ফের সক্রিয় লক্ষিপুরের আন্তজেলা ডাকাত সর্দার বাবলু ও তার বাহিনী

সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৬

kaji-babluইমরান আলী : ২০১২ সালের ২৫ অক্টোবর র‌্যাপিড অ্যকশন ব্যাটালিয়ন র‌্যাব-৭ এর হাতে আন্তজেলা ডাকাত দলের ১০ সদস্য আটক হয়েছিল। ওই দলের প্রধান হিসেবে আটক হন কাজি বাবলু। এরপর কেটে গেছে ৪ বছর। কিন্তু ডাকাত বাবলুর দৌরাত্ম কমেনি। বরং এ ৪ বছরে নতুন করে বাহিনী গঠন করে এলাকায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই চাঁবাবাজি, দখলবাজিসহ এলাকায় এক মূর্তিমান আতঙ্ক হিসেবে নিজেকে আবির্ভুত করেছেন। তার দৌরাত্মে এলাকায় সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত ভীত সন্ত্রস্থ।  স্থানীয় কিছু নেতাদের আশির্বাদে লক্ষিপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানার এলাকার সাধারণ মানুষের নিকট ডাকাত বাবলু এক আতঙ্কের নাম। আর তাকে গ্রেফতারের দাবিতে এলাকার লোকজন পুলিশ সদর দফতর, লক্ষিপুর জেলার পুলিশ সুপার ও র‌্যাবের সহায়তা কামনা করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কাজি বাবুল ওরফে বাবলু ডাকাতের বাড়ি চন্দ্রগঞ্জ থানার দেওপাড়া গ্রামে। তার পিতার নাম সিরাজুল ইসলাম। ৪ ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট বাবলু। পরিবারটি সম্ভ্রান্ত হলে ছোট বেলা থেকে বাবলু এলাকায় ছিঁচকে চোর হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠে। এই ছিঁচকে চোর এক সময় ডাকাতে পরিনত হয়। শুধু এলাকায় নয় লক্ষিপুর, নোয়াখালি, চাঁদপুর এবং ফেনির মহাসড়ক এবং বাসা বাড়িতে ডাকাত বাহিনীর প্রধান হিসেবে তার নাম ছড়িয়ে পড়ে। এরই মধ্যে র‌্যাব ২৪ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে ঢাকা চট্রগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার বিশ্বরোড রেলক্রসিং এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতির সময় বাবলুসহ তার ১০ সহযোগীকে আটক করে। এ সময় দেশি বিদেশি পিস্তল, গুলি এবং দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। বাবলু আটকের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এলাকার মানুষের মাঝে স্বস্থি ফিরে আসে। কিন্তু জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর আবারো সে এলাকায় ফিরে আসে। এলাকায় এসেই আবারো সে তার বাহিনী গঠনের কাজ শুরু করে।
স্থানীয় লোকজন জানান, বাবলু এখন এলাকায় বাহিনী গঠন করেছে। তার এ বাহিনী এলাকায় এমন কোন অপরাধ নাই যা তারা করছেনা। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, বাস ডাকাতি, লোকজনের জায়গা দখল থেকে শুরু করে সবকিছুই ডাকাত বাবলুর বাহিনী করে যাচ্ছে। তার দৌরাত্মে এলাকার লোকজন ভীত সন্ত্রস্থ হয়ে পড়েছে। ভয়ে কেউ মুখও খুলতে চায়না।
লোকজন জানান, প্রকাশ্য দিনের বেলাতেও চাঁদাবাজি করে তার বাহিনীর সদস্যরা। বিশেষ চন্দ্রগঞ্জ বাজারের প্রত্যেকটি দোকান থেকে দৈনিক চাঁদা উঠায় তার বাহিনীর সদস্যরা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, শিবিরের দুই নেতা কুদ্দুস ও দেলোয়ার চন্দ্রগঞ্জ উপজেলায় একতা বহুমুখি সমবায় সমিতি নামক একটি সংগঠন করে। সমবায় অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধনও নেয় তারা। সমবায় সমিতিকে সামনে রেখে তারা মার্কেট তৈরী করে। লটারির মাধ্যমে দোকান বরাদ্দের নামে কোটি কোটি টাকা আতœসাৎ করে। অভিযোগ রয়েছে এ মার্কেটের পেছনেও ডাকাত বাবলুর একটি হাত রয়েছে। যার কারণে টাকা দিয়েও দোকান বরাদ্দ না পেয়েও ভয়ে কিছু বলতে ভুক্তভোগী কিছু ব্যবসায়ী। কিছু ব্যবসায়ী দোকান বরাদ্দের অনিয়মের অভিযোগ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। যা বর্তমান আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
স্থানীয় শরিফুল ইসলাম নামের এক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন, ডাকাত বাবলু এখন এলাকায় একটি আতঙ্কের নাম। আমরা তার দাপটে সর্বত্রই আতঙ্কে থাকি। এলাকায় যে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি হয় তা সবই তার লোকেরা করে। আমরা ভয়ে কিছু বলতে পারিনা।
তিনি বলেন, ডাকাত বাবলুর সহযোগীরা প্রেসক্লাবের জায়গা পর্যন্ত দখল কওে নিয়েছে। এক সাংবাদিককে হত্যার হুমকি দিয়ে এলাকা ছাড়া করেছে। যেখানে সাংবাদিককে এলাকা ছাড়া করেছে সেখানে আমরা সাধারণ মানুষ অসহায়।
তিনি আরও বলেন, তার পেছনে অনেক নেতাও রয়েছে। এ কারণে সে এখন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
এ বিষয়ে লক্ষিপুর জেলার পুলিশ সুপার মাহতাব উদ্দীন বলেন, এলাকার চুরি, ডাকাতি, চিনতাইসহ সকল অপরাধ দমনে স্থানীয় থানা পুলিশকে নির্দেশ দেয়া রয়েছে। আমরা এ বিষয়ে খেঁজ খবর নিচ্ছি।  প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা জার্নাল, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৬।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.