দেশজুড়ে হরতাল-অবরোধ চলছে

এপ্রিল ৫, ২০১৩

misil-bg20130405061559ঢাকা জার্নাল: জামায়াতের মোড়কে হেফাজতে ইসলামের শনিবারের লংমার্চ ঠেকাতে এবং জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের দাবিতে ২৭ প্রগতিশীল সংগঠনের ২৪ ঘণ্টার হরতাল চলছে। হরতালের সমর্থনে ও ৬ দফা দাবিতে চলছে গণজাগরণ মঞ্চের অবরোধ কর্মসূচিও।

শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশব্যাপী ২৪ ঘণ্টার এ হরতালের ডাক দেয় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ও প্রগতিশীল পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদসহ ২৭টি সাংস্কৃতিক ও প্রগতিশীল সংগঠন।

অন্যদিকে গণজাগরণ মঞ্চের ২২ ঘণ্টার দেশব্যাপী অবরোধ চলবে শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টা থেকে শনিবার বিকেল চারটা পর্যন্ত। অবরোধ শেষে শনিবার বিকেল চারটায় গণজাগরণ চত্বরে অনুষ্ঠিত হবে মহাসমাবেশ।

বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) ক্রীড়া কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হরতাল আহ্বান করে। এ হরতালের মাধ্যমে হেফাজতে ইসলামের লংমার্চ প্রতিহতের ঘোষণা দেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ও প্রগতিশীল পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদসহ ২৭ সংগঠন।

অন্যদিকে বৃহস্পতিবার রাতে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের মিডিয়া সেলের সামনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেন মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার। ২৭ সংগঠনের হরতালেও সমর্থন জানান তিনি।

গণজাগরণ মঞ্চের পক্ষ থেকে সব পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের প্রতি অবরোধ কর্মসূচি সফল করার জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতার আহবান জানানো হয়। সব বাস মালিক-শ্রমিক,  রেলওয়ে শ্রমিক-কর্মকর্তা-কর্মচারী, লঞ্চের মালিক-শ্রমিকদের প্রতি মুক্তিযুদ্ধের গণজাগরণ মঞ্চের কর্মসূচিকে সফল করার জন্য আহ্বান জানানো হয়।

মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্রবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতিহত করার জন্যে দেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা, নারী, পেশাজীবী, সংস্কৃতি কর্মী, সামাজিক শক্তি ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক কর্মী সমন্বয়ে ‘প্রতিরোধ কমিটি’ গঠনের মাধ্যমে হরতাল সফল করার আহ্বান জানিয়েছে প্রগতিশীল সংগঠনগুলো।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জামায়াত নেতা কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়ায় এর প্রতিবাদে ও তাকেসহ সকল যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে গত ৫ ফেব্রুয়ারি শাহবাগে আন্দোলন শুরু হয়। ব্লগার ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট ফোরামের শুরু করা এ আন্দোলনে বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের জনতা যোগ দেওয়ায় তা রুপ নিয়েছে গণআন্দোলনে।

গণজাগরণ চত্বরে পরিণত হয়েছে শাহবাগ মোড়। পরে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি ও জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধসহ ৬ দফা ঘোষণা করে এসব দাবিতে টানা কর্মসূচি পালন করে আসছে গণজাগরণ মঞ্চ।

এ গণআন্দোলনের ঢেউ দেশের সীমানা ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছে প্রবাসেও। সারা দেশে এবং প্রবাসে গড়ে ওঠা গণজাগরণ মঞ্চের গণআন্দোলনে নানা শ্রেণী-পেশার লাখো মানুষ সমবেত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জনজোয়ার সৃষ্টি করেছেন।

এরই মধ্যে গণজাগরণের কিছু সংগঠক ও ব্লগারদের বিরুদ্ধে ইসলাম ও মহানবীকে (সা.) অবমাননার অভিযোগ তুলে তাদের শাস্তিসহ ১৩ দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে হেফাজতে ইসলাম। সংগঠনটি এসব দাবিতে ও গণজাগরণ ঠেকাতে শনিবার ঢাকামুখী লংমার্চ ও মতিঝিলের শাপলা চত্বরে সমাবেশের ডাক দিয়েছে।

তবে হেফাজতের নামে নেপথ্যে জামায়াতের ছত্রছায়ায় এ লংমার্চ ও আন্দোলন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকানো ও তাদের বাঁচানোর জন্য বলে অভিযোগ তুলেছেন প্রগতিশীল সংগঠন ও গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠকসহ আন্দোলনরত জনতা।

এ কারণেই গণজাগরণ চত্বরে গণআন্দোলনের দু’মাস পূর্তির দিনে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ২২ ঘণ্টার অবরোধ ও ২৪ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে গণজাগরণ মঞ্চ ও প্রগতিশীল সংগঠনগুলো।

ঢাকা জার্নাল, এপ্রিল ০৫, ২০১৩

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.