নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ব্যাপারে সচেতন সরকার

জুলাই ১২, ২০১৬

nahidঢাকা জার্নাল: শিক্ষক-শিক্ষার্থীর জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত থাকা বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর নজর রাখা হয় না তা নয় দাবি করে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়টির ব্যাপারে আগে থেকে সচেতন আছি।

মঙ্গলবার (১২ জুলাই) সকালে সচিবালয়ে নিজ দফতরে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নানের সঙ্গে বৈঠকের শুরুতে এ কথা বলে শিক্ষামন্ত্রী।

সম্প্রতি জঙ্গি হামলার ঘটনায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকের সম্পৃক্ততার অভিযোগ এসেছে। এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয়টির ছাত্র-শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তাহরিরের সঙ্গে যুক্ত থাকার প্রমাণ মেলে।

এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ব্যাপারে আগে থেকে সচেতন আছি, আগে থেকে বহুবার বৈঠক করেছি। আজকের ঘটনা যখন সবাইকে নাড়া দিয়েছে তখন তো এতো বেশি নাড়া দেয়নি। বিচ্ছিন্ন হিসেবে মনে করা হয়েছে।

‘কিন্তু এটা (নর্থ সাউথ ইউনভার্সিটি) নজরে নেই বা আলাপ করিনি সেটা কিন্তু না। ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, একজন শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে, শোকজের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ইউনভার্সিটি ছেড়ে চলে গেছেন।’

ওই বিশ্ববিদ্যালয়টির ব্যাপারে নজরদারি প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, আমরা ওখানে যে নজর রাখি না তা না। নার্থ সাউথের ব্যাপারে অনেক ক্ষেত্রে কড়াকড়ি ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। অনেক দিন সেখানে ট্রাস্টি বোর্ডের কমিটিকে স্থগিত রেখেছি। সেখানকার প্রক্রিয়াটা সম্পূর্ণ না করা পর্যন্ত আমরা তাদেরকে কনভোকেশন করতে দেইনি। রাষ্ট্রপতি যাবেন সেটা অনুমতি করিনি। যার ফলে তাদের অনেক কিছু পরিবর্তন করতে হয়েছে।

‘এখন জঙ্গিবাদের বিষয়টা যেভাবে এসেছে, তখন সেভাবে আসেনি। এখন জিনিসটা সার্বিকভাবে এসেছে। আমরাও সেভাবে মনে করছি। পরিস্থিতির ভিন্নতায় ভিন্নভাবে মোকাবেলা করছি।’

কোনো শিক্ষার্থী টানা এক সেমিস্টার অনুপস্থিত থাকলে ছাত্রত্ব হারাবেন বলে গত ১০ জুলাই এক জরুরি সভায় সিদ্ধান্ত নিয়েছে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ছাত্রত্ব ধরে রাখতে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি যে বিধি-নিষেধ বেধে দিয়েছে তা পাশ কাটিয়ে চলে গেছে।

‘ছাত্রত্ব বাতিলের জন্য এটা একাডেমিক সিদ্ধান্ত হতে পারে, কিন্তু জঙ্গিপন্থা প্রতিরোধের জন্য এটা মোটেও কার্যকরী পদক্ষেপ না। এক সেমিস্টারে অনুপস্থিত থাকলে অপকর্ম করে ফিরে আসতে পারে।’

বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রতি সন্দেহ আছে বলেও জানান মন্ত্রী। মূল বিষয়কে অ্যাড্রেস করার জন্য এটা যথেষ্ট নয়।

নর্থ সাউথের এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই শিক্ষা মন্ত্রণালয় দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টানা ১০ দিনের বেশি অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের তালিকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানানোর নির্দেশ দেয়।

যারা অনেক বেশি ধনী বা আর্থিকভাবে স্বচ্ছল তাদের দিকে দৃষ্টি পড়ছে মন্তব্য করে নাহিদ বলেন, স্কলাস্টিকাও স্বীকার করেছে। এজন্য সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আরও বেশি নজরদারি করতে হবে।

নাহিদ বলেন, শিক্ষক-অভিভাবকদের বলবো, কোনো শিক্ষার্থীর মধ্যে পরিবর্তন লক্ষ্য করলে তাকে সতর্কতার সঙ্গে দেখবেন, কোনো সন্দেহজনক আচরণ করলে রিপোর্ট করবেন।

জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ কর্তা এবং প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।

ঢাকা জার্নাল, জুলাই ১২, ২০১৬।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.