নির্বাচনী তথ্য পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে

জুন ৯, ২০১৬

Bookঢাকা জার্নাল: স্কুল-কলেজের পাঠ্যসূচিতে নির্বাচন বিষয়ে অধ্যায় অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইতিমধ্যে এ নিয়ে চার সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করেছে সংস্থাটি।

সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে পঠিত বিষয় হিসেবে ‘নির্বাচন সংক্রান্ত তথ্য’ অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এ জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরামর্শও করেছে নির্বাচন কমিশন।

ইসির উপ-সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা বলছেন, ১৯৯৮ সালে কোনো কোনো শ্রেণিতে নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয় পাঠসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। তবে তা ছিল সীমিত আকারে। বর্তমানে তেমন নেই বললেই চলে। এ দিকে নির্বাচন, ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত তথ্য সবারই জানা খুব জরুরি। যেজন্য এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এ দিকে নির্বাচন সংক্রান্ত তথ্য শুধু পাঠ্যসূচিতে নয়, শিক্ষকদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সেও অন্তর্ভুক্ত করার কথা রয়েছে। কেননা, নির্বাচনের সাথে শিক্ষকরাই বেশি জড়িত থাকেন। আবার ভোটার তালিকা প্রণয়ন এবং জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণে শুধুমাত্র শিক্ষকরাই জড়িত। এ জন্য প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সেও বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।

বুধবার (৮ জুন) ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খানকে আহ্বায়ক, সিনিয়র সরকারী সচিব মো. ফরহাদ হোসেনকে সদস্য সচিব করে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে ইসি।

সংস্থাটির সহকারী সচিব মো. রাজীব আহসান স্বাক্ষরিত কমিটি গঠনের এক অফিস আদেশে বলা হয়েছে-পাঠ্যপুস্তক ও শিক্ষকদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সে নির্বাচনী তথ্য অন্তর্ভুক্তকরণ সংক্রান্ত কমিটি’ নির্বাচন সংক্রান্ত জ্ঞান লাভের উদ্দেশ্যে প্রাথমিক, মাধ্যমিকও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের কারিকুলামে ও পাঠ্য পুস্তক, শিক্ষকদের বুনিয়াদি কোর্সে এবং শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটসমূহের কারিক্যুলামে বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভুক্তির সুপারিশসহ তিন ধরনের দয়িত্ব পালন করবে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে-ছাত্র-ছাত্রীদের স্তর অনুসারে নির্বাচন সংক্রান্ত তথ্য অন্তর্ভুক্তকরণ, পূর্বে এ বিষয়ে তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকলে তা হালনাগাদকরণ ও আরো উন্নতকরণ এবং ইসির অনুমোদন নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ।

কমিটি গঠনের অফিস আদেশের অনুলিপি শিক্ষা সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদফতর এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে ওই কমিটির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বাংলানিউকে বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরামর্শ করেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমরা কোন শ্রেণির পাঠ্যসূচিতে কী বিষয় কতটুকু অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে, তার একটি প্রস্তাবনা সুপারিশ আকারে কমিশনের কাছে উপস্থাপন করবো। কমিশনের তা অনুমোদন দিলেই তা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয় নির্বাচন সংক্রান্ত তথ্য পাঠসূচি ও শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কোর্সে অন্তর্ভুক্ত করবে। এতে শিক্ষার্থীরা সহজেই নির্বাচনী তথ্য জানতে পারবে। আর  শিক্ষকরাও প্রশিক্ষণের সময় সবকিছু জেনে নিয়ে ক্লাসে পড়াতে পারবেন।

সংবিধান অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনের চারটি প্রধান দায়িত্ব রয়েছে। এগুলো হলো-জাতীয় সংদসের আসনের সীমানা পুনর্নিধারণ, সংসদ নির্বাচন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ও ভোটার তালিকা প্রণয়ন। এছাড়া ঐচ্ছিক দায়িত্ব হিসেবে সংস্থাটি স্থানীয় সরকারগুলোর নির্বাচন সম্পন্ন করা ছাড়াও জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান করছে।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর নির্বাচন কমিশন ১০টি সংসদ নির্বাচন, চারটি উপজেলা নির্বাচন, নয়টি পৌরসভা নির্বাচন ও নয়টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন এবং বেশকিছু সিটি কররোপরেশ নির্বাচন সম্পন্ন করেছে।

এছাড়াও ১৯৭৭, ১৯৮৫ ও ১৯৯১ সালে গণভোট এবং ১০টি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সম্পন্ন করেছে ইসি।

ঢাকা জার্নাল, জুন ০৯, ২০১৬।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.