খেলনা নামে আসল পিস্তল আমদানি, জড়িত তিন জন গ্রেফতার হয়নি

অক্টোবর ৪, ২০১৬
pistolঢাকা জার্নাল : বিদেশের নাগরিকত্ব নিয়ে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট খেলনা নামে বিদেশ থেকে আসল পিস্তল নিয়ে আসছে। বিমানবন্দর থেকে পিস্তলসহ গ্রেফতারকৃত দুই আসামীর স্বীকারোক্তিতে পাওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। ওই সিন্ডিকেট খেলনার নামে শুধু অস্ত্র নয়, ড্রোন ও রোবটও নিয়ে আসছে বলে তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে। যা দেশের নিরাপত্তার জন্য বড় ধরণের হুমকি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, গত ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নয়টি ‘আগ্নেয়াস্ত্র’সহ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জার্মান দুই নাগরিক মোহাম্মদ মনির বেগ আলী ও আনিসুল ইসলাম তালুকদারকে আটক করা হয়।
বিমান বন্দরের গ্রীণ চ্যানেল থেকে তাদের আটক করে শুল্ক কর্তৃপ। জার্মান পাসপোর্টধারী ওই দুইজনকে আটকের পর তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। রিমান্ডে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দাসংস্থাগুলো নিশ্চিত হয়েছে, তাদের আগে আরো দুই জার্মান পাসপোর্টধারী তানভীর হাসান ছোট মনি ও সাবু একই ধরণের আরেকটি চালান নিয়ে দেশে আসে। এই দুইজনসহ টাঙ্গাইলের জামিলুর রহমান মিরন ওই দুইজনকে নির্ধারিত স্থানে পৌছে দেওয়ার জন্য বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলো।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, আটক আসামীদের দেওয়া তথ্য ইতোমধ্যে যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। ওই সিন্ডিকেটের চার সদস্যের বাড়ি টাঙ্গাইলে। হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামী হওয়া তারা পালিয়ে দেশের বাইরে চলে যায়। এরপর কৌশলে জার্মানীর নাগরিকত্ব নিয়েছে। এখন আন্তর্জাতিক অস্ত্র চোরাচালান চক্রের সঙ্গে মিলিত হয়ে দেশে অস্ত্র আমদানি করছে। তাদের বিরুদ্ধে জঙ্গি সম্পৃক্ততারও তথ্য পাওয়া গেছে।
সূত্রগুলো আরো জানায়, সিন্ডিকেটের সদস্য ছোট মনি টাঙ্গাইলের ছাত্রলীগ নেতা সাইফুল হত্যা মামলার আসামী। তার বিরুদ্ধে পুলিশের উপর বোমা হামলা, যুবলীগ নেতা নূরে আলম হত্যা চেষ্টা এবং যুবলীগ নেতা মামুন ও মন্টু বাড়ী ভাংচুর মামলার অভিয়োগ রয়েছে। সিন্ডিকেটের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধেও এধরণের নানা সন্ত্রাসী তৎপরতার অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে আটককৃত পিস্তলগুলো প্রাথমিক পরীার পর গোয়েন্দারা বলছে, বিভিন্নভাবে এগুলো ব্যবহার করা যাবে। পিস্তলের ব্যারেল পরিবর্তন করলেই এগুলো আসল পিস্তলে রূপ পাবে। বুলেট ব্যবহার করে প্রাণহানি করা সম্ভব হবে এই অস্ত্র দিয়ে। এছাড়া গ্যাসও ব্যবহার করা যাবে। মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে এসব মালামাল ঢাকায় আনা হয়েছে। দেশে আসার পর এসব অস্ত্র সহজেই জঙ্গিদের হাতে চলে যায় একাধিক নিরাপত্তা সংস্থা দাবি করেছে।
এবিষয়ে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মঈনুল খান সাংবাদিকদরে বলেন, দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে যেটা সন্দেহ হবে সেটাই তল্লাশি করে দেখা হবে। কাউকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। যেসব খেলনা পিস্তল আনা হয়েছে, সেসবের অনুমতি নেই। মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে ওই মালামালগুলো আমদানি করায় আইন অনুযায়ী আসামীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা জার্নাল, অক্টোবর ০৪, ২০১৬।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.