শোলাকিয়ার নিরাপত্তায় বিজিবি, ছাতা-ব্যাগ নিষিদ্ধ

সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৬

%e2%80%8dsholakiaঢাকা জার্নাল : কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় এবার ঈদুল আজহার জামাত নির্বিঘ্ন করতে র‍্যাব-পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েনসহ তিন স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করতে আসা মুসল্লিদের ছাতা, ব্যাগ এবং মোটা জায়নামাজ না আনতে বলা হয়েছে।

গত ঈদুল ফিতরের দিন সকালে শোলাকিয়া ঈদগাহের অদূরে আজিম উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের পাশে তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের ওপর হামলা চালায় জঙ্গিরা। ওই ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য, স্থানীয় এক গৃহবধূ ও গুলিতে এক জঙ্গি নিহত হয়। এবারের নিরাপত্তাব্যবস্থা আর জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।

এবার শোলাকিয়ায় ঈদুল আজহার জামাত শুরু হবে সকাল নয়টায়। জামাতে ইমামতি করবেন মাওলানা ফরিদ উদ্দীন মাসউদ। তিনি গত ঈদুল ফিতরে নামাজ পড়াতে কিশোরগঞ্জে গেলেও জঙ্গি হামলার পর মাঠে না গিয়ে ঢাকায় ফিরে যান।

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. আজিমুদ্দিন বিশ্বাস শোলাকিয়া ঈদ জামাত কমিটির সভাপতি। তিনি বলেন, ঈদের দিন শোলাকিয়া মাঠ ও এর আশপাশে তিন প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। এপিবিএন, র‍্যাব-পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্যও দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়া সাদাপোশাকে মোতায়েন থাকবে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য। বসানো হচ্ছে সিসি ক্যামেরা। গত ঈদুল ফিতরের দিন আজিম উদ্দিন হাইস্কুল ঘেঁষে ঈদগামুখী যে রাস্তায় জঙ্গি হামলা চালানো হয়, সেই রাস্তাটি এবার বন্ধ করে দেওয়া হবে।

এ ছাড়া এবার ঈদের অন্তত ১৫ দিন আগে থেকে ঈদগার আশপাশের এলাকার কোনো বাসায় নতুন ভাড়াটে বা বহিরাগত কোনো অতিথি না রাখার জন্যও প্রশাসনের পক্ষ থেকে এলাকাবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

আজ রোববার দুপুরে শোলাকিয়া মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, পুলিশ বাহিনীর লোকজন এরই মধ্যে মাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। তবে ঈদুল ফিতরে জঙ্গি হামলার কথা এখনো ভুলতে পারছেন না এলাকাবাসী। অনেকের মধ্যে একধরনের চাপা আতঙ্ক বিরাজ করছে।

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন খান বলেন, এরই মধ্যে মাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে পুলিশ। ঈদের দিন মাঠের তিন দিকের সব প্রবেশপথ বন্ধ করে দেওয়া হবে। আর্চওয়ের ভেতর দিয়ে সামনের দুটি গেটে মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে দেহ তল্লাশি করে মুসল্লিদের মাঠে ঢুকতে দেওয়া হবে। থাকবে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা।

গত ৭ জুলাই ঈদুল ফিতরের দিন সকালে শোলাকিয়া ঈদগাহের অদূরে আজিম উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের পাশে তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের ওপর হামলা চালায় জঙ্গিরা। এ সময় জঙ্গিরা বিস্ফোরক নিক্ষেপ করে আতঙ্ক তৈরি করে ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জহিরুল ইসলাম ও আনসারুল হক নামের দুই পুলিশ কনস্টেবলকে হত্যা করে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে জঙ্গিদের গোলাগুলির সময় নিজ ঘরের ভেতরে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন গৃহবধূ ঝর্ণা রানী ভৌমিক। একই সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হয় আবির রহমান নামের এক জঙ্গি। এ ঘটনায় সংঘর্ষের সময় শোলাকিয়া এলাকা থেকে আটক জঙ্গি শফিউল ইসলামসহ অজ্ঞাত আরেক যুবক ৪ আগস্ট নান্দাইলে র‍্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন।

ঢাকা জার্নাল, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৬।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.