রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ নেই

জুন ২৯, ২০১৬

PM-Parlamentঢাকা জার্নাল: পাবনায় নির্মাণ হতে যাওয়া রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে দুঃশ্চিন্তার কারণ নেই বলে জানিয়েছেন সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের মধ্য দিয়ে আমরা একটা নতুন যুগে পদার্পণ করছি।

বুধবার (২৯ জুন) সংসদে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন সংসদ নেতা।

প্রধানমন্ত্রীর আগে বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ বলেন, যদি বিশেষজ্ঞ না থাকে তাহলে এটা করা যাবে না। এটা চালাবে কারা? এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে রাশিয়া সহায়তা দিচ্ছে। আমরা জানি, রাশিয়ার চেরোনোবিল পারমাণবিক কেন্দ্রে দুর্ঘটনার কথা। সেখানে শ্মশান হয়ে গেছে, সেখানে মানুষ নেই। রাশিয়া হয়তো ১০ বছর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানোর সহায়তা দেবে, তারপর কী হবে? জাপানে সুনামির কারণে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে লিকেজ দেখা দিয়েছিলো। পরে তারা সেটা বন্ধ করে দিয়েছে। চিন্তা-ভাবনা করে করতে হবে।

রওশন এরশাদের কথার জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিরোধী দলীয় নেতা একটু উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে। হ্যাঁ, এটা নিয়ে উদ্বেগ থাকা অস্বাভাবিক না। তবে তাকে আমি এটুকু নিশ্চিত করতে চাই, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো এখন অনেক বেশি নিরাপদ হয়ে গেছে। এখন আর চেরনোবিল ঘটনার মতো কোনো ঘটনা ঘটার সুযোগ নেই। এখন আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা যখন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের আলোচনা শুরু করি রাশিয়ার সঙ্গে, তখন আমার প্রথম প্রশ্নই ছিল, এর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা তারা সম্পন্ন করে দেবে। সেখানে যে বর্জ্য হবে, সেটা তারা (রাশিয়া) নিয়ে যাবে। এ জন্য প্রয়োজনে আমরা পয়সা দিতেও রাজি আছি। কারণ আমরা এটা ম্যানেজমেন্ট করতে পারব না। কাজেই সেটা নিশ্চিত করা হয়েছে। এখানে দুঃশ্চিন্তার কোন কারণ নেই। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের মধ্য দিয়ে আমরা একটা নতুন যুগে পদার্পণ করতে যাচ্ছি।

রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের সমালোচকদের উদ্দেশ্য করে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। যা শহরের পাশেই রয়েছে। অক্সফোর্ড থেকে শুরু করে বিশ্বব্যাপী রয়েছে। এখানে পরিবেশের ক্ষতি হবার সম্ভাবনা মোটেই নেই। আর যেখানে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ হচ্ছে সেখান থেকে সুন্দরবনের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

দিনাজপুর বড় পুকুরিয়ায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ওখানে তো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বিদ্যুকেন্দ্র নির্মাণ হয়েছে। সেখানে পরিবেশের কী ক্ষতি হয়েছে? এটার সঙ্গে তুলনা করলেই তো বোঝা যায়। কি কারণে এগুলো নিয়ে হইচই হচ্ছে সেটা আমি জানি না।

তিনি বলেন, যদি সত্যিই প্রকৃতি বা পরিবেশ নষ্ট হতো বা সুন্দরবন নষ্ট হওয়ার এতটুকু সম্ভাবনা থাকতো তাহলে নিশ্চয়ই এটা আমরা করতাম না। কিন্তু সেটা হবে না এবং সেটার দিকে লক্ষ্য রেখেই এটা করা হচ্ছে বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ঢাকা জার্নাল, জুন ২৯, ২০১৬

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.