বডি ফার্মে প্রকাশ্যেই মানুষের মৃতদেহ পচানো হয়

মে ২৩, ২০১৬

bodi Firm 2ঢাকা জার্নাল: হাস-মুরগির ফার্ম বা গবাদি পশুর ডেইরি ফার্মের কথা তো সকলেরই জানা। কিন্তু ‘বডি ফার্ম’ সম্পর্কে কী জানা আছে?বডি ফার্মে প্রকাশ্যেই মানুষের মৃতদেহ পচানো হয়। অর্থাৎ দিনের পর দিন এই ফার্মে মানুষের মৃতদেহ পচনের জন্য ফেলে রাখা হয়। বিষয়টা শুনে প্রথমে হয়তো হতচকিত হতে পারেন কিংবা বর্বরতাও মনে হতে পারে।

বর্তমান বিশ্বে কেবলমাত্র যুক্তরাষ্ট্রেই এ ধরনের ফার্ম রয়েছে। আর এই বডি ফার্মে মৃতদেহ পচার জন্য ফেলে রাখার ছবি দেখে শিউরে উঠলেও, ইতিবাচক বিষয় হলো, এই ফার্ম আসলে গবেষণাগার। কোনো মানসিক বিকারগ্রস্ত কাজ নয়।

bodi Firmমানুষের মৃতদেহ এখানে রাখা হয় পরীক্ষার জন্যই। মৃত্যুর পর দেহের পচন পরীক্ষার জন্যই বিজ্ঞানীরা বডি ফার্মে প্রকাশ্যে ফেলে রাখেন মৃতদেহগুলোকে। শুধু খোলা জায়গাতেই নয়, বিভিন্ন পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে মৃতদেহগুলোকে পর্যবেক্ষণের জন্য রাখা হয়। যেমন পানিতে ডুবিয়ে বা গাড়ির মধ্যে রেখে পচনের হার পরীক্ষা করেন বিজ্ঞানীরা। বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় এই পদ্ধতিতে বলা হয়, ‘হিউম্যান ট্যাফোনমি’।

গবেষণা কাজের জন্য এখানে যারা মৃতদেহ ডোনেট করেন, তাদের লাশগুলো পচনের জন্য রাখা হয়। মৃতদেহগুলো পচনের জন্য ফেলে রেখে বিজ্ঞানীরা ফিজিক্যাল, কেমিক্যাল ও ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে পরিবর্তন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। তাপমাত্রা ও অন্যান্য পরিস্থিতিতে আলাদা কোনো প্রভাব পড়ে কি না, সেটাও দেখেন। মানবদেহের পচন অত্যন্ত জটিল এক জৈবিক প্রক্রিয়া। এবং বিভিন্ন পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে তা আলাদা হয়। সেই সূক্ষাতিসূক্ষা বিষয়গুলোই পরীক্ষা করা হয় এই গবেষণাগারে।

bodi Firm 4আর এই গবেষণা মানুষের কল্যানের জন্যই। কারণ পচন নিয়ে পর্যবেক্ষণ ফরেনসিক পরীক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষ সহায়ক। কোনো অপরাধের ঘটনায় মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করে যে সিদ্ধান্তে পৌঁছান বিশেষজ্ঞরা তা এই গবেষণার কর্মের ফলাফলের বদৌলতেই। এবং এই পর্যবেক্ষণ যত সঠিক হবে, ততই মৃতদেহের প্রকৃতি থেকে অপরাধ নিয়ে নিখুঁত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারবেন বিশেষজ্ঞরা।

bodi Firm 3এ ধরনের গবেষণা সুবিধা ১৯৮১ সালে প্রথম শুরু হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেনসিক অ্যানথ্রোপোলজিস্ট বিল বাস-এর উদ্যোগে। যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে এ ধরনের ৬টি বডি ফার্ম রয়েছে। খুব শিগগির যুক্তরাজ্যে, অস্ট্রেলিয়া এমনকি ভারতেও বডি ফার্ম চালু করা হবে বলে শোনা যাচ্ছে।

ঢাকা জার্নাল, মে ২৩, ২০১৬।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.