হিলারিকে টপকে গেলেন ট্রাম্প?

নভেম্বর ২, ২০১৬

trumpঢাকা জার্নাল: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক এক সপ্তাহ আগে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প এক জরিপে হিলারি ক্লিনটনকে টপকে যাওয়ার খবর পেলেন।

ট্রাম্পের এগিয়ে যাওয়ার খবর এবারের নির্বাচনে এখ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় চমক। চমকে গেছে যুক্তরাষ্ট্র আর গোটা বিশ্ব। কিন্তু সত্যি কি তাই?

এবিসি নিউজ/ওয়াশিংটন পোস্ট পরিচালিত এক জরিপের ফল প্রকাশ হয়েছে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার। এতে দেখা যাচ্ছে, হিলারির চেয়ে ট্রাম্প ১ শতাংশ ভোটার সমর্থন বেশি নিয়ে এগিয়ে গেছেন। এ খবরে ট্রাম্পশিবিরে স্বস্তি দেখা দিয়েছে।

এ দুই সংবাদ মাধ্যমের জরিপে দেখা যাচ্ছে, ট্রাম্প ৪৬ শতাংশ ভোট পেতে যাচ্ছেন, যেখানে হিলারি ৪৫ শতাংশ ভোট পেতে যাচ্ছেন। জরিপের ফলাফল ৩ শতাংশ হেরফের হতে পারে।

প্রধান দুই প্রার্থী বাদে এই জরিপে লিবার্টিয়ান পার্টির প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী গ্যারি জনসনের প্রতি সমর্থন আরো কমার কথা বলা হয়েছে। জনসন ৩ শতাংশ ভোট পেতে পারেন। গ্রিন পার্টির প্রার্থী জিল স্টেইনের সমর্থন কমে এসে দাঁড়িয়েছে ২ শতাংশে। এবারের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রধান দুই পার্টি ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান ছাড়া লিবার্টিয়ান পার্টি ও গ্রিন পার্টি প্রভাব রাখতে পারে।

এবিসি নিউজ/ওয়াশিংটন পোস্ট তাদের জরিপে ট্রাম্পকে এগিয়ে রাখলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন। দি পলিটিকো পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেষ মুহূর্তে ট্রাম্প সুবিধাজনক অবস্থানে থাকার দাবি করলেও ‘ব্যাটেলগ্রাউন্ড বা সুইং স্টেটে’ এমন কি রিপাবলিকান ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত কয়েকটি রাজ্যে ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে আছেন হিলারি।

যেসব রাজ্যে দুই দলের কোনো প্রার্থীরই এককভাবে জয়ের সম্ভাবনা নেই, সেসব রাজ্যকে ব্যাটেলগ্রাউন্ড বা সুইং স্টেট বলা হয়। দি পলিটিকোর মতে, এবার সুইং স্টেটে হিলারির জয়ের সম্ভাবনা ৮০ শতাংশ।

কলোরাডো ও ভার্জিনিয়া রাজ্যে এগিয়ে আছেন হিলারি। নিউ মেক্সিকো ও মিশিগানেও তিনি এগিয়ে আছেন। তবে এ দুই রাজ্যে শেষ সময়ে ট্রাম্পের দিকে সমর্থন কিছুটা বেড়েছে।

দুর্বার গতিতে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন হিলারি। বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ সংস্থার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, হিলারির প্রেসিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা ৮০ শতাংশ। এ কথা ট্রাম্পও জানেন। তবে শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে জয়ের আশা জাগিয়ে রেখেছেন ট্রাম্প।

ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনো দলীয় শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠাতা করতে পারেননি। জয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য উইসকনসিনে বুধবার গভর্নর স্কট ওয়াকারকে নিয়ে প্রচার চালানোর কথা রয়েছে ট্রাম্পের। কিন্তু এ রাজ্যের আইনপ্রণেতা ও হাউস স্পিকার পল রায়ানকে পাশে টানতে পারেননি তিনি। অর্থাৎ দলের বিভেদ মেটাতে সমর্থন হননি।

গত শুক্রবার এফবিআইয়ের পরিচালক জেমস কোমি হিলারির ই-মেইল ইস্যু নিয়ে নতুন করে তদন্ত শুরুর ঘোষণা দেওয়ার পর জনমত জরিপে হিলারি কিছুটা পিছিয়ে পড়েন। এই সুযোগে হিলারিকে জনগণের সামনে আস্থাহীন হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন ট্রাম্প ও তার সমর্থকরা। অন্যদিকে, ই-মেইল ইস্যু সরিয়ে জনগণের নজর অন্যদিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছেন হিলারি ও তার প্রচারশিবির।

হিলারির হাতে মাত্র ১ সপ্তাহ সময় আছে। এর মধ্যে ট্রাম্পকে আবার অগ্রহণযোগ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে তাকে। এ জন্য গণমাধ্যমকে কাজে লাগাচ্ছেন তিনি।

ফিলাডেলফিয়ায় ডাবলেটার হোটেল বলরুমে মঙ্গলবার ট্রাম্প ও মাইক পেন্স সমর্থকদের উদ্দেশে কথা বলেন। এ সময় জাতীয় পর্যায়ের জরিপে এগিয়ে থাকার কথা ঘোষণা করেন ট্রাম্পের রানিংমেট মাইক পেন্স। উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘বৈপ্লবিক যুদ্ধে ঘুরে দাঁড়ানোর সময়।’

এদিকে সিএনএন/ওআরসির পোল অব পোলস জরিপে হিলারি ৪৯ শতাংশ ভোটা পেতে যাচ্ছেন, যেখানে ট্রাম্প পেতে পারেন ৪৪ শতাংশ ভোট। রয়টার্স/ইপসোসের জরিপেও হিলারি ও ট্রাম্পের ব্যবধান প্রায় একই। এক্ষেত্রে এবিসি নিউজ/ওয়াশিংটন পোস্ট কীসের ভিত্তিতে ট্রাম্পকে এগিয়ে রাখলেন, তা নিয়ে সংশয় থেকে যায়।

ঢাকা জার্নাল, নভেম্বর ০২, ২০১৬।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.