সাংবাদিকদের কল্যাণে ট্রাস্ট করা হবে : প্রধানমন্ত্রী

অক্টোবর ২০, ২০১৬

pm14 hasina4ঢাকা জার্নাল: সাংবাদিকদের কল্যাণে ট্রাস্ট গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকদের জন্য এমন কিছু করতে চাই যেখান থেকে সাংবাদিকদের কল্যাণ হয়। এ জন্য একটা ট্রাস্ট গঠনের চিন্তা করছি।’

বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের ৬২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

এর আগে জাতীয় প্রেসক্লাবের ৩১ তলাবিশিষ্ট ‘বঙ্গবন্ধু মিডিয়া কমপ্লেক্স’ এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি।

পরে বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন বঙ্গবন্ধু নিজেও সাংবাদিকতা করেছেন। দৈনিক ইত্তেহাদ পত্রিকার পূর্ববাংলার প্রতিনিধি ছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী পড়লে সেটা জানতে পারবেন। সেই সূত্রে বঙ্গবন্ধু সাংবাদিক পরিবারেরই একজন। আমি বঙ্গবন্ধুকন্যা হিসেবে নিজেকে সাংবাদিক পরিবারেরই একজন মনে করি।’

তিনি বলেন, ‘ট্রাস্ট গঠনে গণমাধ্যম মালিকদের পক্ষ থেকে তেমন কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। শুধু একজন আমাকে ফোন করে ট্রাস্টে সহযোগিতার আশ্বাস দেন। আমি আশা করব, ট্রাস্ট গঠনে মালিকপক্ষের সবাই এগিয়ে আসবেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গণমাধ্যম পূর্ণ স্বাধীনতা উপভোগ করছে। সাংবাদিকরাও স্বাধীনতা ভোগ করছেন।’

তিনি বলেন, ‘বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, যিনি মালিক হন তিনিই হয়ে যান সম্পাদক। অনেকেই বলেন, সাংবাদিকদের স্বাধীনতা নাই। স্বাধীনতা যদি না থাকে তবে টক শোতে বসে “স্বাধীনতা নাই” এই কথা কীভাবে বলেন?’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘গণমাধ্যম সমাজের দর্পণ। এখন অনলাইন সংবাদ মাধ্যম বেড়েছে। তবে আমরা যারা পুরোনো মানুষ, তারা সকালে দৈনিক পত্রিকা হাতে নিয়ে এক কাপ চা খাই। সংবাদপত্রে খবর পড়ি। এখন তো ডিজিটাল সময়, প্রযুক্তির উন্নয়নে এখন সংবাদও ডিজিটাল হয়েছে। তবে পত্রিকার পাতায় সংবাদ পড়তে ভালো লাগে।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর বাংলাদেশকে ভিক্ষুকের দেশে পরিণত করা হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের সমস্ত চেতনা মুছে ফেলা হয়েছিল। আমরা যে বিজয়ের জাতি, সেটা বলাও ভয়ের ছিল। আমাকেও রিফিউজি জীবন কাটাতে হয়েছে ছয় বছর। এরপর আমি যখন দেশে এসেছি, গ্রামগঞ্জে ঘুরেছি তখন আমার সঙ্গে অনেক সাংবাদিকও গিয়েছিলেন। তারা জানেন বাংলাদেশ কোন অবস্থায় ছিল! সেখান থেকে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ এখন আর পিছিয়ে পড়া জাতি নয়। বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গণতন্ত্রের নীতিমালা আছে, সাংবাদিকতারও নীতিমালা আছে। এই দুটো মেনে চললে কোনো সমস্যাই থাকে না- এটা বলেছিলেন বঙ্গবন্ধু। সবাইকে নীতি মেনে সাংবাদিকতা করতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘সম্পদ বাংলাদেশের, সেটা তুলবে এক দেশ, বিক্রি করা হবে আরেক দেশের কাছে! এটাতে রাজি হয়নি বলেই ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে পারিনি। দেশকে বিক্রি করে, দেশের ক্ষতি করে শেখ হাসিনা রাজনীতি করতে চায় না। দেশের সম্পদ অন্যের হাতে তুলে দিয়ে রাজনীতি করিনি বলেই ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে পারিনি।’

বক্তব্যের এক পর্যায়ে মজা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাকে দিয়ে আজকে ৩১ তলা বঙ্গবন্ধু মিডিয়া কমপ্লেক্সের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করিয়েছেন, এখন আবার বলছেন টাকা দিতে। এখানে তো অনেকেই উপস্থিত আছেন, যারা একাই এমন একটি কমপ্লেক্স করে দিতে পারেন।’

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম চৌধুরী, সম্পাদক পরিষদের সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক গোলাম সারওয়ার।

এ সময় অনুষ্ঠানের সামনের সারিতে উপবিষ্ট ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুসহ মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য, সরকারি আমলা এবং বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল।

ঢাকা জার্নাল,অেক্টোবর ২০, ২০১৬।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.