রিজার্ভ চুরি : ফিলিপাইনে ব্যাংক কর্মকর্তা দেগুইতো গ্রেপ্তার

আগস্ট ১৭, ২০১৬

Riserveঢাকা জার্নাল: বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির পর তা পাচারের সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে ফিলিপাইনের রিজাল কমার্সিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) কর্মকর্তা মায়া সান্তোস দেগুইতোকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ।

ফিলিপাইনের ফিলস্টার অনলাইন সংবাদমাধ্যমের এক খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

দেগুইতো আরসিবিসির মাকাতি শহরের জুপিটার স্ট্রিট শাখার ব্যবস্থাপক ছিলেন। ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলার একটি সুপারমার্কেট থেকে বুধবার তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

সংবাদমাধ্যম ফিলিপাইন্স সিএনএন জানিয়েছে, বুধবার বিকেলে দেগুইতোকে গ্রেপ্তার করে মাকাতি সেন্ট্রাল পুুলিশ স্টেশনে নেওয়া হয়। পাসাই রিজিওনাল ট্রায়াল কোর্ট ব্রাঞ্চ ৪৬-এর জারিকৃত পরোয়ানা বলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তবে কার হলফনামার ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে, তা জানেন না বলে দাবি করেছেন দেগুইতো। তা ছাড়া তিনি গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কোনো কপি পাননি বলেও দাবি করেছেন।

এর আগে মাকাতি শহরের জুপিটার স্ট্রিট শাখা থেকে দেগুইতো ও একই শাখার সহকারী ব্যবস্থাপক আঞ্জেলো টোরেসকে বরখাস্ত করে আরসিবিসি কর্তৃপক্ষ। মার্চ মাসে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। এ ছাড়া ওই শাখার আরেক কর্মকর্তা আদ্রিয়ান ইউজুইকোর বিরুদ্ধে তদন্ত করে পুলিশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি করে তা ফিলিপাইনে নিয়ে যায় আন্তর্জাতিক হ্যাকার চক্র। ভুয়া নথিপথ তৈরি করে এ অর্থ পাচারে সাহায্য করায় দেগুইতোর বিরুদ্ধে আরসিবিসির প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট লরেঞ্জ তান মামলা করেন। এ মামলায় বুধবার তাকে গ্রেপ্তার করা হলো।

ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে ভুয়া নির্দেশনা পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপাইনের রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকে সরিয়ে নেওয়া হয়। রিজল ব্যাংকের চারটি হিসাব থেকে এই অর্থ জুয়ার আসরে হাতবদল হয়ে ফিলিপাইনের অর্থ ব্যবস্থার সঙ্গে মিশে যায় বলে দাবি করে দেশটির গণমাধ্যম।

ফিলিপাইনের অর্থ স্থানান্তরের খবর জানাজানির পর দেশটির সিনেটে শুনানি হয়। শুনানিতে অংশ নিয়ে কিম ওয়াং দাবি করেন, চীনের বেইজিংয়ের শুহুয়া গাও এবং ম্যাকাওয়ের ডিং জিজে নামে দুই জাঙ্কেট এজেন্ট (ক্যাসিনোর মক্কেল) বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি হওয়া অর্থ ফিলিপাইনে নিয়ে আসেন।

চুরি হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে জোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ পাচারকারীদের কাছ থেকে কয়েক ধাপে মোট অঙ্কের অর্থ ফেরত পেলেও নানা জটিলতায় বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত কোনো অর্থ বুঝে পায়নি। বাংলাদেশ সরকার বারবার জানিয়েছে, অর্থ ফেরাতে সব ধরনের চেষ্টা করে যাওয়া হচ্ছে।

ঢাকা জার্নাল, আগস্ট ১৭, ২০১৬।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.