শেখ হাসিনার ৭০তম জন্মদিন বুধবার

সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৬

hasina-sঢাকা জার্নাল: আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭০তম জন্মদিন বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর)। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় মেয়ে শেখ হাসিনা ১৯৪৭ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন।

রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হিসেবে শেখ হাসিনা ছাত্রজীবন থেকেই প্রত্যক্ষ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় এবং ইডেন কলেজের নির্বাচিত সহ সভাপতি (ভিপি) ছিলেন। ছাত্রলীগ নেত্রী হিসেবে ১১ দফা আন্দোলন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন শেখ হাসিনা।
কারাগারে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ ও যোগাযোগের সময় অনেক রাজনৈতিক দায়িত্ব পালন করেছেন শেখ হাসিনা। দলের খবর বঙ্গবন্ধুর কাছে এবং বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনা পৌঁছে দিয়েছেন নেতাদের কাছে।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর নির্বাসিত শেখ হাসিনার ওপর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের দায়িত্ব অর্পিত হয়। তার সফল দুরদর্শী নেতৃত্বের ফলেই আওয়ামী লীগ তিন তিনবার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় রয়েছে।

এদিকে গত কয়েক বছরের মতো এবারের জন্মদিনেও শেখ হাসিনা দেশের বাইরে রয়েছেন। তিনি নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদান শেষে যুক্তরাষ্ট্রেই অবস্থান করছেন।

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয় বার দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০০৯ সাল থেকে প্রতি বছরই শেখ হাসিনার জন্মদিন কাটে দেশের বাইরে। প্রতি বছরই সেপ্টেম্বরের এ নির্ধারিত সময়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন তিনি।
শেখ হাসিনার শিক্ষা জীবন শুরু হয় টুঙ্গীপাড়ার এক পাঠশালায়। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে শেখ মুজিবুর রহমান যুক্তফ্রণ্ট থেকে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য (এমপিএ) নির্বাচিত হওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা ঢাকায় বসবাস শুরু করেন। ১৯৫৬ সালে শেখ হাসিনা ভর্তি হন টিকাটুলির নারীশিক্ষা মন্দির বালিকা বিদ্যালয়ে। ১৯৬৫ সালে আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। ১৯৬৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন ঢাকার বকশীবাজারের ইন্টারমিডিয়েট গভর্নমেন্ট গার্লস কলেজ (বর্তমান বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়) থেকে। তিনি ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।

কারাবন্দি বাবা বঙ্গবন্ধুর আগ্রহে ১৯৬৮ সালে পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন শেখ হাসিনা।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতক চক্রের হাতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নিহত হওয়ার সময় শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা জার্মানিতে ছিলেন। এরপর জার্মানি থেকে ভারতে এসে নির্বাসিত জীবন যাপন করতে থাকেন তারা। ১৯৮১ সালের ১৭ মে ভারত থেকে দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা।
দেশে ফেরার আগেই ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয় তাকে। আওয়ামী লীগের দায়িত্ব নিয়ে শুরু হয় শেখ হাসিনার আরেক চ্যালেঞ্জিং জীবন।

অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে তাকে আজকের অবস্থানে আসতে হয়েছে।
আন্দোলন-সংগ্রামের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে বার বার তিনি মৃত্যুর মুখোমুখি হন। তার ওপরে গুলি, বোমা ও গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে তাকে হত্যার জন্য গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। ২০০৭ সালে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তিনি কারা নির্যাতন ভোগ করেন।

টানা ৩৫ বছর আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন শেখ হাসিনা। এ সময়কালে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সামরিক স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা হয়ে ওঠেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।

বর্তমানে তিনি তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া তিনবার তিনি বিরোধী দলের নেতা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

রাষ্ট্র পরিচালনায় সফলতার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে নানা পুরস্কার ও সম্মানসুচক ডিগ্রিতে ভুষিত হন শেখ হাসিনা। বিভিন্ন দেশের ১২টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডি-লিট উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন তিনি।

রাজনৈতিক কর্মব্যস্ততার মাঝেও বেশ কিছু গ্রন্থ রচনা করেছেন শেখ হাসিনা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- সামরিকতন্ত্র বনাম গণতন্ত্র, ওরা টোকাই কেন, বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম ইত্যাদি।

ঢাকা জার্নাল, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৬।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.