ভারতে কম খরচেই মিলবে ক্যান্সার ঔষধ

এপ্রিল ২, ২০১৩

cancer-medicine-onlineঢাকা জার্নাল: সুইস ওষুধ কোম্পানি নোভারটিসের তৈরি ক্যান্সার ওষুধের পেটেন্টের দাবি খারিজ করে দিল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট৷ এই রায়ে ভারতে ক্যান্সার চিকিৎসার ক্ষেত্রে সুদূরপ্রসারি প্রভাব পড়বে৷

গরিব ও নিম্নবিত্ত রোগীরা এতে সবথেকে বেশি উপকৃত হবে৷ কারণ, এর ফলে খুব কম খরচে এই ওষুধ ভারতে তৈরি হবে৷

সুইস ওষুধ কোম্পানি নোভারটিস-এর ক্যান্সার নিরাময়ের ওষুধ গ্লিভেকের পেটেন্টের দাবি সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দেয়ায় গরিব ও নিম্নবিত্ত রোগীরা উপকৃত হবেন সবথেকে বেশি৷ ভারতীয় ওষুধ কোম্পানিগুলি এবার ক্যান্সার নিরাময় ওষুধ খুব কম দামে বাজারে ছাড়তে পারবে৷ ভারতে নোভারটিসের তৈরি ক্যান্সার ওষুধ গ্লিভেকের এক মাসের খরচ যেখানে পড়ে ১.২০ লাখ টাকা, সেখানে ভারতে তৈরি হলে তার খরচ পড়বে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা৷

ভারতীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা তাই এই রায়কে বলেছে গরিব রোগীদের জন্য যুগান্তকারী৷ পেটেন্টের দাবি খারিজ হবার ফলে ভারতীয় কোম্পানি সিপলা, রানব্যাক্সি, ন্যাটকো গ্লিভেকের ভারতীয় সংস্করণ ইমাটিনিব তৈরি ও বিপণন করতে পারবে ভারতের বাজারে৷ গ্লিভেক লিউকোমিয়া, যকৃৎ ও অন্যান্য ক্যান্সারের ক্ষেত্রে খুব কার্যকর৷

ভারতে ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে৷ ২০১০ সালের হিসেবে প্রায় ১০ লাখ মানুষের মধ্যে নতুন ক্যান্সার ধরা পড়েছে৷ এই রোগে ভারতে বছরে মারা যায় প্রায় ৬ লাখের মতো৷ তিনজনের মধ্যে দু’জনের রোগ ধরা পড়ে এমন পর্যায়ে যখন তাদের বাঁচার আশা থাকে না৷ এই প্রবণতা চলতে থাকলে ২০২০ নাগাদ বছরে মারা যাবে ২০ লাখের মতো৷

ভারতে মানুষের গড় আয়ু বাড়ছে৷ তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, তামাক সেবন, মদ্যপান এক কথায় ক্যান্সার রোগে লাইফস্টাইলের এক বড় ভূমিকা আছে৷ বিশ্বে ফুসফুসে ক্যান্সারের হার ১২ শতাংশ হলেও ভারতে তা ৬.৮ শতাংশ৷ কিন্তু ভারতে বহু মানুষের দোক্তা খাওয়ার অভ্যাস থাকায় মুখের ক্যান্সার বিশ্বের মধ্যে ভারতে সবথেকে বেশি৷ কলকাতার একদল গবেষক দেখেছেন, পূর্ব ভারতে বিশেষ করে পশ্চিমবাংলায় মহিলাদের মধ্যে জিনঘটিত কারণে স্তন ক্যান্সার বেশি৷

এই রায়ে বিদেশি ওষুধ কোম্পানিগুলি বড় রকম ধাক্কা খেল যারা ভারতে বিপণন বাড়াবার চেষ্টায় ছিল৷ এর আগে ফাইজার এবং রশের পেটেন্টের আবেদন নামঞ্জুর হয়েছিল৷

এবার ভারতের ওষুধ শিল্পে বহুজাতিক কোম্পানিগুলি বিনিয়োগ করতে চাইলে তার আগে বিদেশি বিনিয়োগ পর্ষদের অনুমোদন দরকার হবে৷ বলা বাহুল্য, বিদেশি অধিগ্রহণ ঠেকাতে এবং অত্যাবশ্যক ওষুধপত্র ন্যায্য দামে সহজলভ্য করতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়৷

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.