বিএনপির মোসাদ কানেকশন রাষ্ট্রের নিরাপত্তা হুমকি

মে ২৩, ২০১৬

Ratriঢাকা জার্নাল: ক্ষমতাসীন সরকার বা দলের বিরুদ্ধে যে কোনো চক্রান্তই ‘বাংলাদেশ’ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের শামিল। এই ষড়যন্ত্র কেবল কোন একটা বিশেষ রাজনৈতিক দল, বিশেষ কোন রাষ্ট্র বা ব্যক্তিই করছে তা নয়, স্বাধীনতা বিরোধীরাই তা করছে, ঘরে ও বাইরে। তাই ক্ষমতার লোভে বিএনপির মোসাদ কানেকশন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্য নিরাপত্তা হুমকি।

সোমবার (২৩ মে) রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সাংবাদিক ও ধর্ম বিশেষজ্ঞরা।

‘রাজনীতিতে ষড়যন্ত্র ও বাংলাদেশের নিরাপত্তা’ শীর্ষক গোলটেবিল এই বৈঠক বিকেল সাড়ে তিনটায় শুরু হয়ে চলে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত।

সাড়ে ৩ ঘণ্টাব্যাপী গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা বলেন, সাধারণ নিয়মে রাষ্ট্রের ক্ষমতা বদল হবে জনগণের ভোটের মাধ্যমে। এর বাইরে রাষ্ট্র ক্ষমতা পরিবর্তনের যেকোনো চেষ্টাই রাষ্ট্রদ্রোহিতা, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস করে রাষ্ট্র ক্ষমতার পালাবদলের চেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়েছে। এটা কেবল জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, গুপ্ত হত্যাতেই সীমাবদ্ধ নয়, সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা তৈরির মাধ্যমেও এই ষড়যন্ত্র চলছে। তাই যতদিন পর্যন্ত মৌলবাদী শক্তি পরাভূত না হবে, তাদের সম্পদ ও অর্থ বাজেয়াপ্ত না হবে ততদিন এই ষড়যন্ত্র চলবে।
বক্তারা বলেন, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় সরকার এবং সরকারি দলকেও কঠোর হতে হবে। কারণ সরকারি দলের মধ্যেও মনস্তাত্ত্বিকভাবে ডানপন্থি একটি গ্রুপ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারাও ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক বিষবাস্প ছড়ানোর মাধ্যমে সরকারকে বিব্রত করে চলেছে।  বাহাত্তর থেকে পঁচাত্তর পর্যন্ত যেভাবে ষড়যন্ত্র চলেছে, এখন সেই অবস্থা দেখা যাচ্ছে।

বিএনপি-জামায়াতের সম্পৃক্ততার উদাহরণ টেনে বক্তারা বলেন, মোসাদের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে বিএনপি ষড়যন্ত্র পাকাপোক্ত করেছে। তাই প্রকাশ্যেই তারা স্বীকার করছে ষড়যন্ত্রের কথা। এই ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিঘ্ন ঘটাতে। এই ষড়যন্ত্রে বিএনপি সক্রিয় আন্তর্জাতিক শক্তি সামর্থে্যর জন্য। কারণ যেকোনো মূল্যে বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতার পালাবদল ঘটিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায়। স্বাধীনতা বিরোধীরা, যারা জন্মের সময়ই বাংলাদেশকে চায়নি তারা এই ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ শুরুর সময় থেকেই। তারা দেশের ভেতরেও রয়েছে দেশের বাইরেও রয়েছে। তাই তাদের ষড়যন্ত্র থেকে সতর্ক থাকতে হবে পুরো জাতিকে।

সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, আমাদের এই ষড়যন্ত্র রুখতে হবে রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য। বিএনপি-জামায়াত ইহুদিদের সঙ্গে অসৎ মিত্রতা করে ষড়যন্ত্র করছে। যদি ষড়যন্ত্র-সন্ত্রাস থেকে তারা সরে না আসে তাহলে বিএনপির বৈধ দল হিসেবে থাকার সুযোগ নেই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জিনাত হুদার সঞ্চ‍ালনায় বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আলী সিকদার। গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে রিজিওনাল এন্টি টেরোরিস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট।

লেখক, সাংবাদিক, আইনজীবী, কূটনীতিক, নিরাপত্তা বিশ্লেষক, মুক্তিযুদ্ধ গবেষক, পেশাজীবী সংগঠনের নেতা এবং সশস্ত্রবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তারা এই আলোচনায় অংশ নেন।

সাড়ে ৩ ঘণ্টাব্যাপী এ গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নেন- বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সাবেক ভিসি একে আজাদ চৌধুরী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. মিজানুর রহমান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. হারুন অর রশীদ, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. এম অহিদুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, ক্রিমিনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান, সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, টেলিভিশন এন্ড ফিল্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. শফিউল আলম ভুইয়া, ঢাবির অধ্যাপক মোরশেদ রহমান এবং ড. এম মাকসুদ কামাল।

আলোচনায় আরও অংশ নেন- বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, লেখক সাংবাদিক আবেদ খান, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার তথ্য উপদেষ্টা দ্য ডেইলি অবজারভার পত্রিকার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বাসসের প্রধান সম্পাদক এবং প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা আবুল কালাম আজাদ, সাংবাদিক নেতা ও একুশে টেলিভিশনের সিইও মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, সাংবাদিক স্বদেশ রায়, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শ. ম রেজাউল করিম, অ্যাডভোকেট এম আমিন উদ্দিন, ব্যারিস্টার এম আহসান হাবিব, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক ড. এম হাসান, সাবেক মন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাফর ইমাম বীরবিক্রম, জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি আহাদ চৌধুরী, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাসগুপ্ত, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশীদ, মেজর জেনারেল (অব.) মাহামুদুর রহমান, এয়ার কমডোর ইসফাক ইলাহী (অব.), গণতান্ত্রিক আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক হাসান তারেক চৌধুরী,  বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ, কূটনীতিক ও সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ওয়ালিউর রহমান, সাবেক রাষ্ট্রদূত ও প্রধান তথ্য কমিশনার মোহম্মদ জমির, শোলাকিয়া ঈদগাহের পেশ ইমাম মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ প্রমুখ।

ঢাকা জার্নাল, মে ২৩, ২০১৬

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.