টঙ্গীতে ছাত্রী উত্ত্যক্তের ঘটনায় গ্রেফতার ৩
মে ১৪, ২০১৭ ঢাকা জার্নাল : গাজীপুরের টঙ্গীতে ছাত্রীদের উত্ত্যক্তের ঘটনায় ৭ জনের নামে মামলা দায়ের করেছেন এক ছাত্রীর বাবা। তাদের মধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মামলার আসামিরা হলো, অনিক, সুজন, ঈমন, রাব্বী, শিহাব, ফাহাদ ও সাগর। তাদের মধ্যে সুজনকে বৃহস্পতিবার (১১ মে) দুপুরে তার বাসা থেকে এবং ঈমন ও সাগরকে শুক্রবার (১২ মে) রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে।
টঙ্গী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাসানুজ্জামান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দুপুরে উত্ত্যক্তের শিকার এক শিক্ষার্থীর বাবা উত্ত্যক্ত ও আইসিটি আইনে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় সাতজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।’
২৯ এপ্রিল টঙ্গীর শিলমুন এলাকার আব্দুল হাকিম মাস্টার উচ্চ বিদ্যালয় এলাকায় ৩-৪ জন ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করে বখাটেরা। উত্ত্যক্তের শিকার এক ছাত্রীর অভিভাবক জানান, ওইদিন বিদ্যালয়ের পাশের একটি কোচিং সেন্টারে প্রাইভেট পড়া শেষে চার বান্ধবী বাসায় ফিরছিলেন। এ সময় শিলমুন এলাকার অনিক (১৭) ও টঙ্গী টিঅ্যান্ডটি এলাকার সুজন হোসেন (১৫) তাদের উত্ত্যক্ত করে। এ সময় তাদের সহযোগী ছিল রাব্বি, শিহাব ও ফাহাদ। এ ঘটনাটি তারা মোবাইলে ভিডিও করে। পরে তাদের আরেক বন্ধু ঈমন তা ফেসবুকে প্রচার করে।
এ ঘটনায় একটি সালিশি বৈঠক করে উত্ত্যক্তকারীদের সতর্ক করে দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও দ্বিতীয় দফায় আবারও ভিডিওটি ফেসবুকে প্রচার করা হয়। পরে বৃহস্পতিবার মামলা দায়ের করেন এক শিক্ষার্থীর বাবা।
উত্যক্তের শিকার এক শিক্ষার্থীর মা বলেন, ‘গত ছয় মাস ধরেই আমার মেয়েকে অনিক উত্ত্যক্ত করে আসছে। বিষয়টি আমরা অনিকের বাবা-মাকেও জানিয়েছি। কিন্তু অনিকের অত্যাচার বন্ধ হয়নি।’
উত্ত্যক্তকারী অনিকের মা রুবিয়া খাতুন আব্দুল হাকিম মাস্টার উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিষদের অভিভাবক সদস্য। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে অন্যায় করে থাকলে তার বিচার হয়েছে এবং হবে।’
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান বলেন, ‘অনিকের আচরণ ও বিদ্যালয়ের পারফরম্যান্স ভালো না। তাকে বিদ্যালয়ে আসতেও নিষেধ করা হয়েছে। গত জানুয়ারি থেকেই সে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। আর সুজন হোসেন বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির বাণিজ্য শাখার ছাত্র।’
রাব্বি, শিহাব, ফাহাদ, ঈমনও একই বিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী।
গাজীপুর মহানগর ৪৭নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের আহ্বায়ক মনির হোসেন বলেন, ‘ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা অনেকের নজরে আসে। পরে তা বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা পরিষদ সদস্যদের নজরে আনা হয়। বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকেই ৬ মে সালিশি বৈঠক ডাকা হয়।’
ওই সালিশি বৈঠক প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান জানান, অভিযুক্ত ছয় শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শী চারজন এবং অভিযুক্তদের অভিভাবকদের ডেকে আনা হয়। সালিশে অভিভাবকেরা সন্তানদের বেত্রাঘাতের শাস্তি দেন। পরে আবারও ওই ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।’
ঢাকা জার্নাল, মে ১৩, ২০১৭।