ফেসবুকে সাঈদ রিমন, অনণ্য উদাহরণ

অক্টোবর ১২, ২০১৬

%e2%80%8dsayeef-rimonঢাকা জার্নাল : সাঈদ রিমন। বরগুনার একজন মেধাবী তরুণ। নটরডেম কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক। আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতোকত্তর। পেশায় একজন বস্ত্র প্রকৌশলী।

হাস্যজ্জ্বল মেধাবী এ তরুণকে প্রায়ই দেখা যায় ছিনতাইকারী, মাস্তান, মলম পার্টির দলনেতা কিংবা মাদকাসক্তের বেশে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জনপদে একক অভিনয়ের শত শত স্থির চিত্রে তাকে দেখা যায় কখনও নিরীহ ছাত্র, কখনও দরিদ্র কৃষক, কখনও সুপারীর ব্যাপারী আবার কখনওবা টাউট বাটপারের ভূমিকায়। আর এসবই করেন তিনি জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে।

গত পাঁচ বছর ধরে শখের বশে ফেসবুকে রিমন এ কাজ করে যাচ্ছেন নিরবচ্ছিন্নভাবে। মাদকের মরন ছোবল, যাত্রাপথে মলম পার্টির খপ্পর, ট্রাফিক আইন মেনে চলা, সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য, শ্রমিক নিপিড়ন, শিশু নির্যাতনসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার পেশাজীবীর মর্যাদা ইত্যাদি বিষয়ের ওপর সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একক অভিনীত শতাধিক ছবি রয়েছে রিমনের ওয়ালে। রিমনের এসব ছবি নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছেন বিল বোর্ড। জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন লাইক পেজে ব্যবহৃত হচ্ছে রিমনের এসব ছবি। সম্প্রতি রিমনের এসব ছবি নিয়ে বিল বোর্ড নির্মাণ করেছেন নারায়নগঞ্জ এবং মুন্সিগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার পুলিশ বিভাগ।

রিমনের এসব স্থির চিত্রের বিষয়ে বরগুনার পুলিশ সুপার বিজয় বসাক বলেন, ‘রিমনের একক অভিনীত প্রতিটি স্থির চিত্র বিশেষ বিশেষ বার্তা বহন করে। আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে রিমনের ছবি নিয়ে বরগুনায়ও বিল বোর্ড নির্মাণের পরিকল্পণা রয়েছে জেলা পুলিশের।’

খেলাঘর কেন্দ্রিয় সংসদের প্রেসিডিয়াম সদস্য চিত্তরঞ্জন শীল বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সাইদ রিমন তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুককে একটি মহৎ উদ্দেশে ব্যবহার করে যাচ্ছেন। রিমনের কাছ থেকে নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের শেখার আছে। অপ্রাসঙ্গিক লেখালেখি, বিব্রতকর তর্ক-বিতর্ক আর অনাকাঙ্খিত ছবি পোস্ট না করে সৃজনশীল উদ্যোগের মধ্যে দিয়ে ফেসবুককে কতটা জনকল্যাণে ব্যবহার করা যায় তা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন রিমন। রিমনের অভিনয় শৈলী এবং অভিব্যক্তির প্রসংশাও করেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব চিত্তরঞ্জন শীল।

এ বিষয়ে সাইদ রিমনের সাথে আলোচনার সময় তিনি বলেন, ছোট বেলা থেকেই অভিনয়ের প্রতি আসক্তি ছিলো ভীষণ। একা একা অভিনয় করেছেন তিনি। ভিডিও চিত্র ধারণ ও ভিডিও সম্পাদনার কাজে অভিজ্ঞ বরগুনার বন্ধু রমিজ জাবের টিংকুর সহযোগিতায় জনসচেতনতা বাড়াতে একাধিক রম্য নাটক বানিয়ে বরগুনা শহরের স্থানীয় ক্যাবল টিভির মাধ্যমে তা প্রচার করে ব্যপক প্রসংশাও কুড়িয়েছেন তিনি। ভাল কোন সুযোগ পেলে নিজের অভিনয় শক্তি দেখাতে চান রিমন।ww.facebook.com/rimon.sayeed এই আইডিতে ক্লিক করে দেখা যাবে রিমনের একক অভিনীত স্থিরচিত্রগুলো।

রিমনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২০০৭ সালে অসুস্থতাজনিত কারণে মৃত্যু হয় পিতা আঃ খালেকের। রিমন তখন নটরডেম কলেজ থেকে সবে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেছেন। এরপর মা সুলতানা রাজিয়ার প্রচেষ্টায় চলে রিমন ও তার ছোট বোন রাবেয়ার লেখাপড়া। লেখাপড়া শেষ করে রিমন এখন একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে বস্ত্র প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করছেন। ছোট বোন রাবেয়া বরগুনা সরকারী কলেজের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষার্থী। চাকরির সুবাদে এখন ঢাকায় থাকেন রিমন। রিমনের মা সুলতানা রাজিয়া বরগুনার স্বাস্থ্য বিভাগের একজন স্বাস্থ্য সহকারী। মা সুলতানা রাজিয়া এবং ছোট বোন রাবেয়া বসরী থাকেন বরগুনার আমতলার পার এলাকার নিজ বাড়ি ‘রিমন’ মঞ্জিলে। সূত্র- কালের কণ্ঠ।

ঢাকা জার্নাল, অক্টোবর ১২, ২০১৬।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.