ভারতে জেএমবির ৬ জঙ্গি গ্রেপ্তার

সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৬

indiaঢাকা জার্নাল: ভারতে নিষিদ্ধঘোষিত জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) ছয় জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছে সে দেশের পুলিশ।

এদের মধ্যে তিনজন বাংলাদেশি ও তিনজন ভারতীয়। আসাম ও পশ্চিমবঙ্গের একাধিক স্থান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে সোমবার জানিয়েছে কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)।

এসটিএফ প্রধান বিশাল গর্গ জানিয়েছেন,  ছয় জনের মধ্যে পাঁচজনের নাম ইতিমধ্যে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার (এএনআই) দেওয়া খাগড়াগড় মামলার চার্জশিটে ছিল।

গ্রেফতাকরকৃতরা হলেন- আনোয়ার হোসেন ফারুক ওরফে ইনাম ওরফে কালুভাই, জাহিদুল শেখ ওরফে জাফর ওরফে জাবিরুল, মোহাম্মদ রফিক ওরফে রুবেল ওরফে পিছি, মাওলানা ইউসুফ ওরফে বক্কর ওরফে আবু খেতাব, শাহিদুল ওরফে সূর্য ওরফে শামিম এবং আব্দুল কালাম ওরফে কলিম।

লালবাজারে সাংবাদিক সম্মেলনে গ্রেফতারকৃতদের সোমবার হাজির করে এসটিএফ। সংস্থার  প্রধান জানান, দু’দিন আগে আসামের কাছাড় থেকে একটা জাল নোটের মামলায় কলকাতা এসটিএফ জাবিরুলকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়।

জাবিরুলকে লাগাতার জেরা করে জানা যায়, সে জেএমবির সঙ্গে যুক্ত। শুধু তাই নয়, তার কাছ থেকে বেশ কয়েকজন জেএমবি জঙ্গির খবর জানতে পারে এসটিএফ। সেই সূত্র ধরে রোববার নিউ কোচবিহার স্টেশন থেকে কালামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পুলিশের দাবি, কালাম বাংলাদেশ থেকে আসাম হয়ে পশ্চিমবঙ্গে ঢোকার চেষ্টায় ছিল। বাংলাদেশ থেকে তাকে কাছাড়ে সংগঠনের দায়িত্ব সামলাতে পাঠানো হয়েছিল।

এরপর উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ-বাগদা রোডের উপর বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী একটি জায়গা থেকে ইনাম এবং রফিককে গ্রেপ্তার করা হয়। ইনাম পশ্চিমবঙ্গে জেএমবি ইউনিটের প্রধান। তার বাড়ি বাংলাদেশের জামালপুরে। রফিকের বাড়িও ওই একই জায়গায়। সে ইম্প্রোভাইজ্ড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) তৈরিতে পারদর্শী। বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গে যাওয়া জেএমবি সদস্যদের থাকার ব্যবস্থা করে দিত রফিক।

এসটিএফ প্রধান জানিয়েছেন, এর পরে ওই জেলারই বসিরহাটের নতুন বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ইউসুফ এবং শাহিদুলকে। ইউসুফের বাড়ি বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটে। তার সন্ধান দিতে পারলে ১০ লাখ টাকা পুরস্কারের কথা ঘোষণা করেছিল এনআইএ। এসটিএফের দাবি, শাহিদুল উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রধান হিসেবে কাজ করত। এ দেশে বিভিন্ন নাশকতামূলক ছকের মূল পরিকল্পকও সে। তার বাড়ি আসামের বরপেটায়।

গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে পাওয়া গিয়েছে প্রচুর বিস্ফোরক। সঙ্গে পাওয়া গেছে নাশকতার সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন কাগজপত্র, বেশ কয়েকটি মোবাইল ফোন, প্রায় দু’কেজি সাদা বিস্ফোরক পাউডার, বিয়ারিং-বল, তার কাটা যায় এমন জিনিস এবং ব্যাটারি।

রফিকের কাছে কেমিক্যাল কমপাউন্ডের একটি বই পাওয়া গিয়েছে। ইউসুফ ও ইনামের কাছে পাওয়া গিয়েছে বিস্ফোরক। ইনামের কাছে একটা সাংগঠনিক ছকও পাওয়া গিয়েছে। রফিকের কাছে বাংলাদেশি ট্রেড লাইসেন্সও মিলেছে।

এসটিএফের দাবি, গ্রেপ্তারকৃতরা প্রত্যেকেই খাগড়াগড়-কাণ্ডের পরে উত্তর-পূর্ব এবং দক্ষিণ ভারতে পালিয়ে গিয়েছিল।

জেরার মুখে গ্রেপ্তারকৃতরা স্বীকার করেছে, তারা একটি বড়সড় নাশকতার ছক কষেছিল। তবে, সেই নাশকতা কলকাতায় করার নাকি কোনো উদ্দেশ্য তাদের ছিল না। দক্ষিণ বা উত্তর-পূর্ব ভারতের কোনও জায়গাকে তারা বেছে নিত বলে জানিয়েছে তারা।

এসটিএফ প্রধান জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারকৃতরা সাংকেতিক ভাযায় নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখত। সেই ভাষার অর্থ খুঁজে বার করে ওদের ধরা হয়েছে।সূত্র: আনন্দবাজার

ঢাকা জার্নাল, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৬।

 

 

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.