‘দ্বৈত নাগরিকরা নির্বাচন করতে পারবেন না’

অক্টোবর ২৬, ২০১৬

muhitঢাকা জার্নাল : অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ‘প্রবাসী বাংলাদেশিদের দ্বৈত নাগরিকত্ব নিশ্চিত করা হবে। তবে দেশের সংবিধান অনুযায়ী তারা গণপ্রতিনিধিত্বকারী কোনো নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।’

মঙ্গলবার সচিবালয়ে সদ্যসমাপ্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে যোগ দিতে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রবাসীরা অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন।

এ সময় অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রবাসীরা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। সরকার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে। প্রবাসীদের যেসব সমস্যা আছে, সেগুলো সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অনুষ্ঠানে জাতিসংঘে বাংলাদেশের প্রাক্তন স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এম এ মোমেন, ইউরোপীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি অনিল দাস গুপ্ত, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফায়জুর রহমান ফারুক, ফ্রান্স আওয়ামী লীগের সভাপতি মুসলিম উদ্দিন খান লিটন, বেলজিয়াম আওয়ামী লীগ সভাপতি বজলুল রশীদ বুলু, সুইডেন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আতোয়ার রহমান, সর্ব ইউরোপীয় বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ আলোচনায় অংশ নেন।

বৈঠকে প্রবাসীরা দেশের যেকোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণের অধিকার নিশ্চিতসহ বেশ কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন। এগুলো হলো- দ্বৈত নাগরিকত্ব নিশ্চিত করা, ভোটাধিকার নিশ্চিত করা, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ইস্যু করা, সিলেট বিমানবন্দরে প্রবাসীদের জন্য বিশেষ লাউঞ্জ খোলা, বিমানবন্দরে সব ধরনের হয়রানি বন্ধ করা এবং বিদেশে মারা যাওয়া বাংলাদেশিদের লাশ রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় দেশে ফেরত আনা প্রভৃতি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের এবারের সম্মেলনে বিদেশি অতিথিসহ বিভিন্ন দেশ থেকে প্রচুর প্রবাসী বাংলাদেশি অংশ নেন। অতিথিরা সবাই আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়া নিয়ে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক স্থিতিশীল অবস্থা তাদের দৃষ্টিআকর্ষণ করেছে।

দেশের মানুষ এখন আর কোনো ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড সমর্থন করে না, এ দাবি করে অর্থমন্ত্রী বলেন, এখন আর হরতাল হয় না। দেশের সাধারণ মানুষই তাদের প্রতিহত করে। আর এ কারণেই দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় বিগত অর্থবছরের জিডিপি হার চূড়ান্ত করেছে। তারা বলেছে, গত অর্থবছর এ হার ছিল ৭ দশমিক ১১ শতাংশ। চলতি অর্থবছর জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। আমরা আশা করছি, এটা আরো এক শতাংশ বেড়ে ৭ দশমিক ৩ শতাংশ হবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন গত অর্থবছরের তুলনায় বেড়েছে। প্রতিটি মন্ত্রণালয় তাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সচেষ্ট রয়েছে। আশা করছি, তারা লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সক্ষম হবে। এরপরও কিছু কিছু ক্ষেত্রে সংস্কারের প্রয়োজন আছে। বিশেষ করে, আমাদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে হবে। সরকারের সদিচ্ছা থাকলেও নানা প্রতিকূলতার কারণে অনেক কিছু সম্ভব হয় না। দেশের বিপুল জনগোষ্ঠি। বিশ্বে এমন অনেক দেশ আছে, যেগুলো আমাদের অনেক জেলার চেয়ে ছোট। আমাদের এ ধরনের জেলার সংখ্যা প্রায় ৬০টি।

তিনি আরো বলেন, আমাদের গ্রামগুলোতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। প্রতিটি গ্রামেই যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়েছে। হয়তো সব জায়গায় রাস্তাঘাট ভালো নয়। তবে যোগাযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এখন গ্রামে আর ঝুপরি ঘর দেখা যাবে না। প্রতিটি ঘরই এখন সিআই সিটে নির্মাণ করা হচ্ছে। আর এর পেছনে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

বাংলাদেশের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের জন্য আমাদের কনফিডেন্স বেড়েছে। এখন পদ্মা সেতুসহ অনেক বড় বড় প্রকল্প নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন করার সাহস পাচ্ছি। আমারা এতদিন সহজ শর্তে ছোট ছোট ঋণ নিতাম। এখন আমরা বড় ঋণ নেওয়ার সাহস অর্জন করেছি।

২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।

বৈঠকে প্রবাসীরা বিভিন্ন নির্বাচনে প্রবাসীদের অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানান। প্রবাসীরা দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন।

ঢাকা জার্নাল, অক্টোবর ২৫, ২০১৬।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.