ছেলেমেয়েদের সাথে মন খুলে কথা বলুন

জুলাই ১৯, ২০১৬

অভিভাবকদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, “নিজের ছেলেমেয়েদের সাথে সময় কাটান। তাদের মনের কথাটা শোনার চেষ্টা করেন। তাদের সঙ্গ দেন।

“তাদের কী চাহিদা সেটা জানা, তাদেরকে আরও কাছে টেনে নেওয়া, তাদের ভালো-মন্দ, সমস্যা দেখা, উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েরা যেন বাবা-মায়ের সঙ্গে মন খুলে কথা বলতে পারে সে সুযোগটা তাদের দেওয়া।”

সন্তানেরা কীভাবে চলছে, কী করছে, কাদের সঙ্গে মিশছে- সেদিকেও ‘বিশেষভাবে দৃষ্টি’ দেওয়ার জন্য অভিভাবকদের আহ্বান জানিয়েছেন সরকারপ্রধান।

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে তার এই আহ্বান আসে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা এখন তদন্ত করছি, আসামি ধরছি, সেটা করলেই শুধু হবে না। সামাজিকভাবে একটা আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। প্রত্যেকটা মানুষের ভেতরে সচেতনতা আনতে হবে। প্রত্যেকের ভেতর জঙ্গি, সন্ত্রাসবাদবিরোধী মনোভাব সৃষ্টি করে সবাই মিলে কাজ করতে হবে।”

দেশে এখন ‘ধর্মের নামে ধর্মান্ধতা’ সৃষ্টি করা হচ্ছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, যেসব ছেলেমেয়ে বিভ্রান্তির পথে চলে যাচ্ছে তাদের ‘সঠিক পথে’ নিয়ে আসতে হবে।সম্প্রতি গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার পর হামলাকারীদের সম্পর্কে যেসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে তাতে সরকার ও অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

দেখা যাচ্ছে, হামলায় অংশ নেওয়া তরুণদের অনেকেই দেশের নামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করা উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান। তারা বেশ কয়েক মাস আগে বাড়ি পালিয়ে জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত হয়েছে।

এরকম আরও অন্তত ১৭ জনের সন্ধান কর্তৃপক্ষ পেয়েছে, যাদের সঙ্গে পরিবার বা স্বজনদের যোগাযোগ নেই বেশ কিছুদিন ধরে। তারাও জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

বিত্তশালীদের সন্তানদের ‘জঙ্গি হয়ে যাওয়ার’ কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বলেন, “মনে হচ্ছে যেন অভাব না থাকাটাই তাদের একটা মানসিক কষ্ট দাঁড়াচ্ছে।”

এ কারণে সন্তানদের সঙ্গে অভিভাবকদের সম্পর্ক আরও ‘নিবিঢ় ও দৃঢ়’ করার পাশাপাশি তাদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার আহ্বান জানান তিনি।

“শিক্ষাটা যেন যথাযথ হয়। আমাদের ধর্মের মূল বাণীটা যেন সঠিকভাবে শিখতে পারে সে ব্যবস্থাটাও নেওয়া উচিৎ। একইসঙ্গে প্রত্যেকটা ধর্মেরই… প্রত্যেকটা ধর্মেই শান্তির বাণী বলা আছে। যথাযথভাবে যেন সেই শিক্ষাটা হয় সেদিকে গুরুত্ব দেওয়া।”

ইংরেজি মাধ্যমে পড়া আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত একজন তরুণ স্বাভাবিকভাবে ‘উদার মনোভাবসম্পন্ন’ হওয়ার কথা থাকলেও কিছু তরুণ কীভাবে ‘ধর্মান্ধ’ হয়ে উঠছে সেই প্রশ্নও শেখ হাসিনা তুলে ধরেন।

“ইসলাম ধর্ম শান্তির ধর্ম। কিন্তু সেই ইসলাম ধর্মকে আজ প্রশ্নের সম্মুখীন করে দিচ্ছে। কাজেই আমরা আমাদের ধর্মকে কোন মতেই অসন্মানিত হতে দিতে পারি না। যাদের কারণে এগুলি হচ্ছে অবশ্যই আমরা তাদের ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেব, এতে কোনো সন্দেহ নেই।”

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.