সাফাদি মিথ্যা বলছে, সাক্ষাৎ হয়নি: জয়

মে ২৯, ২০১৬

sajeebঢাকা জিার্নাল: মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে কোনো বৈঠক করেননি বলে জানিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। বাংলাদেশ সময় রোববার ভোরে ফেসবুকের একটি স্ট্যাটাসে তিনি একথা জানান।

গত তিন-চার বছরে তিনি ওয়াশিংটনে কোনো অনুষ্ঠান বা কারো অফিসে যাননি বলেও পোস্টটিতে দাবি করা হয়। বিএনপি এবং সাফাদির কাছে প্রশ্ন রেখে সজীব ওয়াজেদ লিখেন, “বিএনপি এমনই এক বোকার দল, এমনকি তারা যখন মিথ্যা বলে তখনো বোকামিপূর্ণ ভুল করে। আমি চাই বিএনপি এবং সাফাদি একটা প্রশ্নের জবাব দিক। ওয়াশিংটনের ঠিক কোথায় সে আমার সাক্ষাৎ পেয়েছে? কোন অনুষ্ঠানে? অন্য কার অফিসে?”

তিনি লিখেন, “প্রথম বোকামিপূর্ণ ভুল তারা করেছে কারণ, আমি গত ৩-৪ বছরে ওয়াশিংটনে কোনো অনুষ্ঠান বা কারো অফিসে যাইনি। যে মিটিংগুলো আমার হয়েছে সেগুলো সবই সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে এবং একান্ত ব্যক্তিগত। তাহলে, কোথায় তার সাথে আমার সাক্ষাত হতে পারে?”

শুক্রবার বিবিসি একটি প্রতিবেদনে জানায়,  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ও তার তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদের সঙ্গে গত বছর সাফাদির সাক্ষাৎ হয়েছিল। বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর সঙ্গে দেখা হওয়ার আগেই যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে জয়ের দফতরে দুজনের কথা হয়।

এর আগে ভারতে একটি অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর সঙ্গে সাফাদির সাক্ষাৎ নিয়ে তোলপাড় হয় দেশের রাজনীতিতে। আসলাম চৌধুরীকে আটক করে রিমান্ডে নেয়া হয়। তার বিরুদ্ধে ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে যোগসাজসের অভিযোগ আনা হয়।

পরে বিবিসির প্রতিবেদনে জয়ের সঙ্গে সাফাদির সাক্ষাতের বিষয়টি প্রকাশ হওয়ায় শনিবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আ স ম হান্নান শাহ বলেন, “জয়ের সঙ্গে সাফাদির বৈঠক প্রমাণ করছে ধর্মের কল বাতাসে নড়ে।” অন্যদিকে জয়-সাফাদি বৈঠকের বিষটি বিএনপির সাজানো নাটক বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।

এর একদিন পর সজীব ওয়াজেদ জয় তার এই স্ট্যাটাসে সাফাদির সঙ্গে বিএনপি ষড়যন্ত্র করছে উল্লেখ করে লিখেছেন, “আমার সাথে সাফাদির কোনো সময়ই সাক্ষাৎ হয়নি, এটা ওয়াশিংটনেও না বা অন্য কোনো জায়গায়ও না। সে মিথ্যা বলছে। সে যে বিএনপির জন্য মিথ্যা বলতে সম্মত হয়েছে সেটা দিয়ে এও প্রমাণ হচ্ছে, সে বিএনপির সাথে ষড়যন্ত্রে জড়িত। নাহলে আর কী কারণে সে বিএনপির হয়ে মিথ্যা বলবে?”

তিনি লিখেন, “এটাও খুবই লজ্জাজনক যে বিবিসি বাংলা আসলেই সেই ভুয়া ইন্টারভিউটি ঘটনার সত্যতা যাচাই ছাড়াই প্রচার করেছে। এ ঘটনা সংবাদের উৎস হিসেবে তাদের বিশ্বাসযোগ্যতাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।”

বিবিসির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে সরকার উৎখাত ষড়যন্ত্রের অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা সাফাদি দাবি করেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র ও তার তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে গত বছর তার সাক্ষাৎ হয়েছিল।

তবে তার এই দাবির ব্যাপারে জয়ের বক্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে নেয়া সম্ভব হয়নি বলেও জানায় বিবিসি।

এই বৈঠকের পটভূমি ব্যাখ্যা করে মেন্দি এন. সাফাদি জানান, চার-পাঁচ মাস আগে তিনি যখন শেষবার ওয়াশিংটন ডিসিতে যান, সে সময় একজন আমেরিকান বন্ধু দু`জনের মধ্যে এই বৈঠকটির আয়োজন করেন।

ওই বন্ধু তাকে জানান, যার সঙ্গে দেখা হবে তিনি বাংলাদেশের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। এরপর তিনি ওয়াশিংটন ডিসিতে সজীব ওয়াজেদের অফিসে যান।

সাক্ষাতের শুরুতে জয় তাকে বলেন যে তিনি বাংলাদেশে একজন উচ্চপদস্থ ব্যক্তি।
কিন্তু সজীব ওয়াজেদ যে প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সাফাদি তখনো তা জানতেন না বলে উল্লেখ করেন।
সাফাদি জানান, বৈঠকে সজীব ওয়াজেদই মূলত কথা বলেন। তিনি শুধু শোনেন।
এসময় জয়  তার কাছে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেন যে বাংলাদেশের সরকার কত ভালো কাজ করছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের সঙ্গে বর্তমান সরকারের সম্পর্কে কত ভালো।
সাফাদি দাবি করেন যে সারা বিশ্বে তার ব্যক্তিগত যোগাযোগের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে জয় সরকারের পক্ষে সমর্থন বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেন।
তখন তিনি বলেন, জয়ের বক্তব্যের সঙ্গে তিনি একমত হতে পারছেন না।
তিনি তাকে বলেন, বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে সংখ্যালঘু বিশেষ করে হিন্দুদের হত্যার খবর দেখতে পাচ্ছেন। জয় তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে এ খবরগুলো ভুল।
সব মিলিয়ে বৈঠকটির স্থায়িত্ব ১৫ থেকে ১৬ মিনিটের বেশি ছিল না বলে সাফাদি বিবিসিকে জানান।

ঢাকা জার্নাল, মে ২৯, ২০১৬।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.