ডায়াগনস্টিক সেন্টারের টয়লেটে নারীর ভিডিও ধারণ, গ্রেপ্তার ১

অক্টোবর ২৯, ২০১৬

popular11477751592ঢাকা জার্নাল: রাজধানীর ধানমন্ডিতে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের টয়লেটে গোপনে এক নারী রোগীর ভিডিও ধারণের অভিযোগে ওই সেন্টারের অপারেটর হাসিবুর রহমান সুমনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শনিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। ওই নারীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ধানমন্ডি থানা পুলিশ সুমনকে আটক করে।

পরে দুপুরে ভিকটিম নারী পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেন। সেই মামলায় সুমনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ।

সন্ধ্যায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ধানমন্ডি থানার উপ-পরিদর্শক খায়রুল ইসলাম বলেন, সকালে ওই নারী তার মা ও ছোট বোনকে নিয়ে নিকুঞ্জ এলাকা থেকে ধানমন্ডি-২ নম্বরে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আসেন। সেখানে চিকিৎসক তাকে ইউরিন টেস্ট করানোর কথা বলেন। টেস্টের স্যাম্পল দেওয়ার জন্য ওই নারী টয়লেটে যান। এ সময় সুমন তার স্যামসাং গ্যালাক্সি ফোন দিয়ে গোপনে ভিডিও ধারণের চেষ্টা করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই নারী চিৎকার শুরু করেন। তার চিৎকারে অন্যরা এগিয়ে এসে সুমনকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। পরে থানায় খবর দিলে আমরা এসে তাকে আটক করে নিয়ে যাই।

খায়রুল ইসলাম জানান, সুমনের বাড়ি চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর এলাকায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে গোপনে ভিডিও ধারণের বিষয়টি স্বীকার করেছ। তাকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। সে কী উদ্দেশ্যে ভিডিও ধারণ করেছে, রিমান্ডে নিয়ে তা জিজ্ঞেস করা হবে।

ধানমন্ডি থানার ওসি আব্দুল লতিফ জানান, ঘটনার পর ভুক্তভোগী থানায় এসে সুমনকে একমাত্র আসামি করে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা (নম্বর-১৩) করেন। সেই মামলায় সুমনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আমরা তাকে বিকেলে আদালতে পাঠাই।

তিনি আরো বলেন, সুমনের কাছ থেকে জব্দকৃত মোবাইলে কয়েকটি ভিডিও পাওয়া গেছে। ভিডিওটি ওই নারীর কি না তা আমরা নিশ্চিত হতে পারছি না। এজন্য মোবাইলটি সিআইডির ল্যাবরেটরিতে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।

এদিকে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নারীর ভিডিও ধারণ করায় হাসপাতালে আসা রোগী ও স্বজনদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলছেন, সমাজের দায়ত্বশীল প্রতিষ্ঠানগুলোতে যদি নারীরা এভাবে নিরাপত্তহীনতায় থাকেন, তাহলে তারা কোথাও নিরাপদ থাকবেন না। এর ফলে নারীর ক্ষমতায়ন, স্বাধীনতা এবং সম্মান হুমকির মুখে পড়বে।

ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের শিক্ষার্থী শামসুন নাহার হেনা বলেন, পপুলার  ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে চিন্তা করাও যায় না। দেশের প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে যদি এ অবস্থা হয়, তাহলে অন্যসব প্রতিষ্ঠানের অবস্থা কেমন হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

ব্র্যাক ব্যাংকের কর্মকর্তা ইশরাত সুলতানা জেবিন বলেন, চিকিৎসা সেবার জন্য আমরা সাধারণত এই ধরনের প্রতিষ্ঠানকে প্রায়োরিটি দেই। কিন্তু সেখানে নারীর নিরাপত্তা কোথায়?

ঘটনার নিন্দা জানিয়ে জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক সালমা আলী বলেন, এ ধরনের ঘটনা প্রমাণ করে, নারীরা সমাজে এখনো কত অনিরাপদ। আমরা এ ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি।

ঢাকা জার্নাল, অক্টোবর ২৯, ২০১৬।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.