প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করা যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত

মে ১৮, ২০১৬

nahidঢাকা জার্নাল : প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীতকরণ যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত বলে অভিহিত করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি গৃহীত প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীতকরণের বিষয়টি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। যারা এর বিরোধিতা করছেন এবং প্রাথমিক শিক্ষায় অনেক বই বলে দাবি করছেন, তাদের ছেলে-মেয়েরা দেশে পড়াশুনা করে না।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) বুধবার ‘বাংলাদেশের শিক্ষা বাজেট : গতি প্রবণতা, বাস্তবতা ও করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘আমরা জনগণের টাকায় উচ্চশিক্ষা লাভ করি, জনগণের টাকায় মন্ত্রিত্ব করছি। সেই জনগণের টাকার মর্যাদা আমাকেই নিশ্চিত করতে হবে।’

তিনি বলেন, আজকে বিভিন্ন সেক্টরে যেসব দুর্নীতি হচ্ছে, সেটি মূলত নৈতিক অবক্ষয়ের কারণে। এক্ষেত্রে শিক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। জ্ঞানের পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষাও দিতে হবে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এম আকাশ।

প্রাথমিকে বেশি বইয়ের বোঝায় শিক্ষার্থীরা নুইয়ে পড়ে- প্রবন্ধে উল্লিখিত এমন অভিযোগের সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি সাংবাদিকদের ডেকে নিয়ে হাতে ধরে ওজন দিয়ে দেখিয়েছি ১ম ও ২য় শ্রেণীতে মাত্র তিনটি বই। এগুলোর সর্বোচ্চ ওজন এক কেজির চেয়েও কম। যারা বেশি ওজন বলছেন, তাদের ছেলে-মেয়ে যেসব স্কুলে পড়ে, সেগুলো স্কুল নয়- মূলত ব্যবসায়িক কেন্দ্র।’

মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থা আধুনিক নয়- প্রবন্ধে উল্লিখিত এমন অভিযোগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আলিয়া মাদ্রাসায় আরবির পাশাপাশি আধুনিক সব শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। একই সঙ্গে যেসব মাদ্রাসায় নিজস্ব নিয়মে পড়ানো হচ্ছে,  সেগুলোকে ধারাবাহিকভাবে আধুনিক পর্যায়ে নিয়ে আসা হবে।’

কারিগরি শিক্ষার প্রতি জোর দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের এমন শিক্ষার দরকার নেই,  যেটি ভবিষ্যতে কাজে লাগবে না। বাস্তবধর্মী আধুনিক জ্ঞানসম্পন্ন শিক্ষাব্যবস্থা চালু করতে হবে। আগামী ২০২০ সালের মধ্যে ২০ শতাংশ স্কুল কলেজ কারিগরি শিক্ষার আওতায় নিয়ে আসা হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, গতানুগতিক শিক্ষা দিয়ে সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন যুগোপযোগী আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষাব্যবস্থাকে আরো গতিশীল করে তুলতে হবে।

সেমিনারে বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (বাকবিশিস) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি অধ্যাপক ড. আ ব ম ফারুকের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিশ্ব শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মাহফুজা খানম, অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদার প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অধ্যাপক ড. মফিজুর রহমান।

ঢাকা জার্নাল, মে ১৮, ২০১৬।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.