রেইনট্রির সিসিটিভি সার্ভার জব্দ, গোয়েন্দাদের হাতে অজানা তথ্য

মে ১৫, ২০১৭

ঢাকা জার্নাল:রেইনট্রি হোটেলের সিসিটিভির সব ফুটেজ এখন সিআইডির ডিজিটাল ল্যাবে। হোটেলে যতগুলো ক্যামেরা ছিল, সবগুলোর ফুটেজ ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ও ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের নারী-কর্মকর্তাদের যৌথ টিম উদ্ধার করেছে। ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিওগুলো প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে ওই হোটেলের অনেক অজানা তথ্যই এখন গোয়েন্দা পুলিশের হাতে। সোমবার পুলিশের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার ও একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের কাছ থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা  জানিয়েছেন, রেইনট্রি হোটেল কর্তৃপক্ষ ফুটেজ সংরক্ষণের কথা বারবার অস্বীকার করেছে। তারা গণমাধ্যমকেও জানিয়েছে এক মাসের বেশি সময়ের ফুটেজ তারা সংরক্ষণ করে না। হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে  সুর মিলিয়ে বনানী থানা পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তারাও একই কথা বলতে থাকেন।

বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি যখন চরমে, তখনই গোয়েন্দা পুলিশ ও ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের কর্মকর্তারা দফায় দফায় হোটেলে অভিযান পরিচালনা করেন। বিভিন্ন ধরনের আলামত জব্দের পাশাপাশি রেইনট্রি হোটেলের ফুটেজ সংরক্ষণের সার্ভার মেশিনও জব্দ করেন তারা।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের আইটি এক্সপার্ট কর্মকর্তারা প্রাথমিকভাবে ওই সার্ভারে অনেক ফুটেজের অস্তিত্ব নিশ্চিত হলে তা আরও পরীক্ষার জন্য রবিবার (১৪ মে) পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির ফরেনসিক পরীক্ষাগার ও ডিজিটাল ল্যাবে হস্তান্তর করা হয়। ধর্ষণের শিকার তরুণীদের ব্যবহৃত বিভিন্ন পোশাকও সিআইডির কাছে  পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।

সিআইডির কর্মকর্তারা জানান, সিআইডির দুটি টিম আলামতগুলোর পরীক্ষা শুরু করে দিয়েছে। ফরেনসিক পরীক্ষাগারে তরুণীদের ব্যবহৃত পোশাক থেকে আসামিদের ডিএনএ শনাক্তকরণ,পাশাপাশি রেইনট্রি হোটেলে মামলার আসামিদের উপস্থিতি ও বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডের ডিজিটাল পরীক্ষা করছে সিআইডির পৃথক টিম।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, রেইনট্রি হোটেলের সিসিটিভি ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণকারী যন্ত্র ও ফুটেজ সংরক্ষণকারী সার্ভার মেশিনে  অনেক ফুটেজ পাওয়া গেছে। সেখান থেকে ওই রাতের ঘটনার ভিডিও ছাড়াও পরবর্তীতে ওই হোটেলে আসামিদের যাতায়াত ও যোগাযোগের তথ্যও পরীক্ষা করা হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে গোয়েন্দা পুলিশের একজন সাইবার ক্রাইম বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তা   বলেন, যে কোনও ধরনের ডিভাইস বা ডিজিটাল যন্ত্র থেকে মুছে ফেলা সর্বশেষ তথ্য উদ্ধারের প্রযুক্তিও আছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির হাতে। কাজেই হোটেল কর্তৃপক্ষ উদ্দেশ্যমূলক কোনও  ফুটেজ সরিয়ে ফেললেও সেই তথ্যও জানা যাবে। সর্বশেষ ডিলিট করা ফুটেজও উদ্ধার করা সম্ভব হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ- কমিশনার (মিডিয়া) মো. মাসুদুর রহমান  বলেন, ‘রেইনট্রি হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণের সার্ভার জব্দ করা হয়েছে।সার্ভার মেশিনের ডিজিটাল পরীক্ষার জন্য সিআইডির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়া সিআইডির ফরেনসিক পরীক্ষাগারে আসামিদের ডিএনএ শনাক্তকরণের জন্য ধর্ষণের শিকার তরুণীদের ব্যবহৃত পোশাকও দেয়া হয়েছে।’

ঢাকা জার্নাল, মে ১৫, ২০১৭।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.