কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সম্মেলন জেলা কাউন্সিলর খসড়া চূড়ান্ত

মে ১৩, ২০১৬

awamiঢাকা জার্নাল : ২০১১ সালের আদমশুমারি এবং বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ জনসংখ্যার হিসাব অনুযায়ী জেলা পর্যায়ে সাড়ে ছয় হাজার কাউন্সিলর নির্ধারণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আর গত ২/১ বছরে আদমশুমারি না হওয়ায় মহানগরীগুলোর কাউন্সিলরের চূড়ান্ত তালিকা হয়নি। তবে চলতি সপ্তাহের মধ্যেই  তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।

আওয়ামী লীগের ২০তম সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত দপ্তর উপ-পরিষদের বিশ্বস্ত একটি সূত্র  জানিয়েছে, এবার আওয়ামী লীগের সম্মেলনে আট হাজার থেকে সাড়ে আট হাজার কাউন্সিলর হবে।

সূত্রটি জানায়, গত ২৮ এপ্রিল রাজধানীর ধানমন্ডির একটি কমিউনিটি সেন্টারে দপ্তর উপ-পরিষদের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে উপ-পরিষদের আহ্বায়ক ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদের পরিষদের চারজন নেতাকে জাতীয় সম্মেলনের কাউন্সিলর সংখ্যা নির্ধারণের দায়িত্ব দেন। আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মান্নানকে সমন্বয়ক করে উপ-পরিষদের চার সদস্যকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়। দায়িত্বপ্রাপ্তরা গত কয়েক দিন ধরে কাউন্সিলর কতজন হবে তা নির্ধারণে কাজ করেন।

সূত্র আরও জানান, ইতোমধ্যে প্রতিটি জেলার জন্য প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কাউন্সিলর সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০১১ সালের সর্বশেষ আদমশুমারি ও বিবিএস থেকে প্রাপ্ত হালনাগাদ তথ্যের ভিত্তিতে এই সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু বিপত্তি দেখা দিয়েছে মহানগরীগুলো নিয়ে। কারণ সম্প্রতি কোনো আদমশুমারি না হওয়ায় মহানগরীগুলোতে ঠিক কতজন কাউন্সিলর হবে তা নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়। এ ব্যাপারে পরামর্শ করতে উপ-পরিষদের আহ্বায়ক এবং সদস্য সচিবের নেতৃত্বে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা দুই একদিনের মধ্যে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করবেন।

এ ছাড়া দেশের বাইরে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কমিটিগুলোর কাউন্সিলর সংখ্যা নির্ধারণের বিষয়েও সভানেত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করা হবে। গত সম্মেলনের তুলনায় কাউন্সিলর সংখ্যা এবার প্রায় দুই থেকে আড়াই হাজার বৃদ্ধি করা হবে। তাই ইতোমধ্যেই জেলা কাউন্সিলরদের খসড়ার তালিকাটি দপ্তর উপ-পরিষদের আহ্বায়ক এবং দলের দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।

আর সভানেত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে কাউন্সিলর ফি নির্ধারণ, ডেলিগেটদের নাম ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে পাঠানোর সময়সীমাসহ দলের জেলা সাধারণ সম্পাদকদের রিপোর্ট জমার তারিখ নির্ধারণ করবেন বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা।

সর্বশেষ আদমশুমারি অনুযায়ী বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫ লাখ ৮৪ হাজার। তবে আজ (১৩মে) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ওয়েবসাইটে দেখা যায় দেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৬৫ লাখ ৬০হাজার ৫০জন।

আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ৬(খ)ধারায় বলা আছে,‘প্রত্যেক মহানগর ও জেলার প্রতি ২৫ হাজার  জনসংখ্যার জন্য একজন করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর নির্বাচিত হইবেন। ভগ্নাংশের বেলায় যথাক্রমে প্রতি ১২ হাজারের অধিক জনসংখ্যার জন্য একজন কাউন্সিলর নির্বাচিত হইবেন।’

এ ছাড়াও (ঘ)(ঙ)ধারায় আরও বলা আছে,‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী সংসদের কর্মকর্তাসহ সদস্যবৃন্দ পদাধিকার বলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর হইবেন।ত্রি-বার্ষিক, বার্ষিক  কাউন্সিল বা  বিশেষ কাউন্সিল অধিবেশন আহুত হইবার পর সহযোগী সংগঠনের নির্দিষ্ট সংখ্যক প্রতিনিধি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর হিসেবে মনোনীত হইবেন।’

গত ২০ মার্চ গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে আগামী ১০ ও ১১ জুলাই সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। এরপর সম্মেলন উপলক্ষে গত ১১ এপ্রিল ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সম্মেলন প্রস্তুত কমিটিসহ ১১টি উপ-কমিটি ঘোষণা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। ২০১২ সালের ২৯ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের সর্বশেষ (১৯তম) জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সে সম্মেলনে কাউন্সিলর ছিল ৬১০০ জন।

এদিকে গত ২৮এপ্রিল দপ্তর উপ-পরিষদের সভায় সম্মেলন উপলক্ষে আগামী ৩০ মের মধ্যে জেলা নেতাদের কাউন্সিলর তালিকা পাঠানোর আহ্বান করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও দপ্তর উপ-পরিষদের আহ্বায়ক ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, ৩০ মের মধ্যে কাউন্সিলর তালিকা পাঠাতে জেলা কমিটিগুলোকে নির্দেশ দিয়ে চিঠি যাবে। আর কতজন কাউন্সিলর পাঠাবে তা আমাদের গঠনতন্ত্র দেখে নেত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করে জানিয়ে দেব।

ঢাকা জার্নাল, মে ১৩, ২০১৬

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.