জঙ্গি বিদায় করতে ইতিহাস চর্চার আহ্বান তথ্যমন্ত্রীর

আগস্ট ১৪, ২০১৬

inuঢাকা জার্নাল : বাংলাদেশে আর যাতে রাজাকার সমর্থিত জঙ্গিবাদী সরকার না হয় তার জন্যই শোকের মাস আগস্টে দেশবাসীকে ইতিহাস চর্চার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।

রোববার (১৪ আগস্ট) সচিবালয়ে ক্লিনিক ভবনে শোকাবহ আগস্ট উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর জীবনভিত্তিক আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডকে জঘন্য ও নির্মম ঘটনা উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সেই দিন বঙ্গবন্ধুসহ নারী-শিশু ‍ও নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা হয়। যারা হত্যা করেছিল তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধুকে ক্ষমতাচ্যুত করে এবং জাতির আত্মাকে হত্যা করার চক্রান্ত করে।

‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছিল না, এটা কেবলমাত্র এক ব্যক্তির বদলে আরেক ব্যক্তির ক্ষমতা বদলও ছিল না, মূলত এই ঘটনাটা ছিল একাত্তরে যে পাকিস্তান আল-বদর, রাজাকার যারা পরাজতি হয়েছিল, সেই পরাজিত আস্তাকুড়ের কীট তারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্যদিয়ে প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করেছিল। যার জন্য আমরা দেখি বঙ্গবন্ধু হত্যার পরপরই বাংলাদেশের রাজনীতি সাংবিধানিক, দার্শনিক, সাংস্কৃতিক ধারা পাল্টে দেওয়ার অপচেষ্টা শুরু হয়’।

তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ঠিক পাকিস্তানিদের মত যারা বাংলাদেশের দেশজ সংস্কৃতিকে পদদলিত করে, বাংলাদেশের মূল্যবোধকে ধ্বংস করে পাকিস্তানি মনগড়া একটা ব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত করেছিল, ঠিক তেমনি পঁচাত্তরের খুনিরাও একটি মনগড়া ব্যবস্থা বাংলাদেশের ওপরে চাপানোর চক্রান্ত করে। একাত্তরের খুনিরাই পঁচাত্তরের খুনি।

“পঁচাত্তরের হত্যাকাণ্ডের পরে বাংলাদেশে এই খুনি চক্ররা জিয়া-মোস্তাকের নেতৃত্বে চারটি অভিশাপ বাংলাদেশের ওপরে চাপিয়ে দেয়। এগুলো হলো- সামরিকতন্ত্র, সাম্প্রদায়িকতা, রাজাকারতন্ত্র ও রাজনীতির বিষবৃক্ষ বিএনপি। এই চারটি অভিশাপ বাংলাদেশের ওপরে চেপে বসে। আমাদের লক্ষ্য ছিল আগে এই খুনিচক্রের কাছ থেকে ক্ষমতা উদ্ধার করা  এবং একই সঙ্গে চারটি অভিশাপ থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করা।”

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই বিরাট কঠিন কাজটি চলছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে আমরা উদ্ধার করছি চারটি অভিশাপ থেকে। বাংলাদেশে আর কোনো দিন যাতে সামরিক সরকার না হয়, কোনো দিন যাতে রাজাকার সমর্থিত জঙ্গিবাদী সরকার না হয়, তার জন্যই এই মাসে ইতিহাস চর্চা করা উচিত।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ইতিহাস চর্চা যত ভালো ভাবে করবেন, ততই জঙ্গিবাদী, সন্ত্রাসী গোষ্ঠী পাকিস্তানি এবং পঁচাত্তরের খুনিদের মনগড়া ব্যবস্থা চাপানোর বিরুদ্ধে শক্তি ও সাহস সঞ্চয় করতে পারবেন।

“আসুন বঙ্গবন্ধুর জীবনী জানার চেষ্টা করি, বাংলাদেশের ইতিহাস, সংগ্রামের ইতিহাস জানার চেষ্টা করি। তিন হাজার বছরের বাংলাদেশের বিকাশের ঘটনা, আটশ বছরের মুসলিম সমাজের ধারা ও প্রকৃতি বোঝার চেষ্টা করি, প্রাচীন হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মের ধারা বোঝার চেষ্টা করি। তাহলে দেখবেন, যে মনগড়া ব্যবস্থা জঙ্গিবাদীরা চাপাতে চায় তার সঙ্গে তিন হাজার বছরের দেশজ সংস্কৃতি ও আটশ’ বছরের মুসলিম সমাজেরও কোনো আচার অনুষ্ঠানের সম্পর্ক নেই”।

আলোকচিত্র প্রর্দশনী উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান তথ্য কর্মকর্তা একেএম শামীম চৌধুরীসহ তথ্য মন্ত্রণালয় এবং তথ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

তথ্য অধিদপ্তরের আয়োজনে প্রদর্শনীতে বঙ্গবন্ধুর বিরল ছবি ও আলোকচিত্র স্থান পেয়েছে।

ঢাকা জার্নাল, আগস্ট ১৪, ২০১৬।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.