আবারো মাহমুদুল্লাহ ম্যাজিকে জিতলো খুলনা

নভেম্বর ১২, ২০১৬

8fffঢাকা জার্নাল: লো-স্কোরিং ম্যাচেও হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে ৪ রানে জিতলো খুলনা। চলমান টুর্নামেন্টে এটি তাদের দ্বিতীয় জয়। অপরদিকে, তিন ম্যাচ খেলা চিটাগংয়ের দ্বিতীয় পরাজয়। শেষ ওভারে আবারো বল হাতে জ্বলে উঠেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। রাজশাহীর বিপক্ষে শেষ ওভারের সেই ম্যাচে জয়ের নায়ক ছিলেন তিনি, এই ম্যাচেও তার পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে নিয়েছেন তিনটি উইকেট।

বিপিএলের অষ্টম ম্যাচে মাঠের লড়াইয়ে নামে তামিম ইকবালের চিটাগং ভাইকিংস এবং মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের খুলনা টাইটানস। মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে দুপুর দুইটায় মাঠে নামে দ্বিতীয় জয়ের টার্গেটে থাকা চিটাগং-খুলনা। টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন চিটাগং দলপতি তামিম ইকবাল।

 

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের খুলনা নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে তোলে ১২৭ রান। জবাবে, ২০ ওভার ব্যাট করে জয় তুলে নিতে পারেনি ৯ উইকেট হারানো চিটাগং। মাহমুদুল্লাহ শেষ ওভারে তিনটি উইকেট তুলে নেন। ফলে, ১২৩ রানে থেমে যেতে হয় চিটাগংকে।

খুলনার হয়ে ব্যাটিং শুরু করেন রিকি ওয়েসেলস এবং হাসানুজ্জামান। দুই ওপেনার বেশ ভালোই শুরু করেন। ১৯ বল স্কোরবোর্ডে ৩৪ রান যোগ করেন তারা। ইনিংসের চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে মোহাম্মদ নবীকে উঠিয়ে মারতে গিয়ে জহুরুল ইসলামের তালবুন্দি হন হাসান (৮)। একই ওভারে নবী ফিরিয়ে নেন নতুন ব্যাটসম্যান শুভাগত হোমকে (৩)। দলীয় ৩৮ রানের মাথায় শুভাশিষ রায়ের তালুবন্দি হন শুভাগত।

 

ভালো শুরু করেও আবদুর রাজ্জাকের দারুণ এক ঘূর্ণিতে বোল্ড হন রিকি ওয়েসেলস। ব্যক্তিগত ২৮ রানে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে বোল্ড হওয়ার আগে ১৭ বল মোকাবেলা করে তিনি চারটি বাউন্ডারি হাঁকান। দলীয় ৪২ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেটের পতন ঘটে খুলনার।

এরপর ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে খুলনা। দলপতি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দিকে তাকিয়ে ছিল দল। তবে, ইনিংসের নবম ওভারে তাসকিনের লাফিয়ে উঠা বলে শট নেন মাহমুদুল্লাহ। তামিমের দুর্দান্ত ক্যাচে ফিরতে হয় ৬ রান করা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে। দলীয় ৫২ রানে খুলনার চার উইকেটের পতন হয়।

অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান অলোক কাপালির ব্যাটে আবারও স্বপ্ন দেখে খুলনা। তবে নবীর তৃতীয় শিকার হয়ে ২৩ রানে ফেরেন তিনি। ৩৫ বলে একটি চারের সাহায্যে নিজের ইনিংসটি সাজান কাপালি। ১৭.৩ ওভারে দলীয় শতক পূর্ণ হয় খুলনার। মোহাম্মদ নবীর বলে ছক্কা হাকিয়ে দলের শততম রানের সাক্ষী হন আরিফুল হক। শেষ ওভারে ফেরেন নিকোলাস পুরান। রানআউটের ফাঁদে বিদায় নেওয়ার আগে তিনি ৩০ বলে ২৯ রান করেন। পুরান ফেরার পরের বলেই কেভন কুপারকে নিজের বলে নিজে ক্যাচ নিয়ে ফেরান তাসকিন। আরিফুল ১৬ বলে ২৫ রান করে অপরাজিত থাকেন।

 

চিটাগংয়ের হয়ে ৪ ওভারে ২২ রান খরচায় তিনটি উইকেট তুলে নেন স্পিনার মোহাম্মদ নবী।

দ্বিতীয় জয় পেতে ওপেনিং ব্যাটিংয়ে নামেন তামিম ইকবাল এবং ডোয়াইন স্মিথ। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে কেভন কুপারের বলে শফিউলের তালুবন্দি হন ব্যক্তিগত ৩ রান করা তামিম। এরপর ষষ্ঠ ওভারে ফেরেন ডোয়াইন স্মিথ। কেভন কুপারের দ্বিতীয় শিকারে জুনায়েদ খানের তালুবন্দি হন ৩ রান করা স্মিথ। ইনিংসের অষ্টম ওভারে ফেরেন শোয়েব মালিক। শফিউল ইসলামের বলে এলবির ফাঁদে পড়েন পাকিস্তানি এই অলরাউন্ডার (৫৪)। দলীয় ৩০ রানের মাথায় চিটাগং তৃতীয় উইকেট হারায়।

চিটাগংকে স্বপ্ন দেখানো এনামুল হক বিজয় উইকেটে থিতু হতে পারেননি। দশম ওভারের প্রথম বলেই বিদায় নিতে হয় ১৪ রান করা বিজয়কে। শফিউলের দারুণ এক সুইংয়ে পরাস্ত হন তিনি। দলীয় ৩৩ রানের মাথায় চিটাগং টপঅর্ডারের চার ব্যাটসম্যানকে হারায়। বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে পারেননি জাকির হাসান। ব্যক্তিগত ৮ রানে শফিউলের বলে ওয়েসেলসের তালুবন্দি হন জাকির।

ব্যাট হাতে কিছুটা রানের চাকা ঘোরাচ্ছিলেন জহুরুল ইসলাম। তবে, ইনিংসের ১৬তম ওভারের প্রথম বলে বিদায় নেন তিনি। ব্যক্তিগত ২৫ রান করে জুনায়েদের তালুবন্দি হন জহুরুল। শফিউলের বলে সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে একটি ছক্কা আসে। দলীয় ৭৮ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায় চিটাগং।

এরপর ব্যাট হাতে দলকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ান মোহাম্মদ নবী। সঙ্গী ছিলেন চতুরাঙ্গা ডি সিলভা। এই দু’জন মিলে ২৫ বলে ৪৫ রান তোলেন। ডি সিলভার ব্যাট থেকে আসে ১৪ বলে একটি চার আর একটি ছক্কায় ১৯ রান। শেষ ওভারে দরকার ছিল ৬ রান। এ সময় বোলিংয়ে আসেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। দ্বিতীয় বলেই সিলভাকে ফেরান তিনি। এক বল পরেই আবদুর রাজ্জাককে বিদায় করেন তিনি। শেষ দুই বলে চিটাগংয়ের দরকার হয় ৫ রান। শেষ বলে মোহাম্মদ নবীকে ফেরান মাহমুদুল্লাহ। আর শেষ ওভারে তিন উইকেট নিয়ে রাজশাহীর বিপক্ষে ম্যাচের মতো এ ম্যাচেও নায়ক তিনি।

মোহাম্মদ নবী ২৩ বলে ২টি চার আর ২টি ছক্কায় করেন ৩৯ রান। রিয়াদ তিনটি উইকেট দখল করেন। শফিউল নেন চারটি উইকেট। আর দুটি উইকেট পান কেভন কুপার।

চট্টগ্রাম ভাইকিংস: তামিম ইকবাল, এনামুল বিজয়, তাসকিন আহমেদ, আব্দুর রাজ্জাক, জহুরুল ইসলাম, শুভাশিষ রায়, জাকির হাসান, ডোয়াইন স্মিথ, শোয়েব মালিক, চতুরাঙ্গা ডি সিলভা, মোহাম্মদ নবী।

খুলনা টাইটানস: মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মোশাররফ হোসেন, শফিউল ইসলাম, শুভাগত হোম, আরিফুল, হাসানুজ্জামান, অলোক কাপালি, নিকোলাস পুরান, রিকি ওয়েসেলস, কেভন কুপার, জুনায়েদ খান।

ঢাকা জার্নাল, ১২ নভেম্বর ২০১৬।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.