৪৯ থানায় ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার নেই

মে ২৬, ২০১৬

54ঢাকা জার্নাল : রাজধানীর ৪৯ থানায় বুধবার ৫৪ ধারায় কোনো আসামি গ্রেপ্তার করা হয়নি। মঙ্গলবার ফৌজদারি কার্যবিধির এ ধারায় কিছু সংশোধনীর নির্দেশ দেন উচ্চ আদালতের আপিল বিভাগ।

বুধবার সন্ধ্যায় মতিঝিল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ওমর ফারুক বলেন, মঙ্গলবার রাত থেকে এ পর্যন্ত এ ধারায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। নিয়মিত মামলা, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এবং এজাহারের ভিত্তিতে আসামি গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আাদালত যে নির্দেশনা দিয়েছে তার আলোকেই আসামি গ্রেপ্তার করা হবে।

আর বাড্ডা থানা পুলিশ জানান, এ দিন তারা চারজনকে আদালতে পাঠিয়েছে। তবে এর মধ্যে ৫৪ ধারার আসামি নেই বলে ডিউটি অফিসার (এসআই) রহমান জানান।

শাহবাগ থানার অফিসার ইনচার্জে ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিকির এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, এই ধারায় যে আসামি গ্রেপ্তার করতে হবে, তা নয়। কেউ যদি সন্দেহজনক কোনো ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকে, তাহলে তাকে অবশ্যই ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা হবে। সেক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশ অবশ্যই মানা হবে।

এ ছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন থানায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় থানায় সুনির্দিষ্ট মামলার আসামি, পরোয়ানার আসামি এবং এজাহারের ভিত্তিতে আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। এদের একজনও ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার আসামি নেই বলে কোর্ট গারদের ওসি মুরাদ নিশ্চিত করেন।

মঙ্গলবার পরোয়ানা ছাড়া গ্রেপ্তার (৫৪ ধারা) ও হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের ধারা (১৬৭ ধারা) সংশোধনে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। আদালত সংক্ষিপ্ত রায়ে বলেন, ‘ডিসমিস। তবে কিছু মডিফিকেশন থাকবে। কিছু গাইডলাইন দিয়ে দেব।’

এ বিষয়ে পূর্বে হাইকোর্ট বিভাগ কয়েকটি নির্দেশনা দেন। সুপ্রিম কোর্টের আদেশের পর যেগুলো বহাল রয়েছে। সেই নির্দেশনাগুলো হলো-

ক. আটকাদেশ (ডিটেনশন) দেওয়ার জন্য পুলিশ কাউকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করতে পারবে না।

খ. কাউকে গ্রেপ্তার করার সময় পুলিশ তার পরিচয়পত্র দেখাতে বাধ্য থাকবে।

গ. গ্রেপ্তারের তিন ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে কারণ জানাতে হবে।

ঘ. বাসা বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য স্থান থেকে গ্রেপ্তার ব্যক্তির নিকট আত্মীয়কে এক ঘণ্টার মধ্যে টেলিফোন বা বিশেষ বার্তাবাহকের মাধ্যমে বিষয়টি জানাতে হবে।

ঙ. গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে তার পছন্দ অনুযায়ী আইনজীবী ও আত্মীয়দের সঙ্গে পরামর্শ করতে দিতে হবে।

চ. গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হলে ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিয়ে কারাগারের ভেতরে কাচের তৈরি বিশেষ কক্ষে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। ওই কক্ষের বাইরে তার আইনজীবী ও নিকট আত্মীয় থাকতে পারবেন।

ছ. জিজ্ঞাসাবাদের আগে ও পরে ওই ব্যক্তির ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে হবে।

ট. পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ উঠলে ম্যাজিস্ট্রেট সঙ্গে সঙ্গে মেডিকেল বোর্ড গঠন করবে। বোর্ড যদি বলে ওই ব্যক্তির ওপর নির্যাতন করা হয়েছে তাহলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ম্যাজিস্ট্রেট ব্যবস্থা নেবেন এবং তাকে দণ্ডবিধির ৩৩০ ধারায় অভিযুক্ত করা হবে।

ঢাকা জার্নাল, মে ২৬, ২০১৬।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.