ফের মা-মেয়ের লাশের ওপর দিয়েই গেল ট্রেনটি

মে ১৪, ২০১৭

ঢাকা জার্নাল : পঞ্চগড়ে রেল লাইনের ওপর পড়ে থাকা মা ও মেয়ের লাশের ওপর দিয়েই আবার ফিরে গেল ট্রেনটি। শনিবার (১৩ মে) বেলা সোয়া ১২টার দিকে পার্বর্তীপুর-পঞ্চগড় ট্রেন সড়কের বকুলতলায় উত্তরা ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আড়াই বছরের কন্যা শিশু পবিত্রা সেন মনি বসাককে নিয়ে আত্মহত্যা করেন মা শ্যামলী বসাক (২৩)। বেলা দেড়টার পর পঞ্চগড় থেকে ফেরত যাওয়ার সময় রেল লাইনে পড়ে থাকা লাশ দু’টিকে আবার ছিন্নভিন্ন করে দিয়ে ট্রেনটি চলে যায় তার গন্তব্যে। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্রমতে, দুপুরে পার্বতীপুর থেকে ছেড়ে আসা পঞ্চগড়গামী উত্তরা নামের লোকাল ট্রেনের নিচে মেয়েকে ফেলে দিয়ে নিজেও লাফিয়ে পড়েন মা শ্যামলী বসাক। ঘটনাস্থলে মা ও মেয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যান। এ ঘটনার পর দেড় ঘণ্টাতেও লাশ দু’টো উদ্ধার করেনি সংশ্লিষ্ট জিআরপি পুলিশ।
তবে মা ও মেয়ের লাশের ওপর দিয়ে যাতে ফিরতি ট্রেন না যেতে পারে সে জন্য ট্রেনটি থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন এলাকাবাসী। শত শত মানুষ প্রায় পাঁচশ গজ দূর থেকে রেললাইনে দাঁড়িয়ে ইশারা দিয়ে ট্রেনটি থামানোর চেষ্টা করেন। চালক চলন্ত ট্রেনটি না থামিয়ে লাশের ওপর দিয়েই ট্রেন নিয়ে যান। এতে মা শ্যামলী বসাক ও আড়াই বছরের শিশুকন্যা মনি বসাকের লাশ দু’টি ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হন উপস্থিত এলাকাবাসী।

পঞ্চগড় থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রবিউল হাসান সরকার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দুপুরে জানিয়েছিলেন, জিআরপি পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। এলাকাবাসীরা জানান, ঘটনা জানার পরেও জিআরপি পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট করতে পারেননি। ফলে লাশ দু’টি রেল লাইনেই পড়ে থাকে।

স্থানীয় জামেদুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থল থেকে পঞ্চগড় রেল স্টেশনের দূরত্ব মাত্র দেড় কিলোমিটার। স্টেশন মাষ্টার ও ওই ট্রেনের চালক ঘটনাটি জানার পরেও ট্রেন ছেড়ে দেন। এ কারণে চালক এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

তবে পঞ্চগড় রেল ষ্টেশনের ষ্টেশন মাষ্টার বজলুর রহমান আত্মহত্যার ঘটনা এবং রেল লাইনে লাশ পড়ে থাকার খবর জানেন না বলে উল্লেখ করেন।

ট্রেনের পরিচালক (গার্ড) আব্দুর রহিমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘লোকজন হাত উঁচিয়ে চিৎকার করছিল। তবে তাদের হাতে লাল পতাকা না থাকায় ট্রেনটি থামনো  হয়নি।’

উল্লেখ্য, পার্বতিপুর থেকে ছেড়ে আসা এই ট্রেনটি দুপুর এক টায় পঞ্চগড় স্টেশনে পৌঁছায়। আবার দুপুর দেড়টায় পঞ্চগড় ষ্টেশন থেকে পার্বতিপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।

মেয়েকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে মায়ের আত্মহত্যা

ঢাকা জার্নাল, মে ১৩, ২০১৭।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.