রাজধানীতে কমেছে পশুর দাম

সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৬

cowঢাকা জার্নাল: রাজধানীর পশুর হাটগুলোতে ঈদের আগের দিন সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) গরুর দাম কমেছে। একদিনের ব্যবধানে ছোট গরুপ্রতি দাম কমেছে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা। অন্যদিকে বড় গরুর ক্ষেত্রে দাম কমেছে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা।

গত কয়েকদিন ধরে রাজধানীর পশুর হাটগুলোতে দেশি গরুর আধিপত্যের কারণে দাম অনেক চড়া ছিল। তবে ভারতীয় গরু বাজারে প্রবেশ করা মাত্রই ক্রেতারা বেশি দামে দেশি গরু কিনতে আগ্রহ হারাচ্ছেন। এ কারণে বাধ্য হয়েই দেশি গরুর মালিক ও পাইকাররা একটু নমনীয় হচ্ছেন।

রাজধানীর বিভিন্ন হাট ঘুরে দেখা যায়, ছোট গরুর ক্ষেত্রে রোববার ক্রেতারা যে গরুর দাম হাঁকিয়েছেন ৬০ হাজার টাকা, সে গরুর দাম আজ পাঁচ থেকে ১০ হাজার টাকা কম। অন্যদিকে রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) বড় গরুর ক্ষেত্রে দাম দুই লাখ টাকা- সে গরুর আজ দাম কমেছে ৪০ হাজার টাকা।

বিক্রেতারা অভিযোগ করছেন, শেষ মূহুর্তে ভারতীয় গরুর বাজারে আসায় দেশি গরুর দাম কমেছে। এ জন্য অনেক বিক্রেতারা তাদের পুঁজিও তুলতে পারবেন না।

গাবতলী পশুর হাটে চুয়াডাঙ্গা থেকে ৯টি গরু নিয়ে ঢাকায় আসেন মো. শাহজাহান। তিনি বলেন, ৯টি গরুর মধ্যে ৫টি ছোট ও মাঝারি আকারের গরু বিক্রি হয়ে গেছে। বাকি আছে বড় চারটি গরু। কিন্তু ক্রেতারা এগুলোর যে দাম করছেন তাতে আমার পথে বসা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।

তিনি বলেন, রোববার আমার সাদা রঙয়ের একটি বড় গরুর সর্বোচ্চ দাম উঠেছিল এক লাখ ৭০ হাজার টাকা। আজ এই গরুর সর্বোচ্চ দাম উঠেছে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা। একদিনের ব্যবধানে ৪০ হাজার টাকা কম। যা আমার কেনা দামও না।

কমলাপুর পশুর হাটে খিলগাঁওয়ের মোশাররফ হোসেন বলেন, অন্যান্য দিনের চেয়ে গুরুর দাম একটু কম মনে হচ্ছে। গতকাল যে আকৃতির গরু ৭০ হাজারেও কিনতে পারিনি, সে আকারের গরুই আজ ৬৫ হাজার টাকা দিয়ে কিনলাম। বাজেটের মধ্যেই কম দামে গরু কিনতে পেরেছি।

হাজারীবাগ হাটে বিক্রেতা সুমন মিয়া জানান, আজ ভোরে দুটি গরু দিয়ে হাজারীবাগে এসেছি। বাজার বিবেচনা করে প্রতিটি গরু এক লাখ ১০ হাজার টাকা করে দাবি করছি। কিন্তু কোনো ক্রেতাই ৭০ হাজার টাকার ওপরে উঠতে চায় না।

তিনি বলেন, শুনেছি ঢাকার পশুর হাটগুলোতে ভারতের গরু ঢুকেছে। এজন্য দাম পড়ে গেছে। যদি ন্যয্য দাম না পাই তাহলে মাথায় হাত দিতে হবে।

এদিকে দুপুরের দিকে গাবতলী, কমলাপুর, হাজারীবাগসহ রাজধানীর বিভিন্ন হাটে সকালের চেয়ে লোক সমাগম কম দেখা যায়। ইজারাদাররা মনে করছেন, অনেকে তাদের কাঙ্খিত গরু কিনতে পেরে বাসায় চলে গেছেন। যারা বাকি আছেন তারা সন্ধ্যার পর থেকে আসতে পারেন।

বেশি দামের গরুতে দামই উঠছে না:  বাজারে বেশি দামের (৮/১০ লাখের বেশি) যেসব গরু আছে সেসব গরুতে ক্রেতারা দামই হাঁকাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

চুয়াডাঙ্গা থেকে আসা শামিম আহমেদ জানান, ২০ লাখ টাকা দামের একটি গরুতে সোমবার বিকাল পর্যন্ত দাম উঠেছে মাত্র সাত লাখ ২০ হাজার টাকা।

কুষ্টিয়া থেকে আসা ইউসুফ মিয়া জানান, ২৫ মনের বেশি ওজনের একটি গরু নিয়ে তিনি গতকাল রাতে গাবতলী পশুর হাটে আসেন। তার কেনা দাম সাত লাখ টাকা। বাজারে দাম চাচ্ছেন ১২ লাখ টাকা। অথচ ক্রেতারা এর দাম তিন লাখ টাকার বেশি বলতে চাচ্ছেন না।

এদিকে চট্টগ্রাম থেকে গয়াল প্রজাতির চারটি গরু নিয়ে রাজধানীতে এসেছেন এক বিক্রেতা। তিনি বলছেন, প্রতিটি গরুর মূল্য হিসেবে ক্রেতার কাছে দেড় লাখ টাকা করে দাম বলছি। কিন্তু কোনো ক্রেতাই এর বিপরীতে দাম বলেননি।

বৃষ্টিতে ভোগান্তি : কোরবানির পশু কেনার শেষদিন  আজ। তাই বাজারে মানুষের ভিড়ও বেশি। তবে সকাল থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির কারণে পশুর হাটের প্রবেশ পথ থেকে শুরু করে ভেতরের রাস্তায় কাদা তৈরি হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ক্রেতারা। গাবতলী, কমলাপুর, হাজারীবাগ হাটে দেখা যায়, কাদার কারণে অনেক ক্রেতা বাজারে প্রবেশ করছেন না। আবার যেসব পাইকাররা গরু নিয়ে এখনও বাজারে আসছেন তাদেরও ভেতরে যেতে ভোগান্তি হচ্ছে।

ঢাকা জার্নাল, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৬।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.