পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধে শিগগিরি সিদ্ধান্ত

জুলাই ৯, ২০১৬

Jakirঢাকা জার্নাল:  জাকির নায়েকের মালিকানাধীন পিস টিভির বাংলাদেশে সম্প্রচার নিয়ে শিগগিরি সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার।

বাংলাদেশে এর সম্প্রচার চলবে কিনা দুই একদিনের মধ্যে জানা যাবে। তথ্য মন্ত্রণালয় দ্রুত এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।

এ প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তথ্যমন্ত্রীর জনসংযোগ কর্মকর্তা মীর আকরাম উদ্দিন আহমেদ জানান, ‘মন্ত্রী মহোদয় এই মুহূর্তে মিটিংয়ে আছেন। শেষ হলে হয়তো এ বিষয়ে কথা বলতে পারেন।’

এদিকে পিস টিভির ব্যাপারে শনিবার একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী  বলেন,  ‘এই টিভি সম্পর্কে কিছু অভিযোগ আমাদের গোচরীভূত হয়েছে। এগুলো খতিয়ে দেখা হবে। মন্ত্রণালয়ের অফিস খুললেই কাজ শুরু হবে। অল্প সময়ের মধ্যেই এ বিষয়ে সরকারের স্ট্যান্ড আমরা স্পষ্ট করব।’

কবে নাগাদ সিদ্ধান্ত আসবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আগামীকাল (রোববার) অফিস খুলবে। এরপর আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’

এরইমধ্যে ভারতে পিস টিভির সম্প্রচার আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে তার বক্তব্য খতিয়ে দেখছে সেদেশের সরকার। বক্তব্যে কিংবা কর্মকাণ্ডে জঙ্গি সংশ্লিষ্ঠতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে ভারত।

পিস টিভিতে প্রচারিত ইসলামী অনুষ্ঠান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের আলেম, ওলামাদের একটি বড় অংশ আপত্তি জানিয়ে আসছিল। তারা এটি বন্ধেরও দাবি জানিয়েছে। কিন্তু সরকার এতদিন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। সম্প্রতি গুলশানে জঙ্গি হামলাকারীরা জাকির নায়েকের অনুসারী ছিলেন এমন খবরের পর পরই আলোচনায় উঠে আসে জাকির নায়েক ও পিস টিভি। টনক নড়ে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের।

চ্যানেল আইয়ের ইসলামী অনুষ্ঠানের জনপ্রিয় উপস্থাপক মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকীকে হত্যার পর তার অনুসারীরা পিস টিভি বন্ধের দাবি জানায়। সে সময় তারা অভিযোগ করে- পিস টিভিতে ইসলাম নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য এবং জঙ্গিবাদে উস্কানি দেওয়া হচ্ছে। পিস টিভির নেপথ্যে জড়িতদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসার দাবিও জানিয়েছিলেন তারা।

এদিকে, বাংলাদেশে কেবল অপারেটরদের সংগঠন বাংলাদেশ কেবল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মীর হোসেন আখতার বলেন, আমরা চ্যানেলটির সম্প্রচার বন্ধ করে দিতে চাই। কিন্তু সরকারের নির্দেশনা না পাওয়ায় এ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না।

পিস টিভি জাকির নায়েক পরিচালিত মুম্বাইভিত্তিক ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনের একটি প্রতিষ্ঠান। এখানে ধর্ম নিয়ে আলোচনায় ইসলামের যে ব্যাখ্যা তিনি দেন, তা নিয়ে বিভিন্ন সময় বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে জাকির নায়েকের ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন যুক্তরাজ্য ও কানাডায় নিষিদ্ধ। এমনকি মুসলিম প্রধান মালয়েশিয়াতেও জাকির নায়েকের বক্তব্য প্রচারের অনুমতি নেই। জাকির নায়েকের কথায় প্ররোচিত হয়ে ভারতের কয়েক তরুণ আইএসে যোগ দিতে সিরিয়ায় পাড়ি জমিয়েছে বলেও খবর এসেছে।

ঢাকা জার্নাল, ০৯ জুলাই, ২০১৬।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.