পাকিস্তানকে সতর্ক বার্তা বাংলাদেশের

সেপ্টেম্বর ৪, ২০১৬

High_comisson Pakistanঢাকা জার্নাল : মানবতাবিরোধী অপরাধে মীর কাসেম আলীর ফাঁসির রায় কার্যকরের পর পাকিস্তানের দেওয়া প্রতিক্রিয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দেশটিকে সতর্ক করেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

একই সঙ্গে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মতামত না দেওয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে ।

রোববার (০৪ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কামরুল হাসান এই তথ্য জানিয়েছেন।

মানবতাবিরোধী অপরাধে মীর কাসেম আলীর ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ার পর পাকিস্তানের দেওয়া প্রতিক্রিয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার সামিনা মেহতাবকে তলব করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষে অতিরিক্ত সচিব কামরুল হাসান তার দপ্তরে তাকে তলব করেন।

এর প্রেক্ষিতে বিকেল পৌনে তিনটার দিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসেন মেহতাব। এ সময় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এই বিচার নিয়ে পাকিস্তানের কোনো মতামত দেওয়ার সুযোগ নেই।

পরে এ বিষয়ে কামরুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড নিয়ে পাকিস্তান যে মতামত দিয়েছে, সেটি আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল। এ বিচার স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় হয়েছে। তার আপিল করার সুযোগ ছিল। আপিলের সুযোগ তিনি নিয়েছেন। সর্বোচ্চ আদালত মনে করেছেন, তিনি ১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী যে অপরাধ করেছেন, এটাই তার উপযুক্ত শাস্তি। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কাজেই এ নিয়ে পাকিস্তানের মতামত দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’

প্রসঙ্গত, গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ১০টায় গাজীপুরে কাসিমপুর কারাগারে মীর কাসেমের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। এরপরই বিবৃতি দিয়ে প্রতিক্রিয়া জানায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পাকিস্তানের বিবৃতির পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকায় দেশটির ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার সামিনা মেহতাবকে তলব করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ১৯৭১-এর ডিসেম্বরের আগে সংঘটিত ‘কথিত’ অপরাধের অভিযোগে ‘ত্রুটিপূর্ণ বিচার’ প্রক্রিয়ায় মীর কাসেমের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করায় পাকিস্তান গভীরভাবে মর্মাহত। বিবৃতিতে মীর কাসেমের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনাও জানানো হয়।

মানবতাবিরোধী অপরাধে মীর কাসেমসহ এ পর্যন্ত ছয়জনের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। প্রত্যেক অপরাধীর ফাঁসি কার্যকরের পর পাকিস্তানের কাছ থেকে অযাচিত বিরূপ প্রতিক্রিয়া এসেছে। এ নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের তিক্ততা বাড়ছে। দুই দেশের কূটনীতিকদের পাল্টাপাল্টি তলব ও প্রত্যাহারের ঘটনাও ঘটেছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে করে, মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর যে প্রতিক্রিয়া জানায় পাকিস্তান তা বাংলাদেশের জন্য অনভিপ্রেত।

এর আগেও বিভিন্ন সময়ে যুদ্ধাপরাধীদের মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকরের পর নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দেশটি। তবে গত কয়েকবার অন্য দুয়েকটি দেশ প্রতিক্রিয়া জানালেও এবার পাকিস্তান ছাড়া অন্য কোনো দেশের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি বলে মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে।

ঢাকা জার্নাল, সেপ্টেম্বর ০৪, ২০১৬।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.