন সন্ধ্যায় তনু সার্জেন্ট জাহিদের বাসায় গিয়ে আর ফিরে আসতে পারেনি। সিআইডি ও মিডিয়ার কাছে এর আগে আমি ও আমার পরিবার অভিযোগ করে বলেছি, জাহিদ ও তার স্ত্রী তনু হত্যায় জড়িত। তাদেরকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই হত্যার সব তথ্য বেরিয়ে আসবে। কিন্তু মামলার দায়িত্বে থাকা সিআইডি তা কানেই নিচ্ছে না।’

ইয়ার হোসেন বলেন, ‘আমার তনুকে কারা হত্যা করেছে, কেন হত্যা করেছে ও কিভাবে হত্যা করেছে— তার সব তথ্য সিআইডি, সার্জেন্ট জাহিদ ও সেনানিবাস কর্তৃপক্ষ ভালোভাবে জানেন। এখনও ক্যান্টনমেন্টের গোয়েন্দা বিভাগ আমার পিছু ছাড়ছে না।’ মেয়ে হত্যার বিচার না পেয়ে ইয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলেও জানান।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লার ময়নামতি সেনানিবাসের ভেতর একটি ঝোঁপ থেকে সোহাগী জাহান তনুর লাশ উদ্ধার করেন তনুর বাবা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহকারী ইয়ার হোসেন। পরদিন তিনি বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন কুমিল্লা কোতয়ালী থানায়। থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থা ডিবির পর এই মামলার তদন্তের ভার এখন সিআইডির হাতে। সংস্থাটি দায়িত্ব পাওয়ার পর এ পর্যন্ত তিন বার তদন্ত কর্মকর্তার বদল হয়েছে।

মামলার বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা জালাল উদ্দিন আহমেদ মামলাটির দায়িত্ব পেয়েছেন গত বছরের ২৪ আগস্ট। তিনি দায়িত্ব পাওয়ার পর কয়েকজনের সঙ্গে তনুর ডিএনএ নমুনা মেলানোর উদ্যোগ নেন।

এ বিষয়ে জালাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গত রবিবারেও (১৪ মে) তনু হত্যার মামলার কাজে ঢাকায় গিয়েছি। এ মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত আছে এবং তদন্তও চলছে। কয়েকজনের সঙ্গে ডিএনএ মেলানো হয়েছে। কিন্তু কোনও ফল আসেনি।’

তিনি বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে তনুর লাশ উদ্ধারের পর সঙ্গে থাকা জুতা, চুল ও মোবাইল ফোনের কভারসহ অন্তত ১০টি আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। এগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও বিশেষজ্ঞ মতামতের জন্য ঢাকায় সিআইডির ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে। বিশেষজ্ঞ মতামতের জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। এগুলো পেলেই তদন্তের কাজ এগিয়ে যাবে।’ সৌজন্যে বাংলা ট্রিবিউন।

ঢাকা জার্নাল, মে ২১, ২০১৭।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.