‘প্রেস’ লেখা মোটরবাইকে এসেছিলো শরিফুলের জঙ্গি স্যাঙ্গাতরা

আগস্ট ৫, ২০১৬

Jongi-sharifulঢাকা জার্নাল:  বৃহস্পতিবার (০৪ আগস্ট) রাতে র‌্যাব-১৪ বাহিনীসহ ৪টি গাড়ি যোগে শোলাকিয়া জঙ্গি হামলার আসামি শরিফুল ইসলামকে নিয়ে ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জ যাচ্ছিলো। রাত ১১টায় ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার ডাংরি বন (ময়মনসিংহ-নান্দাইল মহাসড়ক) পৌঁছামাত্র দুটি মটরসাইকেল যোগে সন্ত্রাসীরা গুলি ছুঁড়ে ও ককটেল ফাটিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। র‌্যাবের দাবি আসামি জঙ্গি শরিফুল ইসলামকে ছিনিয়ে নিতেই এ হামলা হয়।

এরপর শুরু হয় র‌্যাব ও সন্ত্রাসীদের মধ্যে গুলি বিনিময়। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে শোলাকিয়া জঙ্গি হামলার আসামি শরিফুল ইসলাম নিহত হয়। প্রাণ হারায় অজ্ঞাত আরেক জঙ্গিও। এ সময় আহত হন র‌্যাবের ৩ সদস্য।

রাত ১২টা ৪০ মিনিটে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় চলছে র‌্যাবের তল্লাশি অভিযান এবং রাস্তার দুই পাশে ২টি মটরসাইকেল পড়ে রয়েছে। টিভিএস কোম্পানীর  ১টি নীল রংয়ের মটরসাইকেলের পিছনে ইংরেজিতে লেখা রয়েছে প্রেস এবং অন্য একটি লাল রংয়ের মটরসাইকেলের পিছনে গাড়ি নং-ময়মনসিংহ হ-১২-৬৮১৭।

প্রেস লেখা মটরসাইকেলের পাশে পড়ে থাকতে দেখা যায়, ১টি পিস্তল, ১টি অবিস্ফোরিত ককটেল, ৪টি চাপাতি, ২টি ব্যাগ। রাস্তায় পড়ে রয়েছে পিস্তলের অনেকগুলো গুলি। রাস্তায় সাইড করে দাড়ানো র‌্যাবের সাদা একটি মাইক্রোবাস এবং ৩টি পিকআপ। এর মধ্যে সাদা মাইক্রোবাসটির গ্লাস ভাঙ্গা।

এই মাইক্রোবাসে বসে ছিলেন র‌্যাবের আহত সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর শফিকুল ইসলামের সাথে। তিনি বলেন, আমরা এই জায়গাটি অতিক্রম করার সময় ২টি মটরসাইকেলযোগে কয়েকজন সন্ত্রাসী আমাদের উপর হামলা চালায়। এ সময় সন্ত্রাসীরা গুলি ও ককটেল ছুঁড়তে থাকে এবং আমরাও প্রতিরোধ করার চেষ্টা করি। এ সময় দুই জঙ্গি নিহত হয় আমরা তিন জন আহত হই।

এ খবর পেয়ে ময়মনসিংহ থেকে রাত সোয়া ১টায় ঘটনাস্থলে পৌঁছান র‌্যাব-১৪ অধিনায়ক ল্যাফটেন্যান্ট কর্ণেল মো. শরিফুল ইসলাম।

তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেন, শোলাকিয়া জঙ্গি হামলার আসামি শরিফুল ইসলামকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করতে ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এ সময় জঙ্গিরা শরিফুলকে ছিনিয়ে নিতে হামলা চালায়। পুলিশ পাল্টা গুলি চালালে দুই জঙ্গিই নিহত হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হামলাকারীরা কতজন ছিল তা বলা যাচ্ছে না। তবে মটরসাইকেল ২টি ছিল ফলে ধরে নেওয়া যায় মোট চার জন ছিলো। তকে ঘটনাস্থলের কাছাকাছি কেউ রয়েছিল কি না তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
র‌্যাবের অধিনায়ক আরও জানান, ঘটনাস্থলে থেকে ৩টি পিস্তল, ১টি ককটেল, ৪টি চাপাতি, ১টি হাতুড়ি, ২টি ব্যাগ ও ২টি মটরসাইকেল পাওয়া গেছে।

রাত পৌনে ২টার দিকে নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যুৎবিহীন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের ভেতরের ২টি বেডে নিহত জঙ্গি শরিফুল ইসলাম ও অন্যটিতে নিহত অজ্ঞাত জঙ্গির মরদেহ পড়ে রয়েছে।

নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন, দুইজনকে হাসপাতালে আনার আগেই মৃত্যু হয়েছে।

কি ধরণের আঘাতের চিহ্ন পেয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তা ময়নাতদন্তের পরে জানা যাবে।

ঢাকা জার্নাল , আগস্ট ০৫, ২০১৬

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.