নূর চৌধুরীর বহিষ্কারের সত্যতা নেই: আইনমন্ত্রী

সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৬

anisul2ঢাকা জার্নাল: কানাডায় বসবাসরত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি নূর চৌধুরীর বহিষ্কারের খবরের কোনো সত্যতা নেই বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের পত্রিকাগুলোতে এ ব্যাপারে একটা খবর পাওয়ার পরে আমাকে নিউইয়র্ক থেকে পররষ্ট্রমন্ত্রী ফোন করেছিলেন। আমাদের দু’জনের আলোচনার প্রেক্ষিতে খবরের সত্যতা কতোটুকু- তা জানতে কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনারের সঙ্গে যোগাযোগ করি’।

‘হাইকমিশনার আমাদেরকে জানান যে, এ সংবাদটি সম্পূর্ণ অসত্য, এটার কোনো ভিত্তি নেই। তিনি তার জায়গা থেকে কনফার্ম করেন, এটার কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি’।

আইনমন্ত্রী বলেন, তিনি (হাইকমিশনার) শুধু যে ওখানকার পত্রিকা বা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন তা না, নূর চৌধুরীর আইনজীবীর সঙ্গেও যোগাযোগ করেছেন। কানাডায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ ডেস্কের দায়িত্বে যিনি থাকেন, তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, এ সংবাদের কোনো সত্যতা নেই।

অন্য প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী যারা দণ্ডপ্রাপ্ত, তাদেরকে আনার জন্য আমরা সর্বোত চেষ্টা চালিয়ে যাবো, যতোক্ষণ পর্যন্ত আমরা তাদেরকে না আনতে পারি। এটা বেইজলাইন, এটার ব্যাপারে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না’।

বঙ্গবন্ধুর পালিয়ে থাকা খুনি দু’জনের ঠিকানা-অবস্থান আমরা জানি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘একজন নূর চৌধুরী, অপরজন রাশেদ চৌধুরী। নূর চৌধুরীর বিষয়ে কানাডা সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা হবে, এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে কথা হবে। আমরা নূর চৌধুরীকে ফেরত আনার জন্য আলোচনা করবো। আমার বিশ্বাস, এবারও আলোচনা হয়েছে। আমি যতোটুকু জানি, আলোচনা ফলপ্রসু হয়েছে। তার মানে হচ্ছে- আমরা আনার যে প্রক্রিয়া চালাচ্ছি, সেটা একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে এবং সে প্রক্রিয়া চলবে’।

নূর চৌধুরীকে ফেরত আনার আবেদনের ব্যাপারে মন্ত্রী বলেন, ‘সেখানকার আদালতের খবর যেটা জানি, নূর চৌধুরীকে ফেরত আনার ব্যাপারে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে, কানাডার সংবিধানে বলা আছে- মৃত্যুদণ্ডাদেশ যেসব দেশে আছে সেখানকার কোনো আসামিকে যেখানে মৃত্যুদণ্ড হতে পারে, সেখানে কোনো আসামিকে ফেরত পাঠানো যাবে না’।

‘এই একটা পয়েন্টের ওপরেই কিন্তু নূর চৌধুরী সেখানে এখনও টিকে আছেন। এ পয়েন্টের সুরাহা হলেই নূর চৌধুরীকে বাংলাদেশে আনা যাবে, ফেরত পাঠানো যাবে কি যাবে না সেটার সিদ্ধান্ত হবে’।

রাশেদ চৌধুরী সম্পর্কে আইনমন্ত্রী বলেন, কিছুদিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের জন কেরি এসেছিলেন। সেখানেও এ বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করেছিলাম এবং আমাদেরকে তিনি বলেছিলেন, তিনি দেশে ফিরে খোঁজ-খবর নিয়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন’।

‘২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত আদালতের রায় থাকা সত্ত্বেও তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি আসামিদের আনার জন্য’।

আনিসুল হক বলেন, ‘এখন সেই বরফ গলেছে, আমরা তাদেরকে আনার জন্য সর্বতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা বেআইনি প্রক্রিয়ায় তাদের আনতে চাই না। আইনি প্রক্রিয়ায় যেহেতু আনতে চাই, সেহেতু সরকারের সঙ্গে আমাদের আলাপ-আলোচনা করতে হবে। কারণ, তারা সেখানে অবৈধভাবে বসবাস করছেন এটা ঠিক না, তারা রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকার জন্য দরখাস্ত করেছেন। যেই মুহূর্তে সেই দরখাস্ত করা হয়, একটা আদালতের মাধ্যমে (ইমিগ্রেশন কোর্ট) দরখাস্ত করেছেন। সেই আদালতের মাধ্যমে সেটা প্রক্রিয়া হয়। তাদের আবেদনগুলো অনেক আগের ছিল। সেগুলো প্রক্রিয়াকরণ হয়ে অনেকখানি এগিয়ে গেছে, কিছু জায়গায় একটা পর্যায়ে এসে নিষ্পত্তিও হয়েছে। সে ক্ষেত্রে আগের সরকার যেহেতু কোনো আগ্রহ দেখায়নি, আমরা আগ্রহ দেখিয়েছি, তখন থেকে তারা এটার গুরুত্ব দেওয়া শুরু করেছে। তাদের ফেরত আনার জন্য এটা অনেকটা এগিয়ে গেছে’।

ঢাকা জার্নাল, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৬।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.